|
|
|
|
খারাপ পুরনো বাতি, ফের ত্রিফলা শহরে
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
আগেই ত্রিফলা বাতি বসেছে মেদিনীপুরে। তার মধ্যে কয়েকটি দীর্ঘ দিন ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। মেরামতের উদ্যোগ নেই। কোনওটি একফলা, কোনওটি দু’ফলায় পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফের নতুন করে ত্রিফলা বাতি বসানোর তোড়জোড় চলছে সদর শহরে। পুরসভা সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে ২০০টি বাতি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৮০টি বাতি বসানো হবে। ইতিমধ্যে দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। এক-একটি ত্রিফলার জন্য খরচ হবে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ, প্রথম পর্যায়ে ২০০টি ত্রিফলার জন্য খরচ হবে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “শহরের সৌন্দর্যায়নের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ। এর ফলে, শহর আরও আলোকিত হবে।”
এ দিকে, কোথায় ত্রিফলা বাতি বসবে, তা নিয়েও কংগ্রেস-তৃণমূলে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, ত্রিফলা বসাতে হবে পাথরঘাটা, নতুনবাজার, জগন্নাথ মন্দিরচক, জুগনুতলা, জজকোর্ট রোড প্রভৃতি এলাকায়। নতুনবাজার, জুগনুতলা প্রভৃতি এলাকায় কংগ্রেসের প্রভাব বেশি থাকলেও এই দাবির সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই বলেই জানিয়েছেন দলের নেতারা। কংগ্রেসের শহর সভাপতি তথা কাউন্সিলর সৌমেন খানের বক্তব্য, “শহরের একদিকে আগেই ত্রিফলা বাতি বসানো হয়েছে। তাই অন্য এলাকায় ত্রিফলা বসানোর দাবি জানিয়েছি আমরা। পুরো বিষয়টি মহকুমাশাসকের নজরে এনেছি।” |
|
ত্রিফলা নয়, বাতি কোথাও একফলা কোথাও বা দ্বিফলা। —নিজস্ব চিত্র। |
তবে, তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা সূত্রে খবর, শুরুতে ওই সব এলাকায় ত্রিফলা বাতি বসানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। পরবর্তীকালে বসানো হতে পারে। গোড়ায় ত্রিফলা বাতি বসানো হবে সার্কিট হাউস থেকে কেরানিতলা পর্যন্ত। তারপর কেরানিতলা থেকে জজকোর্ট রোড এবং এলআইসি মোড় থেকে সিপাইবাজার পর্যন্ত বাতি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পুরপ্রধান বলেন, “শুরুতে সার্কিট হাউস থেকে কেরানিতলা পর্যন্ত ত্রিফলা বাতি বসানো হবে।” তৃণমূলের এক কাউন্সিলর বলেন, “যে কেউ যে কোনও দাবি করতেই পারেন। আমাদের তো সার্বিক ভাবে সমস্ত কিছু দেখতে হবে!”
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরপরই সৌন্দর্যায়নে জোর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ জন্য কয়েকটি পরিকল্পনাও করেন তিনি। তারই অন্যতম ত্রিফলা বাতি বসানো। কলকাতার পাশাপাশি মেদিনীপুরের মতো বহু শহরে ত্রিফলা বাতি বসানো হয় সেই সময়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিফলাকে হিসাবের মধ্যে ধরলে এখন ৫ হাজার ৪৫৬টি পথবাতি রয়েছে মেদিনীপুর শহরে। এর মধ্যে ৪০ ওয়াটের ল্যাম্প ৫৯৪টি, ৬০ ওয়াটের ৪ হাজার ৪২টি, ২০০ ওয়াটের সোডিয়াম ভেপার ৭৫৯টি, হাইমাস্ট ৪টি এবং ত্রিফলা বাতি ৫৭টি।
আগের দফায় ত্রিফলাগুলি বসানো হয়েছিল রবীন্দ্রনগর, কেরানিতলা, নান্নুরচক প্রভৃতি এলাকায়। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বাতির কিছু না-কিছু মেরামতের প্রয়োজন রয়েছে। কোনও স্তম্ভের একটি বা দু’টি বাতি জ্বলে। বাকিগুলো জ্বলে না। কোনওটায় বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। কোনওটা আবার ভেঙে গিয়েছে। সেগুলি মেরামতে উদ্যোগী না হওয়ার জন্য পুর-কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন শহরবাসী। পুরসভার এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “শহর সুন্দর রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। শহর সুন্দর রাখতে হলে আমাদের সকলকেই সমান উদ্যোগী হতে হবে। বড় রাস্তার পাশে ত্রিফলা বাতি দেখতে ভাল লাগে। কেউ কেউ ইট ছুড়ে বাতি ক্ষতিগ্রস্ত করে। সব সময় তো নজর রাখা সম্ভব নয়। এমনটা হতে দেখলে স্থানীয় মানুষেরও বাধা দেওয়া উচিত।” মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণববাবুর আশ্বাস, “খারাপ হয়ে যাওয়া বাতিগুলি দ্রুত সারিয়ে ফেলা হবে।” |
|
|
|
|
|