এক দিকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অন্য দিকে মুকুল রায়। বিরোধী ও শাসক দলের দুই নেতার সভার মধ্যে ফারাক দু’ঘণ্টার। তবে দিনটা এক। রবিবার।
হুগলিতে রবিবার সিপিএম এবং তৃণমূলের এই দুই শীর্ষ নেতার সভা ঘিরে পুলিশ-প্রশাসনের কপালে ভাঁজ পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অন্যত্র থেকে বাহিনী আনাচ্ছে হুগলি পুলিশ।
বামেদের দাবি, তাঁরা সভার জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন মাস দেড়েক আগে। তাঁদের পছন্দের তালিকায় এক নম্বরে ছিল চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবন লাগোয়া মাঠ। কিন্তু সেই মাঠে সার্কাসের তাঁবু পড়ার কথা থাকায় সেটি তারা পাননি। ওই এলাকাতেই আর একটি মাঠও বামেরা পছন্দ করেছিলেন। কিন্তু ক্রিকেটের পিচ তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে পাওয়া যায়নি সে মাঠও। শেষ পর্যন্ত চুঁচুড়ার গোর্খা গ্রাউন্ডে রবিবার তাঁদের সভা করার অনুমতি দেয় প্রশাসন। সেখানেই আসার কথা সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। সভা শুরু হওয়ার কথা বেলা ১টায়
অন্য পক্ষ হুগলি জেলা যুব তৃণমূল। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই সংগঠনের তরফে দক্ষিণ চন্দননগরের সার্কাস মাঠে সভার অনুমতি চাওয়া হয়। সেই অনুমতিও মিলেছে। বামেদের সভাস্থল থেকে সে এলাকার দূরত্ব বড়জোর পাঁচ কিলোমিটার। তৃণমূল সভা করবে বেলা ৩টে থেকে।
গত কয়েক বছর ধরেই বামেরা কোথাও বড়সড় সভা করলে, শাসকদলকে ঠিক তার পরেই একই সভাস্থল বা লাগোয়া জায়গায় সভা করতে দেখেছেন রাজ্যবাসী। কিন্তু হুগলিতে একই দিনে দু’দলের সভা পড়ে যাওয়ায় পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ চিন্তিত।
তবে জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “পুলিশের কাজই নিরাপত্তার বিষয়টি নির্দিষ্ট করা। আমরা ওই দিন প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রাখছি। রাস্তায় গাড়ির স্বাভাবিক গতি বজায় রাখতে কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। রাস্তায় থাকছে বাড়তি পুলিশ।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরীর বক্তব্য, “শাসক দলের নেতা-কর্মীদের কাছে সংযম প্রত্যাশিত। আমাদের ছেলেদেরও সংযত থাকতেই বলেছি।” তাঁর সংযোজন, “ওঁরা চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় থেকে দুপুর ১২টায় জমায়েত করবেন। এরপর সেখান থেকে চন্দননগর যাবেন। আর আমাদের কর্মী-সমর্থকেরাও খাদিনা মোড় হয়েই গোর্খা গ্রাউন্ডে যাবেন। সে ক্ষেত্রে একটা সময়ে দু’পক্ষের উপস্থিতিতে যানজট ও ভিড় হতে পারে।”
এমন একটা দিনে সভা করার বাধ্যবাধকতা কোথায় বা যুব তৃণমূল কি কোনও বিশেষ দিন উদ্যাপন উপলক্ষে রবিবারের সমাবেশ করছে?
যুব তৃণমূলের হুগলি জেলার সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদব বলছেন, “তেমন কিছু নয়। কারও সঙ্গে আমাদের কোনও প্রতিযোগিতা নেই। লোকসভা ভোটের বাদ্যি বেজে গিয়েছে। তাই আমাদের সমাবেশ। আমি সব পক্ষকে সংযত থেকে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করার অনুরোধ করছি।” তবে যুব তৃণমূল অন্দরের খবর, হুগলি জেলায় সংগঠনের সভাপতির পদ পাওয়ার পরে, নিজের সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখাতে এই সমাবেশের আয়োজন করেছেন দিলীপবাবু। |