বিনোদন মেদিনীপুরে আমিরি চাল,
রেলশহরে ভিড় দেব-দর্শনে

দু’টোই বড় বাজেটের ছবি। দু’টোকে নিয়েই প্রত্যাশা গগনচুম্বী। মুক্তির প্রথম দিনে নিরাশ করল না কেউই। মেদিনীপুর শহরের একমাত্র হলে ‘ধুম থ্রি’র টিকিট রীতিমতো ‘ব্ল্যাক’ হল। রেলশহর খড়্গপুরের দু’টি হলের একটিতে ‘চাঁদের পাহাড়’ দেখতেও ভিড় হল ভালই। বহু ভাষাভাষির এই শহরে বাংলা সিনেমায় এতটা উচ্ছ্বাস সাধারণত দেখা যায় না।
মেদিনীপুর শহরে আগে তিনটি সিনেমা হল ছিল। দু’টি বন্ধ হয়েছে। একমাত্র বল্লভপুরের হরি সিনেমা চালু রয়েছে। শুক্রবার সেই হলে ‘ধুমে’র পোস্টার। টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন। ভিড় এমনই ছিল যে, দফায়-দফায় বল্লভপুর মোড়ের রাস্তা অবরুদ্ধ হয়েছে। হরি সিনেমায় সব মিলিয়ে ৭১৫টি আসন রয়েছে। প্রথম দিন সব শো’ই ছিল হাউসফুল। সন্ধ্যার শো দেখবে বলে বিকেল ৩টেয় হলে চলে এসেছিলেন দুই বন্ধুদীপাঞ্জন চৌধুরী, তন্ময় মাইতি। লাইনে দাঁড়িয়েও ছিলেন তাঁরা। কিন্তু ভিড় কাটাতে পারেননি। নতুনবাজারের বাসিন্দা দীপাঞ্জন বলছিলেন, “পিছন থেকে এমন একটা স্রোত এল, আমরা লাইন থেকে ছিটকে গেলাম। সেই যে বেরিয়ে গেলাম, আর ঢুকতে পারলাম না। আজ আর দেখা হল না। মন খারাপ।”
দুই ছবি। মেদিনীপুরে ধুম-এর ভিড় (উপরে)। খড়্গপুরে টিকিট কাউন্টারে
লাইন চাঁদের পাহাড়ের জন্য। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল ও রামপ্রসাদ সাউ।
টিকিট না-পেয়ে এমন মন খারাপ আরও অনেকের। কেউ আবার ৫০ টাকার টিকিট ঘুরপথে কেটেছেন ১০০ টাকায়। আর যাঁরা টিকিট পেয়ে সিনেমা দেখেছেনতাঁদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল বাঁধভাঙা। যেমন শরৎপল্লির কৌস্তভ রায়। কৌস্তভের কথায়, “ফাটাফাটি হয়েছে। আমির খানের অভিনয় দুর্দান্ত। সুপার-ডুপার হিট হবে সিনেমা।”
মেদিনীপুর শহরে ‘চাঁদের পাহাড়’ না আসায় আবার অনেকে ছুটেছেন খড়্গপুরে। যেমন, মেদিনীপুরের নতুনবাজারের পিন্টু দে। বিলাসপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পিন্টু বলেন, “দেব অন্য শ্রেণির দর্শককেও টানতে পারছে দেখে খুব ভাল লাগল। সিনেমাটা দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। মেদিনীপুরে এলে এতদূর আসতে হত না।”
খড়্গপুরে চাঁদের পাহাড় চলছে শীতলা টকিজে। ধুম-থ্রি চলছে বম্বে সিনেমা হলে। এ দিন দু’টি হলেই উপচে পড়ছিল ভিড়। দু’টি হলেরই এক মালিকগুজরাতি অম্বরীশ গোকুলদাস। তিনি বলেন, “মিশ্র ভাষাভাষির শহর হওয়ায় প্রথম দিনে হয়তো ধুম-থ্রি একটু বেশি দর্শক টেনেছে। তবে বাংলা সিনেমায় এত ভাল সাড়া সাধারণত পাওয়া যায় না। বম্বে সিনেমা হলেও নাইট শো-তে চাঁদের পাহাড় চালাব ঠিক করেছি। হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে, ধুম-থ্রি যদি ৩ সপ্তাহ চলে, চাঁদের পাহাড় তা হলে ৫ থেকে ৬ সপ্তাহ টানবে।
বস্তুত চাঁদের পাহাড় দেখে বাড়ি ফেরার পথে লোকজনের চওড়া হাসি, সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছিল। কৌশল্যার বধূ অর্পিতা দাসের কথায়, “গল্পটা পড়া ছিল না। শুধু টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখেই চলে এসেছিলাম। এখন মনে হচ্ছে, ভাগ্যিস এসেছিলাম। দেব-কে ভাল লাগে। এই কাহিনীতে ও আরও মানানসই।” ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র সৌমিক মণ্ডল আবার উচ্ছ্বসিত সিনেমাটোগ্রাফির কারিকুরিতে। শীতলা টকিজের ডিজিট্যাল অপারেটর অমরনাথ শাহ মেনে নেন, “চাঁদের পাহাড়ের ঝকঝকে ছবি আর গমগমে আওয়াজ মন মাতাচ্ছে সকলের।” হলে ভিড় ক্রমশ বাড়ছে দেখে খুশি ম্যানেজার রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল। তিনি বলেন, “প্রথম শো-তে বারান্দা পুরো ভরে গিয়েছিল। হাউসফুল না হলেও দ্বিতীয় শো-তে টিকিট বিক্রি বেড়েছে। চাঁদের পাহাড় বক্স অফিস কাঁপাবে।”
শীতের মরসুমে এই কাঁপুনিটাই তো চেয়েছিল দুই শহর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.