বিনোদন আমিরি চালে ধুম, বড়দিনেই দেব-দর্শন
ক দিকে বাঙালির নস্টালজিয়া। অন্য দিকে ধুঁয়াধার গতি।
এক দিকে ‘অজ পাড়াগাঁয়ের ছেলে’ শঙ্কর, অন্য দিকে মিস্টার পারফেকশনিস্ট।
এক দিকে আফ্রিকায় মৃত্যুর মুখোমুখি দেব, অন্যদিকে গতি-জাদুর ছু’মন্তরে ভিলেন আমির খান।
যুযুধান এই দুইয়ের ধাক্কায় বড়দিনের পাঁচ দিন আগেই ধুম বর্ধমানে।
একই মাল্টিপ্লেক্সের দু’টি হলে একই সঙ্গে রিলিজ করেছে চাঁদের পাহাড় আর ধুম থ্রি। ফলে শহরের প্রায় সমস্ত সিনেমাপ্রেমীর ভিড় জমেছে বর্ধমান আদালত চত্বরের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে। দু’টি হলের একটিতে আসন ১৩৮০, চলছে ধুম থ্রি। অন্যটিতে আসন ১৭৫, সেখানে চলছে চাঁদের পাহাড়। তাহলে কী জোর করেই হারিয়ে দেওয়া হচ্ছে চাঁদের পাহাড়কে? সিনেমা দেখতে আসা ভিড়ে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এমন প্রশ্ন। জবাবও মিলছে ভিড়েই। ৭৬ বছর আগে লেখা এক অভিযান কাহিনীর চিত্ররূপ দেখতে ভিড় জমিয়েছেন কমবয়েসী থেকে বৃদ্ধা সবাই।
তবে সংস্কৃতির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বুর্ধেশ্বর রায় কোনও পক্ষপাতিত্বের কথা মানতে চাননি। তাঁর কথায়, “আমরা জানি দুটি সিনেমা দেখতেই মানুষ প্রচণ্ড আগ্রহী। তাই ১৩৮০ আসনের প্রেক্ষাগৃহে ধুম থ্রি চললেও সেখানে দু’টি শো হয়। আর সংস্কৃতি মেট্রো ,যেখানে ১৭৫ আসন সেখানে শো হচ্ছে চারটি।” তা ছাড়াও শহরের আরও দু’টি হলেও সিনেমা দু’টি চলছে।
চাঁদের পাহাড়ের টিকিট কাটতে লম্বা লাইন। ধুম থ্রি দেখতে উচ্ছ্বাস কমবয়েসীদের।
কিন্তু সংস্কৃতি মেট্রো আর লোকমঞ্চের টিকিটের দামের পার্থক্য নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সাধারণ মানুষের দাবি, লোকমঞ্চে টিকিটের দাম ২০, ৪০, ৫০, মেট্রোতে ৫০, ৬০, ৮০। ফলে চাঁদের পাহাড় দেখতে গেলে বাধ্য হয়েই বেশি দামের টিকিট কাটতে হচ্ছে। বুর্ধেশ্বরবাবুর দাবি, “সংস্কৃতি মেট্রো অনেক বেশি আধুনির প্রযুক্তির প্রেক্ষাগৃহ। ফলে ওখানে সিনেমা দেখার খরচাও বেশি। তবে টিকিটের দাম বিশেষ কোনও সিনেমার জন্য বাড়ানো হয়নি।”
তবে দামের হেরফের, আসন সংখ্যার তারতম্য সব ছাপিয়ে শুক্রবার দেখা গেল, ধুম থ্রি প্রথম শো-এ কিছু আসন খালি থাকলেও পরের শোগুলোয় ‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই’। আর চাঁদের পাহাড়ের আজ কেন, আগামী কয়েকদিনের অ্যাডভান্স টিকিটও শেষ।
গলসি থেকে চাঁদের পাহাড় দেখতে আসা ব্যবসায়ী অমিয় দাস বলেন, “সিনেমায় আফ্রিকার জঙ্গল, মরুভূমি, পাহাড়ের কথা শুনে আমি মুগ্ধ। সব কাজ ফেলে ওটা দেখতে এসেছি। আর ছাত্রাবস্থায় চাঁদের পাহাড় বইটা পড়েছিলাম। দেব কতটা শঙ্করকে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছে পেরেছে, সেটা দেখাও লক্ষ্য।”
দেওয়ানদিঘির আনিসুর মোল্লা আবার আমির খানের একনিষ্ঠ ফ্যান। তিনি বলেন, “ধুম থ্রি-তে গুরুর অভিনয় দেখতেই আসা। ট্রেলার দেখে মনে হচ্ছে, গুরু ফাটিয়ে দিয়েছে।” লাক্কুডির স্কুলছাত্রী কবিতা রায় আবার ধুম, ধুম টু-র পরে আমির কী নতুন করল সেটা খুঁজতে ভিড় করেছে হলে।
গাংপুরের কলেজ পড়ুয়া কাজল ঘোষ আবার চাঁদের পাহাড় উপন্যাসের মুগ্ধতা নিয়েই সিনেমাটি দেখতে এসেছেন। তাঁর কথায়, “বিভূতিভূষনের গল্প মানেই প্রকৃতিকে দিয়ে কথা বলানো। চাঁদের পাহাড় পড়ে আমি কয়েক রাত ঘুমোতে পারিনি। আশা করি সিনেমাটাও দারুণ হবে।” বড়নীলপুরের সদাশিব দত্ত আবার আফ্রিকার টানে নয়, প্রিয় হিরো দেবকে দেখতেই এসেছেন। তিনি বলেন, “দেবকে রোম্যান্টিক হিরো হিসেবে চিনি। প্রকৃতির বুকে অভিযাত্রীর ভূমিকায় সে কতটা সফল, সেটা দেখতেই হবে। আর অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় শঙ্করকে দেব কতটা আমাদের কাছে এনে দিতে পারল, সেটাই ওর অগ্নিপরীক্ষা।”
তবে দেব-আমিরের বাইরেও ভিড়ের অন্য টানও রয়েছে। তেজগঞ্জের কলেজ পড়ুয়া প্রকাশ যেমন ভিলেন আমির নয়, পুলিশ অভিষেক বচ্চনের অভিনয়ে মুগ্ধ। তাঁর দাবি, “আগের ধুম দুটোতেও পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেছেন অভিষেক। এ বার আবার সঙ্গে রয়েছেন আমির খান। সব মিলিয়ে ওফ্!”
বড়দিনের আগে দেব-আমিরের ধুন্ধুমার শহরের মেজাজে কীভাবে ‘ধুম মচায়’ সেটাই এখন দেখার।

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.