বিনোদন আমিরি-ধুমে কেউ আপ্লুত,
কেউ মজলেন দেব-দর্শনে

ড়দিনের ঠিক আগেই বড় উৎসব।
এক দিকে ‘একেবারে অজ পাড়াগাঁয়ের ছেলে’ শঙ্কর, অন্য দিকে মিস্টার পারফেকশনিস্ট।
এক দিকে বিভূতিভূষণ, অন্য দিকে বলিউড।
এক দিকে গহন আফ্রিকায় মৃত্যুর মুখোমুখি নায়ক দেব। অন্য দিকে, গতি-জাদুর ছু’মন্তরে খলনায়ক আমির খান।
শেষ ডিসেম্বরে ‘চাঁদের পাহাড়’ আর ‘ধুম থ্রি’র এই টক্করে শেষ পর্যন্ত কে বাজিমাত করে তা সময়ই বলবে। তবে, ছবি মুক্তির প্রথম দিনে জিতলেন দর্শকেরাই। সব প্রেক্ষাগৃহেই দেখা গেল ভিড়।
হাওড়ার বাগনানের চিত্রবাণী সিনেমা হলে শুধু বাংলা ছবিই দেখানো হয়। শুক্রবার এখানে মুক্তি পেয়েছে ‘চাঁদের পাহাড়’। প্রথম দিনের প্রথম শো’র দর্শকসংখ্যা আশাপ্রদ বলে জানিয়েছেন হল-মালিক ফটিক চাউলিয়া। ওই হলে দর্শকাসন ৮৪০। প্রথম শো দেখেন প্রায় আড়াইশো দর্শক। হল-মালিক বলেন, “আসনসংখ্যার নিরিখে এ দিন দর্শকসংখ্যা কম মনে হলেও বাংলা ছবিতে প্রথম দিনের প্রথম শো’র এই পরিমাণ দর্শক অনেক দিন হয়নি। সংখ্যাটা বাড়বে বলেই মনে হয়। কেননা, দর্শক টানার যাবতীয় উপাদান আছে ছবিতে। কেউ হল ছেড়ে বেরোননি। শিক্ষিত শহুরে মানসিকতার অনেকে ছবিটি দেখেছেন।”
দর্শকের ঢল দু’টি প্রেক্ষাগৃহের বাইরে। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
বিরতিতে হল থেকে বেরিয়ে ছবি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দর্শকেরা। সকলেই জানিয়েছেন, ছবিটি অন্য রকম। অনেক দিন বাদে তাঁরা ভাল বাংলা ছবি দেখলেন। শেখ নিজামুদ্দিন নামে এক দর্শক বলেন, “আফ্রিকার দৃশ্য খুব ভাল লেগেছে। শুধু মনে হল আলোটা কম ব্যবহার হয়েছে। দেবের অভিনয় বেশ ভাল লাগল।” অন্য দিকে, উলুবেড়িয়ার নরেন্দ্র সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে ‘ধুম-থ্রি’। প্রথম শোয়ে দর্শক ছিল প্রায় আড়াইশো। কিন্তু দ্বিতীয় শোয়ে সংখ্যা বেড়ে হয় প্রায় ছ’শো। ওই হলেও আসনসংখ্যা ৮৪০। এখানেও প্রথম শো দেখে দর্শকেরা আপ্লুত। শেখ মিন্টু নামে এক যুবক বলেন, “ছবিটা এতটাই ভাল হয়েছে, আমি চাই এর পরে ধুম-ফোর হোক।” হল ম্যানেজার অজিত সিংহরায় বলেন, “ছবিটা চলবে বলেই মনে হচ্ছে। আশা করছি রবিবার হাউসফুল হবে।”
একই ছবি হুগলিতেও। শেওড়াফুলির উদয়ন সিনেমা হলে ‘চাঁদের পাহাড়’-এর প্রথম ও দ্বিতীয় দু’টি শো-ই হাউসফুল। টিকিট কালোবাজারিও হয় বলে দর্শকেরা জানিয়েছেন। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে সিনেমার বুকিং শুরু হয়। হলের কর্ণধার পার্থসারথি দাঁ বলেন, “এই সিনেমা নিয়ে দর্শকের রিপোর্ট খুবই ভাল। অনেককে বলতে শুনি, ছবিটা যেন বইয়ের পাতা থেকে উঠেছে।’’
ওই সিনেমা হল থেকে প্রথম শো দেখে যাঁরা বেরোচ্ছিলেন, তাঁদের অনেকেই নতুন প্রজন্মের। বি কম প্রথম বর্ষের ছাত্র সৌরাজ সাধুখাঁ বলেন, “আগেও দেবের সিনেমা দেখেছি। ছবিটা নিয়ে এত প্রচার দেখলাম। উৎসাহ ছিলই। তাই প্রথম শো দেখে ফেললাম। পয়সা উসুল।” হুগলি এইচআইটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী বৈদ্যবাটির ঈশিতা চক্রবর্তীর কথায়, “আমি চাঁদের পাহাড় পড়েছি। শঙ্করের সঙ্গে দেব মিলে গিয়েছে। দেবকে নতুন ভূমিকায় দেখলাম। এ ভাবে বাংলা সিনেমায় বৈচিত্র্য এলে খুবই ভাল।”
উদয়নের পাশের সিনেমা হল ‘সুষমা’য় মুক্তি পেয়েছে ‘ধুম থ্রি’। চাহিদার জেরে এখানেও টিকিটের কালোবাজারি হয় বলে দর্শকেরা জানিয়েছেন। এখানে বেশি ভিড় দেখা গিয়েছে নতুন প্রজন্মের দর্শকদেরই। দু’টি হলেই শো শেষ হওয়ার পরে ভিড় দেখে পথচলতি মানুষকে বলতে শোনা গিয়েছে, অনেক দিন বাদে এত ভিড় দেখা গেল সিনেমা হলে।
চুঁচুড়ার কৈরি হলে মুক্তি পেয়েছে ‘চাঁদের পাহাড়’। প্রথম শোতে সাড়ে সাতশো আসনের অধিকাংশই ভরে গিয়েছিল বলে দাবি করেছেন হল কর্তৃপক্ষ। শঙ্কররূপী দেবের অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শকেরা। সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক দর্শক বলেন, “সিনেমাটা যেন নতুন অভিজ্ঞতা।” হুগলির মিলন সিনেমায় মুক্তি পেয়েছে ‘ধুম থ্রি’। এখানেও প্রথম শো দর্শক টেনেছে। আরামবাগের সুধানীল হলে ‘ধুম-থ্রি’ এবং করুণা হলে মুক্তি পেয়েছে ‘চাঁদের পাহাড়’। দু’টি হলই টেনেছে নতুন প্রজন্মকে। সব মিলিয়ে দুই জেলায় দর্শকদের একাংশ মজেছেন আমিরি-চালে। বাকিরা দেব-দর্শনে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.