বিনোদন কেউ মুগ্ধ দেব-দর্শনে, কেউ আমিরি চালে
ড়দিনের ঠিক আগেই বড় ম্যাচ।
এক দিকে ‘একেবারে অজ পাড়াগাঁয়ের ছেলে’ শঙ্কর, অন্য দিকে মিস্টার পারফেকশনিস্ট।
এক দিকে বিভূতিভূষণ, অন্য দিকে বলিউড।
এক দিকে গহন আফ্রিকায় মৃত্যুর মুখোমুখি দেব, অন্যদিকে গতি-জাদুর ছু’মন্তরে ভিলেন আমির খান।
শেষ ডিসেম্বরে ‘চাঁদের পাহাড়’ আর ‘ধুম ৩’-এর এই টক্করে শেষ পর্যন্ত কে বাজিমাত করে তা সময়ই বলবে। তবে ছবি রিলিজের প্রথম দিনে জিতলেন দর্শকেরাই। কলকাতার পাশপাশি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার শহরতলিও এদিন ‘চাঁদের পাহাড়’ আর ‘ধুম থ্রি’ জ্বরে আক্রান্ত।
উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ও শহরতলিতে জয়া মাল্টিপ্লেক্সে এ দিন একই সঙ্গে শুভমুক্তি ঘটে দু’টি সিনেমার। অন্যদিকে, বারাসতের সরমায় শুধুই চাঁদের পাহাড়। ছায়াবাণীতে ধুম ৩। প্রথম দিন প্রথম শো দেখতে আসা দর্শকদের বক্তব্য, এখানকার সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ চাঁদের পাহাড় লিখেছেন। ধুম ৩-এও অভিনয় করেছেন বারাসতের মেয়ে রিমি সেন। তাই দু’টো সিনেমাই দেখতে চাই আমরা।
বনগাঁর দু’টি সিনেমা হলে শুক্রবার নির্মাল্য প্রামাণিকের তোলা ছবি।
বারাসত কলেজের ভূগোলে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী থাকেন দুর্গানগরে। বললেন, “ধুম ৩ দেখতে প্রথমে ছায়াবাণীতে গিয়েছিলাম। টিকিট না পেয়ে জয়া মাল্টিপ্লেক্সে এলাম। বাড়িতে বলেছি, কলেজে যাচ্ছি। আমির কী ভাবে জন আব্রাহম ও হৃতিক রোশনকে ছাড়িয়ে যায়, সেটাই দেখার ছিল।” জয়া মাল্টিপ্লেক্সে পুরো পরিবার নিয়ে চাঁদের পাহাড় দেখতে চলে এসেছেন গৃহবধূ শঙ্খমালা দাস। বললেন, “ছোটরা তো দেবকে এমনিতেই পছন্দ করে। তা ছাড়া এমন সুন্দর উপন্যাস, সাপ সিংহ, আরও কত কী!! অনেক দিন পরে একটা ছবি এসেছে পরিবার নিয়ে দেখার মতো।” রামনগর রোডের শ্রীমা সিনেমা হলে প্রায়ই ম্যাটিনি শো দেখেন বনগাঁর দেবগড়ের অপূর্ব রায়। তিনি। শুক্রবারও তেমনই এসেছিলেন। কিন্তু দশ মিনিটে টিকিট কেটে হলে ঢোকা আর হল না তাঁর। হলে এসেছে ধুম ৩। কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন টিকিটের। অগত্যা মোটরবাইক ছুটিয়ে বিশ্বকর্মা হলে। সেখানে চাঁদের পাহাড়। কোনও রকমে একটা টিকিট জোগাড় করে ঢুকে পড়লেন। ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছে ছবি। ‘ধুম ৩’ দেখতে না পেয়ে কি একটু মন খারাপ হল অপূর্ববাবুর? বললেন, “নিয়মিত শ্রীমা হলে ছবি দেখি আমি। সাকুল্যে ২০-৩০ জন থাকেন। চেন্নাই এক্সপ্রেসের সময়ে জনা চল্লিশেক বড় জোর। কিন্তু সিনেমা দেখতে এত ভিড় হলে? ধুম ৩ অন্য দিন দেখব। কিন্তু এত লোক সিনেমা দেখতে এসেছেন, দেখে খুব ভাল লাগছে।”
বিশ্বকর্মা হলে গিয়ে দেখা গেল, কলেজ পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা, পরিবার নিয়ে সকলে এসেছেন সিনেমা দেখতে। কলেজপড়ুয়া পূজার কথায়, “আমাদের এলাকার সাহিত্যিকের গল্প নিয়ে ছবি। দেখতে তো হবেই!’’
ভিড় উপচে পড়েছিল শ্রীমা হলেও। প্রথম ও দ্বিতীয় শো হাউসফুল। ফার্স্ট ডে, ফার্স্ট শো দেখতে না পেয়ে মন খারাপ করে ফিরে গিয়েছেন অনেকে।
বসিরহাটের ফাল্গুনি, বলাকায় ‘ধুম ৩’ এবং দেবাযানী ও বেড়াচাঁপার বাণীরূপায় এদিন ‘চাঁদের পাহাড়’ নিয়ে উৎসাহ ছিল প্রবল। চাঁদের পাহাড়ে আফ্রিকার জঙ্গল জানোয়ার নিয়ে আগ্রহে অনেকেই ছেলেমেয়েদের নিয়ে হসলে হাজির হয়েছিলেন। তুলনায় কলেজ পড়ুয়াদের আগ্রহ ছিল ‘ধুম ৩’-এর আমির খান ও ক্যাটরিনাকে নিয়ে।
নস্টালজিয়ার প্রতি বাঙালির অমোঘ আকর্ষণেই ‘চাঁদের পাহাড়’ একটা বড় সংখ্যক দর্শক টানছে বলে মনে করছেন ব্যারাকপুরের জয়ন্তী মাল্টিপ্লেক্সের মালিক সুনীল সামন্ত। তাঁর কথায়, ‘‘নস্টালজিয়া বাঙালিকে টানে। ছোটবেলায় বইতে পড়া কল্পনার চরিত্রগুলোর সঙ্গে সিনেমার দৃশ্যগুলো মেলে কি না সেটা দেখতে বহু দর্শক আসেন। আমার মাল্টিপ্লেক্সের তিনটি হলের দু’টিতে ধুম-থ্রি আর একটিতে চাঁদের পাহাড় চলছে। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে সব ভাষাভাষির লোক বাস করলেও চাঁদের পাহাড় হাউসফুল। ধুম-থ্রি’র সামান্য কিছু টিকিট থেকে গিয়েছে।’’
তবে সুনীলবাবুর সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করেন শহরতলির সবথেকে বড় সিনেমা হল সোদপুরের রথীন্দ্র’র মালিক কল্যাণ সিংহরায়। তিনি বলেন, ‘‘আমার ১৪৮২ আসনের হল ধুম-থ্রি’র জন্য টানা হাউসফুল থাকবে আগামী কয়েকদিন। প্রথম শো শুরুর আগেই রবিবার পর্যন্ত সব টিকিট শেষ।” রথীন্দ্র’র মতো এ দিন ব্যারাকপুরের অতীন্দ্র, দমদমের চেতনা, জগদ্দলের রজনী, কাঁচরাপাড়ার শ্রীলক্ষ্মী’তে শনি ও রবিবারের ধুম-থ্রি’র টিকিট মেলেনি। ব্যারাকপুরের একটি স্কুলের শিক্ষক সুনীল নন্দী তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে প্রথম শো’তে চাঁদের পাহাড় দেখেছেন। বললেন, ‘‘সৌমিক হালদারের সিনেমাটোগ্রাফি অসাধারণ। আর শঙ্করের ভূমিকায় দেব অনবদ্য। দেখার পরে মনে হচ্ছে যেন আফ্রিকার জঙ্গল, কিলিমাঞ্জারো ঘুরে এলাম।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.