এক দিকে বাঙালির নস্টালজিয়া। অন্য দিকে ধুঁয়াধার গতি। এক দিকে গ্রামের ছেলে শঙ্কর। অন্য দিকে ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’।
এক দিকে আফ্রিকায় মৃত্যুর মুখোমুখি নায়ক দেব। অন্য দিকে গতি-জাদুর ছু’মন্তরে খলনায়ক আমির।
এই দুইয়ের ধাক্কায় বড়দিনের পাঁচ দিন আগেই শহর জুড়ে লেগেছে ধুম।
কয়েক দিন ধরেই শপিং মলের কফিশপ থেকে কলেজের ক্যান্টিন, আলোচনা ঘোরাফেরা করেছে চাঁদের পাহাড় থেকে ধুম থ্রি-এর মধ্যে। শুক্রবার কাউন্টার খোলার অনেক আগেই লম্বা লাইন। বহু দিন পরে একই সঙ্গে দু’টি সিনেমাকে ঘিরে উপচে পড়া ভিড় দেখল মাল্টিপ্লেক্সগুলি। শুধু মাল্টিপ্লেক্স নয়, লাইন জমল সাবেক সিনেমা হলের সামনেও।
মেগা বাজেটের এই দুই ছবি নিয়ে সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে চর্চা চলছে দিন কয়েক আগে থেকেই। তবে প্রথম দিনেই যে এ ভাবে পরপর শো হাউসফুল হবে, হয়তো আশা করেননি মাল্টিপ্লেক্স বা সিনেমা হলের কর্মীরাও। তাঁরা জানান, বহু দিন পরে পুরো চত্বর এতটা সরগরম। চলতি শোয়ে ভিড় তো হচ্ছেই, ঢেলে চলছে আগাম বুকিংও। |
|
|
ধুম থ্রি দেখতে ভিড়। |
চাঁদের পাহাড়ের পোস্টারের সামনে খুদে। |
|
দুপুর ১টা। সিটি সেন্টারের এক পর্দার সিনেমা হল দুর্গাপুর সিনেমার কাউন্টারের সামনে কলেজ পড়ুয়াদের জমাট ভিড়। হলের সামনে চলছে ধুম থ্রি-এর বড় বড় পোস্টার। তখনও কাউন্টার খোলেনি। কিন্তু ফার্স্ট-ডে ফার্স্ট-শো দেখার রোমাঞ্চ যাতে হাতছাড়া না হয়, সে জন্য আগেভাগে হাজির সকলেই। কাউন্টার খুলতেই ধাক্কাধাক্কি। সবাই আগে টিকিট চায়। দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র পঙ্কজ সাধুর কথায়, “বন্ধুদের সঙ্গে এসেছি। সবার টিকিট চাই। যদি কোনও এক জন টিকিট না পায়, তাহলেওই পুরো প্ল্যান ভেস্তে যাবে।” শেষ পর্যন্ত সিনেমা হলের কর্মীরা বাইরে এসে পরিস্থিতি সামাল দিলেন। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তিনটি শো। এক কর্মী বলেন, “আশাতীত সাড়া মিলছে। শনি ও রবিবার হাউসফুল যাবে বলে মনে হচ্ছে।”
এক পর্দার সাবেক হলের কর্মীই যখন এতটা প্রত্যয়ী, মাল্টিপ্লেক্সগুলির পরিস্থিতি বলার অপেক্ষা রাখে না। দুর্গাপুরের তিনটি মাল্টিপ্লেক্সেই চলছে সিনেমা দু’টি। বেনাচিতির আরতি সিনেমায় চাঁদের পাহাড়ের ৩টি শো, ধুম থ্রি-এর ৭টি শো চলছে। সন্ধ্যায় আরতি সিনেমার দুর্গাপুরের ইউনিট ম্যানেজার শুভদীপ আচার্য জানান, রাতের শেষ শো (সাড়ে ৯টা) ছাড়া ধুম থ্রি-এর প্রথম ৬টি শো হাউসফুল। ওই শোয়ের কিছু টিকিট তখনও ফাঁকা। সিটি সেন্টারের বায়োস্কোপে চাঁদের পাহাড়ের ৪টি এবং ধুম থ্রি-এর ৮টি শো চলছে। বায়োস্কোপের ইউনিট ম্যানেজার শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ধুম থ্রি-এর প্রথম ৫টি শো হাউসফুল হয়েছে। চাঁদের পাহাড়ের ‘রেসপন্স’ও খুব ভাল। সাড়ে ৫টার শো ছিল প্রায় হাউসফুল। আইনক্সে শোয়ের সংখ্যায় চাঁদের পাহাড় পিছনে ফেলে দিয়েছে ধুম থ্রি-কে। সেখানে চাঁদের পাহাড়ের ৫টি এবং ধুম থ্রি-এর ৪টি শো চলছে। তবে দর্শক সংখ্যার বিচারে শুক্রবার এগিয়ে ছিল ধুম থ্রি। ডিউটি ম্যানেজার ঋতব্রত চক্রবর্তী জানান, ধুম থ্রি-এর চারটি শো-ই হাউসফুল হয়েছে। চাঁদের পাহাড়ের ভিড়ও মন্দ নয়। সব ক’টি মাল্টিপ্লেক্স কর্তৃপক্ষই জানান, জোরকদমে আগাম বুকিং চলছে। শনি ও রবিবার ভিড় আরও বাড়বে, নিশ্চিত তাঁরা।
এক দিকে মোটরবাইকে সওয়ার আমির, অভিষেক। অন্য দিকে সিংহের মুখোমুখি দেব। উৎসবের মরসুম আসার আগেই যেন উৎসবের ধুম। |