ব্যালকনির টিকিটের দাম ছিল ২০ টাকা। চাহিদা দেখে সেই টিকিটই বাড়িয়ে দেওয়া হল ৩০ টাকায়। তাতেও শুক্রবার দেব অভিনীত ‘চাঁদের পাহাড়’-এর প্রথম দিনের প্রথম শো-র ব্যালকনির ১৮৪টি আসন কানায় কানায় ভর্তি হয়ে গেল। দর্শকদের এমন সাড়া পেয়ে উচ্ছ্বসিত বিষ্ণুপুর রূপকথা সিনেমা হলের ম্যানেজার শক্তি সেন।
আমির খানের ‘ধুম ৩’ এ দিনই মুক্তি পেয়েছে। সেই ছবি নিয়েও পুরুলিয়া শহরে আমির খানের ফ্যানদের মধ্যে কম উৎসাহ ছিল না। শঙ্কর চিত্রায়নে এ দিন তিনটি শোয়েই দর্শকদের ভিড় উপচে পড়ে। সিনেমা দেখে বেরোনো দর্শকদের মুখের হাসি হল মালিক ও কর্মীদের মুখেও হাসি ফুটিয়েছে। বড়দিনে এ বার টলিউড ও বলিউডের এই জোড়া উপহারই সারা রাজ্যের সঙ্গে এই দুই জেলার মানুষকে সিনেমাহলমুখী করবে বলে প্রত্যয়ী সিনেমাশিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘চাঁদের পাহাড়’ উপন্যাসের নায়ক শঙ্কর এতদিন আম বাঙালির কল্পনায় ছিল। এ বার সেলুলয়েডের পর্দায় সেই শঙ্করের বিপদসঙ্কুল অভিযানকে দেখতে তাঁরা যে ভিড় করবেন সে প্রত্যাশা ছিলই। প্রথম দিনের দর্শকদের ভিড় দেখে বিষ্ণুপুরের রূপকথার ম্যানেজার বলেন, “দেবের ছবি থাকলে এমনিতেই ভিড় হয়ই। তার উপর এই ছবিতে আফ্রিকার জঙ্গলের জীবজন্তুদের ছবি রয়েছে। তাই বাচা থেকে বুড়ো সবাই আসছেন। আশা করছি ভাল ব্যবসা হবে।” |
|
|
পুরুলিয়া শহরে ধুম ৩ -এর টিকিট
কাটার লম্বা লাইন পড়েছে। |
চাঁদের পাহাড় দেখতে
বিষ্ণুপুরেও দর্শকদের ভিড়। |
|
ছবি দেখে খুশি বিষ্ণুপুর হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র দেবমাল্য কোনার। সে বলেছে, “উপন্যাস পড়েই হলে এসেছিলাম। হতাশ হইনি।” হল থেকে বেরিয়ে একই কথা জানিয়েছে অভিলাষ চক্রবর্তী, বিল্টু ক্ষেত্রপালরা। বাঁকুড়ার চণ্ডীদাস চিত্রগৃহেও প্রথম দিনেই ভাল সাড়া ফেলেছে ছবিটি। বাঁকুড়া শহরের কলেজ পড়ুয়া তারা মাঝি, শুভ্রা সেন বলেন, “দেব আমাদের প্রিয় নায়ক। তার উপর এই ছবিটা নিয়েও একটা অন্যরকম আকর্ষণ ছিল। তাই প্রথম দিনেই চলে এসেছি।”
ধুম সিরিজে জন আব্রাহাম, ঋত্বিকের পরে আমির খান কেমন অভিনয় করল তা নিয়েও কৌতূহল কম ছিল না। এ দিন পুরুলিয়ায় প্রথম শো দুপুর ১২টায় কয়েকটি আসন ফাঁকা থাকলেও পরের দু’টি শো একেবারে হাউসফুল। হলের ম্যানেজার শম্ভুনাথ কাঞ্জিলাল বলেন, “কয়েক সপ্তাহ ধরে হলে দর্শক ভাল আসছিল না। মনে হচ্ছে, ধুম ৩ সেই ঘাটতি মিটিয়ে দেবে।” হল মালিক রবিন দত্ত বলেন, “দর্শকরা এমন ভিড় করলে সিনেমা শিল্পের সুদিন ফিরে আসবে।”
ছবি দেখার পরে পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা রাহুল সেন ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দারুন লাগল ছবিটা।” কেউ কেউ জানালেন, তাঁরা আবার দেখবেন। হুড়ার কুসুমজোড়িয়া গ্রাম থেকে ছবিটা দেখতে এসেছিলেন বিকাশ মাহাতো। তিনি বলেন, “বিকেলের শোয়ের টিকিট না পেয়ে রাতের শোয়ের টিকিট কেটেছি। রাতটা পুরুলিয়া শহরে বন্ধুর মেসেই কাটিয়ে দেব।” এ দিন টিকিট না পেয়ে ফিরে যান নামোপাড়ার বাসিন্দা সোমনাথ সেন। বলে গেলেন, “টিকিট পেলাম না। তাই ঠিক করেছি, শনিবার সকালে এসেই টিকিট কাটব।’’ |