ভাঙন ঠেকাতে আন্দোলন করবে জলপাইগুড়ি কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের ভাঙন ঠেকাতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে উদাসীনতা এবং লাগামছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করতে চলেছে জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস। আজ, শুক্রবার জেলাশাসকের দফতরের সামনে দলের পক্ষ থেকে তিন ঘণ্টার অবস্থান আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়িতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ থেকে জেলা ভাগকোনও প্রতিশ্রুতিই সরকার পূরণ করতে পারেনি বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, টাকা ও পদের লোভ দেখিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কিনে দল ভাঙার খেলায়ও নেমেছে তৃণমূল।
প্রাক্তন জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু অভিযোগ করে বলেন, “বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দিয়ে আমাকেও কেনার চেষ্টা চলছে। টাকা-পয়সা ও পদের প্রলোভন দিয়ে কাজ না হলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। রাজ্য সরকার জলপাইগুড়িকে বঞ্চনা করে চলেছে। এর প্রতিবাদে আন্দোলন করা হবে।”
বিরোধী পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত জেলা পরিষদগুলিকে অর্থ বরাদ্দ না করে রাজ্য সরকার বঞ্চিত করছে বলে মোহনবাবুর অভিযোগ। জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদার শুক্রবারের কর্মসূচিতে থাকবেন বলে জানানো হয়েছে। তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি চন্দন ভৌমিক পাল্টা বলেন, “মোহনবাবুকে প্রলোভন দেখানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। কাউকে ভাঙিয়ে দলে আনা হয়নি। উন্নয়নের জোয়ার দেখে মানুষ আসছে। জেলায় উন্নয়নে কী কাজ চলছে সেটা মোহনবাবুরা চারপাশে ভাল করে তাকালেই টের পাবেন।”
এ দিন অবশ্য কংগ্রেসের চেয়ারম্যান মোহনবাবুর বিরুদ্ধেই সমালোচনা করলেন দলের কাউন্সিলার চিত্রা চট্টোপাধ্যায়। এ দিন ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলার অফিসে বসে তিনি বলেন, “মোহনবাবুর রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা নিয়েই বিস্মিত। আমরা জনতার ভোটে জিতেই মোহনবাবুকে চেয়ারম্যান করেছি।” প্রসঙ্গত দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বুধবার সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় কংগ্রেসের দখলে থাকা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ আন্দোলন করেন। সে প্রসঙ্গেই সৈকতবাবুর মা কংগ্রেস কাউন্সিলর চিত্রাদেবীর নাম না করে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘চোরের ঘরে কেউ মা এবং কেউ স্ত্রীকে কেন রেখেছেন?’’ সৈকতবাবুর সঙ্গেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর সন্দীপ মাহতো। তাঁর স্ত্রী রাণিদেবী বর্তমানে কংগ্রেস কাউন্সিলর। এ দিন চিত্রাদেবী বলেন, “আমি প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য। কংগ্রেসকে কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভিন্নমত থাকতেই পারে। প্রদেশ সভাপতিকে সব জানাব।”
তবে চিত্রাদেবীদের প্রতি অসম্মান করা হয়নি বলে দাবি করে মোহনবাবু পাল্টা বলেন, “জানতে চাওয়া হচ্ছে ছেলে ও স্বামী দলত্যাগের পরেও কেমন করে মা ও স্ত্রী কংগ্রেসের কাউন্সিলার আছেন। সেটাই বলেছি। অসৌজন্যতার প্রশ্ন উঠছে কেন?” |