আইনি স্বীকৃতি না দিলে ভোট বয়কট, হুমকি সমকামীদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
উত্তরের কালো গোলাপ। এই নামেই ফেসবুকে নিজেদের পরিচয় তৈরি করেছেন উত্তরবঙ্গের সমকামীরা। এ বার এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করে আন্দোলন গড়ে তুলছেন। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁরা জানালেন, লোকসভা ভোটের আগে সমকামিতা স্বীকৃতির আইন পাশ না হলে ভোট বয়কট করবেন তাঁরা।
সমকামিতাকে আইনত অপরাধ বলে সম্প্রতি রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর পরে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার সমকামী সংগঠনগুলিকে এক ছাতার তলায় আনতে তৈরি হয়েছে জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি। কমিটির সদস্য শৌভিক ঘোষাল বলেন, “রাষ্ট্রপতির কাছে এবং সব রাজনৈতিক দলগুলিকে দাবি পাঠানো হবে। লোকসভা ভোটের আগে সমকামিতার স্বীকৃতির আইন পাশ না হলে আমরা লোকসভা ভোট বয়কট করব।” ‘নর্দান ব্ল্যাক রোজ সোসাইটির’ নামে ফেসবুকে পেজ তৈরি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার যৌথ কমিটি আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা করেছে। জানিয়েছে, সমকামিতার স্বীকৃতির দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি পাঠানো-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছেও চিঠি পাঠানো হবে। অধিকারের স্বীকৃতি না মিললে লোকসভা ভোট বয়কট করার হুমকিও দিয়েছে। চলতি মাসে শেষের দিকে শিলিগুড়ির হাসমি চকে অবস্থানে বসবে জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি। সেই অবস্থানে উত্তরবঙ্গের বিশিষ্টজন এবং গণতান্ত্রিক অধিকার আন্দোলনে সামিল সমাজকর্মীদেরও যুক্ত করার চেষ্টা করছে কমিটি।
ব্ল্যাক রোজ সোসাইটির তরফে জানানো হয়েছে, উত্তরবঙ্গের ছয় জেলা মিলিয়ে অন্তত লক্ষাধিক বাসিন্দা সমকামী। অনেকেই নিজেদের যৌনতা গোপন করেন। সুপ্রিম কোর্ট সমকামিতাকে অবৈধ ঘোষণা করার পরে, এঁদের উপর আক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সোসাইটির সম্পাদক শিলাদিত্য ঘোষ বলেন, “আমাদের দেশের সংস্কৃতি, সাহিত্য বহু আগেই সমকামিতাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এত দিন পরে আদালতের নিষেধাজ্ঞার নির্দেশে দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন। মিলিত প্রতিবাদ গড়ে তুলতে যৌথ মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।”
২০০৬ সাল থেকে নর্দার্ন ব্ল্যাক রোজ সমকামী মানুষদের মধ্যে কাজ করছে। এডস-বিরোধী প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে, যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করে। তবে এঁদের একটি প্রধান কাজ, সমকামী মানুষদের উপর যে কোনও ধরনের আক্রমণ বা হয়রানি ঘটলে তাঁর পাশে দাড়ানো। বছর দেড়েক আগে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায় দুই সমকামী সঙ্গীকে বাড়িওলা ও পড়শিরা উচ্ছেদ করলে এঁরা শিলিগুড়ির অন্য একটি এলাকায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন।
কিন্তু কালো গোলাপ নাম কেন? “অন্যদের সঙ্গে থেকেও আমরা বিশিষ্ট। তা বোঝাতেই এই নাম,” বললেন ওঁরা। |