স্নাতকে কমল পাশের হার, উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষ
বি কম বাদে স্নাতক ও জেনারেল (সাধারণ)-এর প্রতিটি ক্ষেত্রেই পাশের হার কমল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বৃহস্পতিবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পার্ট ১-এর থ্রি টায়ারের ফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় সব বিভাগেই পাশের হার কম। কোনও কোনও বিভাগে তা ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে! তারই সঙ্গে আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। তা হল, সাধারণ পাঠক্রমে অর্ধেক পড়ুয়াও পাশ করতে পারেনি। ‘বিএসসি’তে মাত্র ৩৬.১৯ শতাংশ ও ‘বিএ’তে ৪১.৩৯ শতাংশ পড়ুয়া পাশ করেছেন। একমাত্র ব্যতিক্রম বি কম। তবে সেখানেও পাশের হার আটকে রয়েছে ৫৪.৬৩ শতাংশেই।
কেন এমন ফল?
এ বিষয়ে অবশ্য নানা মুনির নানা মত। কারও যুক্তি অতি সাধারণ, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এ রকম ফলই হয়। কোনও বছর ২-৪ শতাংশ কমে, আবার কোনও বছর তা বাড়ে। তাঁদের মতে, তাই এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের কোনও প্রয়োজন নেই। বলাবাহুল্য তাঁরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু কেন ফল ভাল হবে না? ফল কী ভাল করা সম্ভব নয়?
এ নিয়ে যাঁরা চিন্তাভাবনা করেন সেই সমস্ত শিক্ষকদের অবশ্য অন্য যুক্তি। তাঁদের মতে, প্রভাবশালী ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলগুলি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় কলেজ তৈরি করেছে। পরিকাঠামো ছাড়াই সেই সব কলেজগুলি গড়ে উঠেছে। সেখানে না আছে স্থায়ী শিক্ষক, না পরীক্ষাগার। তার উপর সেই সব কলেজে প্রতিযোগিতাও কম। স্থানীয় সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা সেখানে ভর্তি হন। এই সব কলেজগুলিতে পাশের হারও বেশ কম থাকে। তবে গত কয়েক বছরে স্নাতকের ফল দেখলে বোঝা যাবে মেদিনীপুর কলেজ, মহিষাদল কলেজ, ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ বা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ফল তুলনায় ভাল। বাকি কলেজগুলি পিছিয়ে যাচ্ছে।

ফলাফল দেখে উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও। উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর কথায়, “এ বার থেকে নিয়মিত কর্মশালা করা হবে। কী ভাবে কলেজগুলির পড়াশোনার মান উন্নয়ন করা যায়, পড়ুয়ারা ভাল ফল করতে পারে, সে বিষয়ে জোর দেওয়া হবে। একই সঙ্গে পরিকাঠামো উন্নয়নের দিকেও নজর দেওয়া হবে।”
তবে, এমন ফলের পিছনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে বলেও শিক্ষকদের অভিমত। তা হল, যত দিন যাচ্ছে ততই কলেজগুলিতে অধ্যক্ষ বা শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণ কমছে। পরিবর্তে একাংশের পড়ুয়াদের একরোখা মনোভাব প্রকট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতির জন্য কলেজের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেই দায়ী করছেন তাঁরা। এমনকী পড়ুরারা নিয়মিত ক্লাস না করলেও শিক্ষকেরা কিছু বলতে পারেন না। অভিযোগ, কাউকে উপযুক্ত হাজিরার কারণে আটকে দিতে গেলে নানা দিক থেকে চাপ আসতে শুরু করে। কলেজের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে রাজনীতি বা আড্ডা হয় বেশি। শিক্ষাবিদদের একাংশের আবার অভিমত, পড়ুয়ারা এখনও মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরশীল স্টাডি সেন্টার বা গৃহশিক্ষকের তথাকথিত কিছু নোটের উপরেই। যার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে পরীক্ষার ফলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল থেকে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় এ বার বিএ ও বিএসসি স্নাতকে প্রায় ৩ শতাংশ কম পড়ুয়া পাশ করেছেন। বি কম-এ তা ১০ শতাংশ কম! আবার বিএ পাশে ৭ শতাংশ ও বিএসসি পাশে ৫ শতাংশ কম পড়ুয়া পাশ করেছেন। বেড়েছে কেবল বি কম জেনারেল-এ। সেখানে ১৪ শতাংশ বেশি পড়ুয়া পাশ করেছেন।
বিজ্ঞান বিভাগে পাশের হার এত কম কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ডিন বিধান পাত্রের কথায়, “সব কলেজেই পরীক্ষাগার ও স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি ফের দেখতে হবে। এ বিষয়ে সার্বিকভাবে পর্যালোচনাও প্রয়োজন। সমস্যা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.