তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষে তপ্ত পাঁশকুড়া কলেজ
দুই তৃণমূল নেতার বিরোধ চলছে অনেক দিন। দু’পক্ষের ঝামেলায় পাঁশকুড়া শহরে মিছিল-পাল্টা মিছিল লেগেই রয়েছে। এ বার সেই বিরোধের আঁচ এসে পড়ল পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে। বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা জাইদুল খান ও আনিসুর রহমান গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায় কলেজ চত্বরে। ব্যাহত হয় কলেজের পঠন-পাঠন। স্নাতকের ফলাফল জানতে এসে মহা বিপদে পড়েন ছাত্র-ছাত্রীরা। পুলিশ এসে গণ্ডগোল মেটালেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বহিরাগতরা কলেজে ঢুকে সভা-মিছিল করে গেলেও থানায় অভিযোগ করেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
গত বার পাঁশকুড়া বনমালী কলেজের ছাত্র সংসদের নিয়ন্ত্রণ আনিসুর গোষ্ঠীর হাতে ছিল। এ বার সেই ছাত্র সংসদের নিয়ন্ত্রণ পেতে পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা জাইদুল খানের অনুগামীরা তৎপর হয়েছেন। চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কলেজের ছাত্রসংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে দুই গোষ্ঠীই চাইছে কলেজে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নিতে।
এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ কলেজ চত্বরে জাইদুল খানের অনুগামী প্রায় দেড়শো সমর্থক মিছিল করেন। মিছিলে থাকা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক দল সমর্থক ছাত্রসংসদ অফিসের সামনে গিয়ে আনিসুর রহমানের অনুগামী সমর্থকদের লাঠি হাতে তাড়া করেন বলে অভিযোগ। এরপর জাইদুল খানের অনুগামীরা কলেজের গেটের সামনে রীতিমতো মাইক বাজিয়ে সভা করেন। ভাষণ দেন জাইদুল অনুগামী পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর নবকুমার ভট্টাচার্য-সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা। সভার পর জাইদুল অনুগামীরা কলেজের বাইরে কিছুটা দূরে রান্না করে খাওয়া-দাওয়া করছিলেন। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ সেখানে আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে দলীয় সমর্থকরা এসে হামলা চালান বলে অভিযোগ। এরপরেই দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট শুরু হয়ে যায়।
জাইদুল খানের অভিযোগ, “কলেজের ভিতরে একদল বহিরাগত দাপট চালাচ্ছে। ফলে কলেজের ছাত্রসংসদে প্রকৃত ছাত্ররা স্থান পাচ্ছে না। এর প্রতিবাদ জানাতেই এ দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকরা মিছিল করেছিলেন। সেখানে আনিসুরের লোকজন হামলা চালায়।” জাইদুলের অভিযোগ অস্বীকার করে আনিসুর বলেন, “ওরাই বরং বহিরাগতদের নিয়ে ছাত্রসংসদ অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছিল। এ দিন দুপুরে নবকুমার-সহ যারা কলেজ চত্বরে মিছিল করেছে, তারাও বহিরাগত। ওরা গায়ের জোরে কলেজের ছাত্রসংসদ দখল করতে চাইছে। হামলার অভিযোগ মিথ্যা।”
এ দিকে, বহিরাগত আর একদল ছাত্রের গুন্ডামির মাঝে পড়ে ভীত-সন্ত্রস্ত সাধারণ পড়ুয়ারা। এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ গণ্ডগোলের সময়ই ভয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে যান অনেক পড়ুয়া। পরে ফের গোলমাল বাধছে দেখে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে কলেজ ফাঁকা হয়ে যায়। কয়েকজন শিক্ষক আবার গোলমালের ভয়ে দীর্ঘক্ষণ কলেজের ভিতরে বসে ছিলেন। তবে কলেজে পুলিশ পিকেট বসেছে পরে।
কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি এ দিন। বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে প্রশ্ন করা হলে তিনি হতাশ গলায় বলেন, “গেটের বাইরে মাত্র দু’জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। আচমকা দেড়শো জন ঢুকে পড়লে তাদেরই বা কী করার আছে। তবে, এ দিন মূল গণ্ডগোল হয়েছে কলেজের বাইরে। আসন্ন ছাত্র সংসদের নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.