উত্তর শহরতলির নিকাশি নালা তৈরির জন্য ১৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল রেল দফতরকে। কিন্তু তার পরে দশ মাস গড়িয়ে গেলেও শুরু হয়নি কাজ। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রেলমন্ত্রী মল্লিকার্জুন খাড়গেকে চিঠি দিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রেল কর্তাদের বক্তব্য, দরপত্র প্রক্রিয়া নিয়ে সমস্যার জেরে কাজ শুরু করা যায়নি। শীঘ্রই তা শুরু হবে।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, কামারহাটি, পানিহাটি-সহ মূলত বরাহনগর, উত্তর দমদম পুরসভা এলাকায় জল জমার সমস্যা দূর করতে আপার বাগজোলা খালের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বরাহনগর পুরসভার নোয়াপাড়া এলাকায় ৫০০ মিটার অংশে বাগজোলা খাল খুবই সঙ্কীর্ণ। সেখানে খালের জল ধারণ ক্ষমতা বেশ কম। তাই বর্ষায় বাগজোলা খালের ওই অংশে জল উপচে ভাসছে পুর এলাকা। রাজীববাবু বলেন, “ওই সব এলাকায় জল জমা সমস্যার সমাধান করতে এই নিকাশি নালা কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
সেচের মেট্রোপলিটন ড্রেনেজ ডিভিশন ২-এর নির্বাহী বাস্তুকার সোমনাথ দেব জানান, নোয়াপাড়ার কাছে আপার বাগজোলা খাল থেকে উদয়পুর খাল পর্যন্ত ২৬২ মিটার লম্বা একটি বাইপাস চ্যানেল (নালা) কাটার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে মাঝের ৬১ মিটার অংশ যাবে শিয়ালদহ-বেলঘরিয়া রেল লাইনের নীচ দিয়ে। তাই ওই অংশের কাজ রেল করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। খরচ বাবদ রেল-কর্তৃপক্ষ রাজ্যের কাছে নালার জন্য ২০.৭১ কোটি, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৪.৭৫ কোটি ও রেলের জমি বাবদ ৩.১০ কোটি অর্থাৎ মোট ২৮.৫৬ কোটি দাবি করে।
সেচ কর্তাদের অভিযোগ, রেল-কর্তৃপক্ষের দাবি মতো প্রায় দশ মাস আগে ওই কাজের মোট খরচের অর্ধেক, ১৩.৩৯ কোটি টাকা তাঁদের দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও কাজ শুরু হয়নি। এ দিকে, ২০১৪-র মার্চের মধ্যে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ওই কাজ শেষ না হলে আগামী বর্ষাতেও উত্তর শহরতলির বরাহনগর, উত্তর দমদম-সহ কামারহাটি, পানিহাটি পুরসভা এলাকায় জল জমে থাকবে। রাজীববাবুর অভিযোগ, “মার্চের মধ্যে কাজ শেষ না হলে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের টাকাও পাওয়া যাবে না। পুরো খরচ চাপবে রাজ্যের ঘাড়ে।”
কিন্তু রেলের সমস্যা কী? রেল বোর্ডের কর্তারা জানান, পুরো বিষয়টিই আটকে রয়েছে ‘কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি’ (সিআরএস)-র ছাড়পত্রের জন্য। নিকাশি নালার একটি অংশ রেল লাইনের নীচ দিয়ে যাবে, তাই কাজ শুরুর আগে সিআরএস-এর অনুমতি দরকার। ওই ছাড়পত্র পেতে কাজের নকশাও সিআরএস-এর কাছে দিতে হবে। সেই কাজ হয়নি কেন? শিয়ালদহ ডিভিশন ও রেল বোর্ডের কর্তারা জানান, কাজের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। আর কোন সংস্থা কাজ করবে তা ঠিক না হওয়ায় নকশাও মিলছে না।
তবে শিয়ালদহ ডিভিশনের এক রেলকর্তা বলেন, “প্রথমে এক বার দরপত্র চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় কিছু ভুল ছিল। তাই আবার দরপত্র ডাকা হয়েছে। দ্রুত ওই প্রক্রিয়া মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।”
|