এগারো বছরের ছেলেটাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সেই নভেম্বর মাস থেকে। প্রশাসন ঠুঁটো। সরকারের উপর আর ভরসা রাখতে না পেয়ে এ বার তালিবানের সাহায্য চাইলেন পেশোয়ারের বাসিন্দা ফরিদ খান।
তাঁর অভিযোগ, নভেম্বরের পাঁচ তারিখ তাঁর ছেলে ফুরকান ফরিদকে অপহরণ করে কিছু দুষ্কৃতী। ফরিদের কথায়, “তার পর থেকেই শুরু হয় ধৈর্য্যের পরীক্ষা। সরকারি অফিসারদের দরজায় দরজায় হত্যে দিয়ে পড়ে থেকেছি এক মাসেরও বেশি সময়। কিন্তু ঘুরে তাকাননি এক জনও।” তাই বাধ্য হয়ে তালিবানের ভরসাতেই এখন বুক বাঁধছেন তিনি।
আফগান সীমান্ত বরাবর উত্তর পশ্চিম পাকিস্তানের এই অঞ্চল বরাবরই তালিবান অধ্যুষিত। সেনাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষ বা বিস্ফোরণ প্রায় নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রের সরকারকে উৎখাত করে দেশে ইসলামি শাসন কায়েম করাই লক্ষ্য পাক তালিবানের।
এই সীমান্ত প্রদেশে জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত এতটাই, যে প্রশাসনের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া ভার।
দেশে শান্তি ফেরাতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ তাদের আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু অক্টোবরে মার্কিন ড্রোন হানায় তেহরিক-ই-তালিবান প্রধান হাকিমুল্লা মেহসুদের মৃত্যু হলে মাঝ পথেই থমকে যায় শান্তি প্রক্রিয়া।
তালিবান রক্তচক্ষুর মধ্যেই যাঁরা রাত-দিন থাকেন, জঙ্গি হামলার ভয় সত্ত্বেও তাদের উপরেই বিশ্বাস রাখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফরিদ খানের ঘটনাই তার প্রমাণ। ফরিদ যেমন জানিয়েছেন, “ওরা মানুষ হিসেবে ভাল, ভাল মুসলিমও। অন্তত বিচার চাইতে গেলে ঘুষের জন্য তো হাত পাতে না।”
ছেলে ফুরকানের আবার মৃগির ধাত। ছেলেকে হারানোর আশঙ্কা তাই প্রতি দিনই তাড়া করে ফেরে। তিন মেয়ে, স্ত্রী-সমেত ফরিদ তাই এ বার সরাসরি সাহায্য চাইছেন তালিবান জঙ্গিদের কাছেই। পারলে ওরাই পারে ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে, মনের কোণে এক চিলতে আশার রেখাই এখন সম্বল ফরিদের। |