আর মাত্র ছ’দিন। বড়দিনের কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। রীতিমতো সাজো সাজো রব ব্রিটেনে। কিন্তু তার মধ্যেই পিছু ধাওয়া করেছে ঘণ্টায় প্রায় ১৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া আর মুষলধারে বৃষ্টি। সেই সঙ্গে হাড়-কাঁপানো ঠান্ডা। মাথায় গাছ পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন আয়ার্ল্যান্ডের বছর তেইশের এক তরুণী। আহত হয়েছেন আরও এক জন। খোঁজ মিলছে না এক নাবিকেরও।
ব্রিটেনের আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, স্কটল্যান্ডে এ বছর সাত ইঞ্চি পুরু বরফ পড়বে। আশঙ্কা যে ভুল নয়, তার আভাস চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই মিলেছে। তবে পরিস্থিতি সামলাতে আগে থেকেই তৈরি ছিলেন স্কটল্যান্ডের বাসিন্দারা। খারাপ আবহাওয়ায় বিপর্যস্ত আয়ার্ল্যান্ড থেকেই মেলে প্রথম সাবধানবাণী। ওয়েলসের গ্রামগুলোতে এখন বন্যার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদেরা। তাপমাত্রাও নেমে গিয়েছে স্বাভাবিকের থেকে বেশ অনেকটা নীচে। অন্য বারের থেকে ঠান্ডাও পড়বে অনেক বেশি, ভবিষ্যদ্বাণী আবহবিজ্ঞানীদের।
বুধবার রাতে দেখা গেল ব্রিস্টল বিমানবন্দরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু বিমান। বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ায় দৃশ্যমানতা শূন্যের কাছে। সামান্য দূরের জিনিসও দেখা দায়। তাই বাতিল করা হয়েছে বহু উড়ান। আবার কেন্টের বন্দর-কর্তৃপক্ষ জানালেন, খারাপ আবহাওয়ার জেরে ইংলিশ চ্যালেনের দিকে যাওয়া যাচ্ছে না। বিপর্যস্ত ফেরি পরিষেবারও। “আর পাঁচ দিন পরেই বড়দিন। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আরও খারাপ হবে জল-হাওয়া। এই সময় ঘরবন্দি হয়ে থাকতে খুব খারাপ লাগছে,” বললেন এক তরুণী। তার মধ্যে আবার অন্ধকারে ডুবে উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ড। বাইরে ঝড়বৃষ্টি, বাড়িতে অন্ধকার। ঝোড়ো হাওয়ায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন। দক্ষিণ ওয়েলসের প্রায় ৯০০ বাড়িও একই অবস্থা। এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা আগে হয়নি, বলছেন ব্রিটেনের অনেকেই।
ফুটবলের স্কাই বেট চ্যাম্পিয়নসিপ চলছে শেফিল্ডে। এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়েও উৎসাহে ভাটা পড়েনি ফুটবলপ্রেমীদের। আর-পাঁচটা ম্যাচের মতো তাঁরা ভিড় জমিয়ে ছিলেন স্টেডিয়ামে। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ দিকে গড়ায়। বুধবার রাতে খেলা বাতিল করে দিতে হয়। হতাশ হয়েই বাড়ি ফিরতে দর্শকদের। “আগে কখনও এত খারাপ অভিজ্ঞতা হয়নি,” মন্তব্য ডেরেকের। খেলা দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। রাস্তাঘাটের অবস্থাও খারাপ। জল জমেছে অনেক রাস্তায়। সেই সঙ্গে বাড়ছে ট্রাফিকের সমস্যা। দেশের রেল ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত। সমুদ্র ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, ছোট কার্গো জাহাজ নিয়ে বেরিয়েছিলেন বছর পঁয়তাল্লিশের এক নাবিক। এখনও পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি তাঁর। |