এ বার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জানিয়ে দিলেনএই নির্বাচনে বিএনপি-জোটের অংশ নেওয়ার আর কোনও সুযোগ নেই। আজ তিনি বলেন, “বিএনপি নির্বাচনের ট্রেন ফেল করেছে। তারা পৌঁছনোর আগেই এই ট্রেন ছেড়ে চলে গিয়েছে।” বিএনপি ও আওয়ামি লিগের মহাসচিবদের আলোচনা প্রক্রিয়া শেষ না-হলেও প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরে কার্যত তার আর কোনও প্রাসঙ্গিকতাই রইল না। এর মধ্যেই নির্বাচন বাতিলের দাবিতে শনিবার ভোর থেকে ফের চার দিনের অবরোধের ডাক দিল বিএনপি ও তার জোটসঙ্গী জামাতে ইসলামি। তিন দফা হরতালের পরে এ’টি হবে বিরোধী জোটের চতুর্থ দফার অবরোধ কার্মসূচি। তৃতীয় দফার অবরোধ শেষ হওয়ার কথা আগামী কাল সকালে। কিন্তু প্রশাসনের কড়া বন্দোবস্তে এ বারের অবরোধ জনজীবনে তেমন কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি। আজও ঢাকা ছিল স্বাভাবিক।
এর মধ্যেই বিকেলে পাকিস্তান হাই-কমিশন ঘেরাও করতে যাওয়া গণজাগরণ কর্মীদের ওপরে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার, প্রথম সারির কর্মী লাকি আখতার, বাপ্পাদিত্য বসু-সহ প্রায় ১৮ জন এই ঘটনায় জখম হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জনা দশেক কর্মীকে আটক করেছে বলেও অভিযোগ করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের আইনসভায় নিন্দা প্রস্তাব নেওয়ায় সে দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদ করার দাবিতে এ দিন পাক হাই-কমিশন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চ। কিন্তু পুলিশ খানিকটা আচমকাই তাঁদের ঘিরে ধরে লাঠি চালানো শুরু করে। ইমরানের মাথা, ঘাড় ও হাতে আঘাত লেগেছে। লাকিকে হিঁচড়ে নিয়ে যায় মহিলা পুলিশ। কালই এক দফা পুলিশের লাঠিতে জখম হয়েছিলেন বাপ্পাদিত্য। আজ হাসপাতাল থেকে মিছিলে যোগ দেওয়ার পরে ফের লাঠির গায়ে আহত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছেন তিনি। পুলিশের লাঠি চালনার প্রতিবাদে কাল ফের অবস্থানের ডাক দিয়েছে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ। কাল রাতে প্রধানমন্ত্রী নিজেই কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরোধিতা করায় পাকিস্তানের সমালোচনায় সরব হন। তার পরে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠি চালনায় তাই বিস্মিত অনেকেই। পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, ঢাকার ওই অঞ্চলে অনেকগুলি কূটনৈতিক মিশন থাকায় মিছিলকে আটকে দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশের বারণ না শোনায় লাঠি চালাতে হয়।
এ দিকে বিএনপি-র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এ দিন দলের দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই নির্বাচন বাতিলের দাবি জানান। তিনি বলেন, বড়দিনের বিবেচনা করে তার আগের দিন সন্ধ্যায় অবরোধ তুলে নেওয়া হবে। তবে কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরোধিতা করা পাকিস্তানের নিন্দা করতে রাজি হননি জামাতের জোটসঙ্গী দলটির নেতা। তিনি বলেন, এটা সরকারের কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাল শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, পাকিস্তানকে উচিত জবাব দেওয়ার ব্যাপারেও বিএনপি সহযোগিতায় এগিয়ে এল না। তারা কাদের পক্ষে, এ থেকেই তা পরিষ্কার। |