১২ বছর আগে যাতায়াতের সুবিধার জন্য নদীর উপর সেতু তৈরি করেছিল তৎকালীন জেলা পরিষদ। কিন্তু সেতু সংযোগকারী সেই রাস্তা (আপ্র্যোচ রোড) বার বার ভেঙে যাওয়ায় সেতুর সঙ্গে মূল রাস্তার যোগাযোগ প্রায় বিছিন্ন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্ডাল রেল শহরকে ঘিরে রয়েছে অন্ডাল, শ্রীরামপুর, রামপ্রসাদপুর, মদনপুর, কাজোড়া প্রভৃতি পঞ্চায়েত এলাকা। অন্ডাল রেল শহর থেকে এই পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করতে হয় ২ নম্বর জাতীয় সড়ক। এ ছাড়া আরও একটি রাস্তা রয়েছে। কিন্তু সেই রাস্তায় যাওয়ার মধ্যে থাকা সিঙ্গারণ নদীতে সেতু না থাকার জন্য রাস্তাটি ব্যবহার করা যেত না। মূলত জাতীয় সড়কের যানজট ও ঝুঁকি এড়াবার জন্য ওই এলাকাগুলির সঙ্গে রেল শহর অন্ডালের দুরত্ব কমানোর জন্য সিঙ্গারণ নদীর উপর ২০০১ সালে সেতু তৈরি করে জেলা পরিষদ। কিন্তু সেই সেতুর নকশাগত সমস্যার কারণে সেতু সংযোগকারী রাস্তাটাই বর্তমানে প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। |
ভেঙে গিয়েছে এই রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র। |
অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা সিপিএম নেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, জেলা পরিষদের তৎকালীন বাস্তুকার ওই সেতুর সমীক্ষা করে নকশা তৈরির সময় সিঙ্গারণ নদীতে বর্ষার সময় কত জল যেতে পারে সেটা বুঝতে পারেননি। তাই সেতুর নীচে ১৬টি পাইপ বসানো হয়েছিল। ফলে বর্ষার সময় ওই পাইপগুলির খোলা মুখে আটকে যাচ্ছে আর্বজনা ও জলের সঙ্গে ভেসে আসা গাছের ডাল। জল বেরোনোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দ্রুত গতিতে ধেয়ে আসা জলে বারবার ভেঙে গিয়েছে রাস্তা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে ওই রাস্তা ভেঙে যাওয়ার পর সারাই করা হয়েছিল। ২০০৫ সাল থেকে পরপর তিন বছর বর্ষায় সংযোগকারী রাস্তা ভেঙে যায়। তিন বছরই পঞ্চায়েত সমিতি ডিভিসি’র সহযোগিতায় পুনরায় রাস্তাটি তৈরি করে। সেই রাস্তা ২০০৯ সালে আবার ভেঙে যায়। এর পর মদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ওই রাস্তা তৈরি করে দেয়। বালি ভর্তি বস্তা ফেলে দু’পাশে মজবুত গার্ড-ওয়াল দেওয়া হয়। কিন্তু সেই রাস্তাও নষ্ট হয়ে যায় বর্ষায়। তার পর থেকে আর সারাই করা হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জেলা পরিষদ এবং এডিডিএ’কে তাঁরা অনেক বার ওই সেতু বাতিল করে পিলারের উপর নতুন সেতু নির্মাণের আবেদন জানিয়েছেন। এডিডিএ নতুন করে সেতু নির্মাণ ও সংযোগকারী রাস্তা-সহ অন্ডাল থানা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার বেহাল রাস্তা নতুন করে তৈরি করার পরিকল্পনা করে। জেলা পরিষদের সদস্যরা এলাকা সমীক্ষা করে যান। কিন্তু এখনও কাজের কাজ কিছু হয়নি। অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা কালোবরণ মণ্ডল জানান, ওই সেতুটি বাতিল করে নতুন সেতু-সহ রাস্তা তৈরি করবে জেলা পরিষদ। তার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে স্থানীয় জেলা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। |