পুরুষ বিভাগের ২৩ নম্বর শয্যায় শুয়ে কাঁপছিলেন আব্বাস মিঁয়া। তাঁর শরীর আরও কাবু হয়েছে ঠান্ডার দাপটে। দুর্ঘটনায় জখম হয়ে ৪৪ নম্বর শয্যায় বলরামপুরের রঞ্জিত্ সরকার। শীতে জবুথবু তিনিও। পুরুষ, মহিলা ও শিশু বিভাগের একাধিক ঘরে দরজা আর জানালার ভাঙা কাচ দিয়ে হু হু করে ঠান্ডা হাওয়া ঢুকে এই ভাবেই রোজ নাকাল হচ্ছেন কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালের রোগীদের।
এই হাসপাতালে ৪০০টি শয্যা আছে। গড়ে তিন শতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। জেলার বিভিন্ন এলাকা তো বটেই আলিপুরদুয়ার ও নিম্ন অসমের রোগীরা এখানে আসেন। রোগীদের থাকার ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। রোগী বাড়লে বারান্দায় বেড পেতে রোগীদের রাখার বন্দোবস্ত করা হয়। পর্যাপ্ত কম্বল না থাকায় অনেকে তা পান না। তার উপর শীতের শুরুতে এ ভাবে কাচ ভাঙা দরজা আর জানালা মেরামত না হওয়ায় সমস্যা বেড়েছে। ভাঙা জানালার কাছে শয্যায় শুয়ে বৃদ্ধ আব্বাস মিঁয়া বলেই দিলেন, “দিনটা রোদের তাপে কাটে, সন্ধ্যায় শীতের জন্য ভিতরে থাকাটাই বড় সমস্যা।” |
হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি চেয়ারম্যান তথা পূর্ত দফতর পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “জেলা হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙা দরজা, জানালা মেরামতে কাজ হবে।” নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “ভাঙা দরজা জানালার জন্য সুস্থ হতে এসে অনেকে ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আন্দোলনের কথা ভাবছি আমরা।” কোচবিহার সিটিজেন ফোরাম সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “প্রতি শীতে এ সমস্যা হচ্ছে। শেষ সময়ে তড়িঘড়ি কাজ করে পরিস্থিতি সামলানো হয়।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, নভেম্বরে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে ভবনের কিছু অংশ সংস্কার ছাড়া ভাঙা দরজা ও জানালা সারানোর বিষয় চূড়ান্ত হয়। পূর্ত দফতর কাজ করবে। হাসপাতালের সুপার জয়দেব বর্মন বলেন, “পূর্ত দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁরা কাজ শুরু করবে জানিয়েছে।” |