কুকুরে কামড়ানো রোগীদের জন্য অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরে ভাঙড়, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অন্য হাসপাতালগুলিতে এআরভি-র জোগান নেই। রোগীদের অভিযোগ, কুকুরে কামড়ানো ভ্যাকসিন নেই বলে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে তাঁদের কলকাতার সরকারি হাসপাতালে যেতে হচ্ছে অথবা বেশি খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সা করাতে হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিক অসীম দাস মালাকার বলেন, “হায়দরাবাদের একটি ওষুধ কোম্পানি এই ভ্যাকসিনের জোগান দেয়। কিন্তু কিছু দিন ধরে সেই সরবরাহ বন্ধ। সেই কারণেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, “আশা করছি, এক সপ্তাহের মধ্যে ভ্যাকসিনের সরবরাহ ঠিক হয়ে যাবে।”
সম্প্রতি ভাঙড়ের এক ব্যবসায়ী ইন্তিখাব আলমের বাড়ির কুকুর রাস্তার এক পথচারীকে কামড়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই পথচারীর চিকিত্সার ব্যবস্থা জন্য ইন্তিখাবের কাছে দাবি তোলেন। আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়ে ভাঙড় ২ ব্লকের জিরেনগাছা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান ইন্তিখাব। কিন্তু ওই ভ্যাকসিন নেই বলে সেখান থেকে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরে চিকিত্সার জন্য ওই ব্যক্তিকে ভাঙড়-১ ব্লকের নলমুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেও একই কারণে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর কলকাতায় নিয়ে গিয়ে ওই ব্যক্তির চিকিত্সা করানো হয়। ইন্তিখাব বলেন, “যাঁদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাঁরা কী ভাবে কলকাতায় গিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সা করাবেন?”
ভাঙড়-২ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক অভ্রজিত্ রাহা বলেন, “আমরা তো মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বসে আছি। যদি ভ্যাকসিন না পাই, তা হলে কোথা থেকে দেব?” ক্যানিং হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সরকার বলেন, “কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে ভ্যাকসিনের জোগান নেই ঠিকই। পুরনো স্টক দিয়েই এখনও পর্যন্ত কাজ চালানো হচ্ছে।” কিন্তু সুন্দরবনের মতো জায়গায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে কুকুরে কামড়ানোর ভ্যাকসিন না থাকায় ইতিমধ্যেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। কবে থেকে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে তাও বলতে পারছে না স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি। আপাতত অনিশ্চয়তা নিয়েই দিন কাটছে সুন্দরবনের মানুষের। |