জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতিকে মারধরের মামলায় অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করল আদালত। মঙ্গলবার পুরুলিয়া জেলা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (৪ নম্বর আদালত) প্রীতমনা নন্দ ওই রায় দিয়ে মামলাটির নিষ্পত্তি ঘোষণা করেন।
এই মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন জেলার তিন তৃণমূল নেতা সহ ছ’জন। অভিযুক্তদের তালিকায় নাম ছিল জেলা তৃণমূলের কাযর্করী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়া ২ ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি রাজপতি মাহাতো, বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা নবেন্দু মাহালি এবং তৃণমূলের অন্য দুই কর্মীর। এ ছাড়াও অভিযুক্ত ছিলেন ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চার রাজ্য সভাপতি অজিত মাহাতো। পুলিশ সূত্রের খবর, ২০০৯ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার দিন পুরুলিয়ার জেলাশাসকের অফিস চত্বরেই মারধর করা হয় জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের তৎকালীন সভাপতি শিবশঙ্কর হালদারকে। তাঁর জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয়, চশমা ভেঙে যায়। এ ছাড়া, ঘেরাও-ভাঙচুর হয় একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে।
পরীক্ষার আগে পরীক্ষায় বসার সুযোগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল বেকার যুবকদের পক্ষ থেকে। অন্য অভিযুক্তদের মতোই আন্দোলনকারীদের পাশে ছিলেন অজিত মাহাতো। এ দিন অভিযোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে তিনি দাবি করেন, “আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করেছিলাম। জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম, যাতে বেকার যুবকেরা অন্তত পরীক্ষায় বসতে পারে। কে বা কারা ওঁকে মারধর করেছিল, সে সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতাম না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই আমাকে মামলায় যুক্ত করা হয়। আদালতের রায়ে সেটাই প্রমাণিত হল।”
মামলার সরকারি আইনজীবী অরুণকুমার মজুমদার জানান, এই মামলায় সাক্ষ্যদানে এসে শিবশঙ্করবাবু কারও নাম বলতে পারেননি। এমনকী ওই মামলায় অন্য যাঁরা সাক্ষী ছিলেন, তাঁরাও হামলাকারীদের কারও নাম বলতে পারেননি। পুরুলিয়া জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) পঙ্কজ গোস্বামী বলেন, “জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের তৎকালীন সভাপতিকে মারধরের ঘটনায় ছ’জন অভিযুক্তকেই এ দিন আদালত বেকসুর খালাস করেছে।” তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছিল, এ দিন আদালতের রায়ে তাই প্রমাণিত হল।” একই কথা বলেছেন নবেন্দুবাবু ও রাজপতিবাবুও। আর জেলাশাসকের অফিস চত্বরেই প্রকাশ্যে মার খেয়েছিলেন যিনি, সেই শিবশঙ্করবাবুর প্রতিক্রিয়া, “আমি আর কী বলব! এত দিন পরে ওই ঘটনা সম্পর্কে কিছু মনে নেই।”
|