মুক্তিপণ নিতে এসে পুলিশের জালে ধরা পড়ল অপহরণকারীদের দলের একজন। ধৃত একজন মহিলা। কথামত সোমবার দুপুরে নদিয়ার চাকদহ বাসস্ট্যান্ডে মুক্তিপণের টাকা নিতে এসেছিল ওই মহিলা। আগে থেকে পুলিশ নিয়ে সেখানে ওত্ পেতেছিলেন অপহৃতের বাড়ির লোকজন। চাকদহ থানার সহযোগিতায় বনগাঁ থানার পুলিশ মানোয়ারা বিবি নামে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার তাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেন। মানোয়ারারা বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা থানার সুভাগড় এলাকায়।
রহিম মণ্ডল।
|
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁর ভুলোট গ্রামের যুবক রহিম মণ্ডলকে গত অগস্ট মাসে একদিন রাত ১০টা নাগাদ গোপালনগর থানার মেহেরপুরের কয়েকজন যুবক বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। সন্ধান না পেয়ে প্রথমে বনগাঁ থানায় রহিমের পরিবারের তরফে নিখোঁড ডায়েরি করা হলেও পরে অপহরণের মামলা করা হয়। রহিমেরা বাবা মান্নান খেতমজুরের কাজ করেন। পরিবার সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে মান্নানের মোবাইলে একটা ফোন আসে। ছেলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মান্নান বলেন, “ফোনে জানতে পারি ছেলেকে গড়বেতা থানার সুভাগড় এলাকায় আটকে রাখা হয়েছে। মুক্তিপণের জন্য অত্যাচার করছে অপহরণকারীরা। ফোনে ছেলে কাঁদতে কাঁদতে জমি বিক্রি করে টাকার ব্যবস্থা করে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে।” পুলিশকে মান্নান জানান, রহিম পাচারের গরু ট্রাকে ওঠানো-নামানোর কাজ করত। মেহেরপুরের কয়েকজন তাকে ওই কাজে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি জানান, প্রথমে তাঁর কাছে ছেলের মুক্তিপণ হিসাবে ২৫ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। পরে তা কমিয়ে ১২ লক্ষ টাকা করা হয়। মানোয়ারা বিবি নামে ধৃত ওই মহিলা কিছদিন আগে চাকদহ বাসস্ট্যান্ড এসে তাঁর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সোমবার ফের তার টাকা নিতে আসার কথা ছিল। খবর পেয়ে আগে থেকেই পুলিশ সেখানে হাজির ছিল। মানোয়ারা এলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মানোয়ারা গ্রেফতার হলেও এখনও রহিমকে উদ্ধার করা যায়নি। মানোয়ারা ধরা পড়ায় মঙ্গলবার সকালে ফোন করে রহিমকে মেরে ফেলা হবে বলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন মান্নান। বনগাঁ থানার পুলিশ জানিয়েছে, মানোয়ারাকে জেরা করে রহিমকে অপহরণ করে কোথায় রাখা হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে। |