দুর্নীতির অভিযোগ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে
পুকুর সংস্কার করেছে কে? কাজিয়া বাগদায়
মালিকের পরিবারের দাবি, নিজেদের খরচেই চার বিঘা পুকুরটি সংস্কার করিয়েছিলেন। যদিও সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন, পঞ্চায়েতের তরফে একশো দিনের প্রকল্পে ওই কাজ হয়েছে বলে মাস্টাররোল দাখিল করা হয়েছে। যে জন্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা তোলাও হয়েছে।
এই ঘটনায় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন বাগদার বলিদাপুকুর এলাকার বাসিন্দা সংশ্লিষ্ট পরিবারটি। সেই মতো উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের নির্দেশে তদন্তও হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ‘অস্বচ্ছ্বতা’ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন বাগদার বিডিও মালবিকা খাঁটুয়া। তিনি বলেন, “তদন্তে জানা গিয়েছে, যে শ্রমিকদের দিয়ে পুকুর সংস্কারের কাজ হয়েছিল বলে পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে, সেই সব শ্রমিকেরা কাজ করেননি। ফলে মজুরিও পাননি। কাজটির মধ্যে স্বচ্ছ্বতার অভাব আছে। ফের এক বার ঘটনার তদন্ত করা হবে। রিপোর্ট পাঠানো হবে জেলাশাসককে।”
এই পুকুর সংস্কারকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
পুকুর সংস্কার হয়েছিল ২০১০ সালে। অভিযোগের তির সংশ্লিষ্ট কোনিয়াড়া ১ পঞ্চায়েতের তত্‌কালীন সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। সে সময়ে প্রধান ছিলেন রমেশ মণ্ডল। তাঁর বক্তব্য, “অভিযোগ মিথ্যা। পঞ্চায়েতের তরফেই পুকুরটি সংস্কার করা হয়েছিল। রাজনৈতিক চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।” ২০১৩ সালে এই পঞ্চায়েতে ক্ষমতা ধরে রেখেছে সিপিএম। বর্তমান প্রধান সুবোধ মৃধারও দাবি, পঞ্চায়েতের তরফেই একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর সংস্কারের কাজ হয়েছিল। তবে কিছু শ্রমিক মজুরি পাননি। তিনি বলেন, “প্রশাসনিক তদন্তেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।”
ইতিমধ্যেই আসরে নেমেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেছে তারা। তবে তার পিছনে রাজনীতি আছে বলে মানতে চাননি তাঁরা। স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাপি দাস বলেন, “সম্প্রতি পঞ্চায়েত অফিস থেকে একটি কম্পিউটার চুরি যায়। সেখানে ওই পুকুর সংস্কার সংক্রান্ত নথিপত্র ছিল বলে আমাদের ধারণা। প্রশাসনের তদন্তেই সত্য সামনে আসবে।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১০ সালে পুকুরটির মালিক ছিলেন দুলাল রায়। তিনি মাস দু’য়েক আগে মারা গিয়েছেন। তাঁর মেয়ে বিউটি সরকার ও কৃষ্ণা বিশ্বাসের দাবি, সাদা কাগজে পঞ্চায়েতের কাছে ধুলুনি মৌজায় চার বিঘা এলাকার একটি পুকুর সংস্কারের আবেদন জানিয়েছিলেন বাবা। দীর্ঘ দিন কেটে যাওয়ার পরেও পঞ্চায়েতের তরফে উচ্চবাচ্য না দেখে বাবা নিজের উদ্যোগেই খরচ করে পুকুর সংস্কার করেছিলেন। চলতি বছরের ৩ অক্টোবর মারা যান দুলালবাবু। তার কয়েক মাস আগেই একশো দিনের কাজের প্রকল্পের সরকারি ওয়েবসাইট ঘেঁটে তাঁরা জানতে পেরেছিলেন, পুকুর সংস্কার বাবদ একশো দিনের কাজের প্রকল্পে পঞ্চায়েত থেকে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার কিছু বেশি তুলে নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত শ্রমিকদের নাম দাখিল করা হয়েছে, তাঁরা কখনওই পুকুরটি সংস্কারের কাজ করেননি বলে দাবি দুলালবাবুর মেয়েদের। গত ২৫ অক্টোবর মহকুমাশাসক ও জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ করেন তাঁরা। কিন্তু অভিযোগ জানাতে এত দিন সময় নিলেন কেন তাঁরা? দুলালবাবুর জামাই বিকাশ সরকার বলেন, “প্রথমে আমরা বিষয়টি জানতেই পারিনি। মাস কয়েক আগে ওয়েবসাইট ঘাঁটতে গিয়ে নজরে পড়ে। তা ছাড়া, পঞ্চায়েতের তরফে শ্বশুরমশাই যাতে অভিযোগ না করেন, সে জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল।” এ কথা অবশ্য মানতে চাননি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.