|
|
|
|
পড়ুয়াদের চিঠি পেয়ে খুশি বন্দি শর্মিলা |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি
১৭ ডিসেম্বর |
দেশের নানা প্রান্তের একরত্তি স্কুলপড়ুয়াদের চিঠি পেয়ে আপ্লুত ইরম শর্মিলা চানু। শ’তিনেক চিঠির কোনওটিতে ছোট্ট হাতে লেখা, ‘একবেলা না-খেলেই আমার খুব খিদে পায়, তুমি কী করে ১৩ বছর না-খেয়ে রয়েছো!’ কেউ আবার লিখেছে, ‘এ বার থেকে আমরা সবাই মিলে আন্দোলন করবো। তুমি নিজেকে আর এত কষ্ট দিও না।’
এ সব দেখে হাসির রেখা হাসপাতালে বন্দি শর্মিলার মুখে।
আজ একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ভারতীয় শাখার প্রধান জি অনন্তপদ্মনাভন-সহ চার সদস্যের প্রতিনিধিদল ইম্ফলের জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে চানুর সঙ্গে দেখা করেন। তখনই ছোটদের লেখা ওই চিঠিগুলি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়। শর্মিলার মুক্তির দাবিতে ভারতজুড়ে আন্দোলন শুরু করেছে ওই সংস্থাটি। তাঁদের পক্ষ থেকে শর্মিলাকে জানানো হয়, গত এক মাসে ভারতের ১৬ হাজার নাগরিক ওই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। চানু বলেন, “সমাজে বড় কোনও পরিবর্তন করতে হলে সচেতনতা, নিষ্ঠা, ঐক্য ও আত্মত্যাগকেই অস্ত্র করতে হবে। আমার আন্দোলন এত জন মানুষকে একসূত্রে গেঁথেছে, সেটাই বড় সাফল্য।” অনন্তপদ্মনাভনের কথায়, “শর্মিলা আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছেন না, তিনি সচেতন ভাবে, গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন চালাচ্ছেন তা সকলেই জানেন। ভারত সরকার অন্যায়ভাবে তাঁকে বন্দি করে রেখেছে।”
এ বছর ৩০ অক্টোবর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরাও শর্মিলার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁরাও জানিয়েছিলেন, শর্মিলার সঙ্গে সরকারের ব্যবহার মানবাধিকার ভঙ্গের সামিল। তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য কাউকে বাধা দেওয়া যায় না। কিন্তু, তারপরও কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার এ বিষয়ে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করেনি।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির বক্তব্য, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, রামলীলা ময়দানের ঘটনার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, অনশন প্রতিবাদেরই একটি পথ। তা ঐতিহাসিক ও আইনগতভাবে স্বীকৃত। সংস্থাটি জানিয়েছে, অনশন কখনওই আত্মহত্যার সমার্থক নয়। দাবিপূরণের রাস্তা হিসাবে এবং বেঁচে থাকার ইচ্ছা জানিয়েই সে পথে এগোন হয়। কিন্তু, শর্মিলার আন্দোলনকে অপরাধের তক্মা লাগিয়েছে ভারত সরকার। |
|
|
|
|
|