কোর্টের ভর্ৎসনায় শরণার্থী শিবিরেই হাসপাতাল |
সংবাদ সংস্থা • মুজফ্ফরনগর
১৭ ডিসেম্বর |
দু’মাসের শিশু এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে কাবু। খড়ের মাদুরে সেই শিশুকে নিয়ে শুচ্ছেন তার বাবা-মা। ঠান্ডা থেকে বাঁচতে সম্বল একটাই কম্বল। তাঁবুর আবরণ শুধু বাঁচাচ্ছে বৃষ্টি থেকে।
মুজফ্ফরনগরের লোয়ি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া পরিবারের দিন কাটছে এ ভাবেই। গ্রামে গোষ্ঠী সংঘর্ষের পরে ঘর ছেড়েছেন সেপ্টেম্বর মাসে। এখানকার এই শিবিরে রয়েছে এমন আরও ৪০০টি পরিবার। কেউ কেউ সরকারি সাহায্য পেয়েছেন। পাননি বলেই শীতে চূড়ান্ত অব্যবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ওঁরা। সংঘর্ষে কারও বাড়ি আগুনে পুড়ে শেষ। ফের ঝামেলার ভয়ও পাচ্ছেন অনেকে।
কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আর সরকারি সাহায্যে খাবারদাবার তাঁরা পাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু বিনা চিকিৎসায় গত এক মাসে নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ছ’টি শিশুর। রাতে তাপমাত্রা হু হু করে নামছে। অথচ সাতশো শিশুর জন্য সরকার মাত্র ১৮১টি কম্বলের ব্যবস্থা করতে পেরেছে। এর আগে ঠান্ডায় শুধু মালাকপুর শিবিরেই প্রাণ হারিয়েছে ৩০টি শিশু। এখানেও খড়ের পাতলা মাদুরে শুতে হচ্ছে বয়স্ক মানুষদের। অনেকেই তাই ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য তাঁবুর ভিতরে না থেকে বাইরে আগুন জ্বালিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। সকালে অন্য বিপদ। তাঁবুর ভিতরে ঢুকে দেখছেন সব শিশিরে ভেজা।
ঠান্ডায় একের পর এক শিশুমৃত্যুর ঘটনা নজরে এসেছে সুপ্রিম কোর্টের। গত বৃহস্পতিবার এ নিয়ে অখিলেশ সরকারকে ভর্ৎসনাও করেছে শীর্ষ আদালত। তার জেরে লোয়ি গ্রামে অস্থায়ী একটি হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। তাতে রয়েছে এক মহিলা চিকিৎসক-সহ দুই চিকিৎসক। ওই শিবিরে ৭১ জন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা রয়েছেন। তার মধ্যে ছ’জনের যে কোনও মুহূর্তে প্রসব হতে পারে। তাই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সেরও।
মুজফ্ফরনগরে গোষ্ঠী সংঘর্ষের আগে অগস্ট মাসে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করায় অভিযুক্ত হন বসপা সাংসদ কাদির রানা। সংঘর্ষে মদত দেওয়ারও অভিযোগ ছিল। আজ তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। ১৪ দিন তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেপ্টেম্বরে ওই এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হতেই তিনি পালিয়ে যান।
|
পুরনো খবর: সংঘর্ষের রিপোর্ট চায় দিল্লি, মৃত বেড়ে ৩১ |
|