আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর কার্যকরী মূলধন পাওয়ার পথ এখনও অনিশ্চিত। মঙ্গলবার পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে ফের ব্যাঙ্কঋণকে শেয়ারে পরিণত করার প্রস্তাব উঠলেও, তা নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। সাত দিন পরে ২৪ ডিসেম্বর আবার আলোচনায় বসছে পর্ষদ। রাজ্যের দাবি, সেখানে সমাধানসূত্র উঠে আসবে।
মাথার উপরে বিআইএফআর-এর খাঁড়া ঝুলছে। চূড়ান্ত অর্থাভাবে কারখানা অর্ধেক উৎপাদন করছে। আইনি জটে আটকে রাজ্য সরকারের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া। এই অবস্থায় শীঘ্রই নতুন পুঁজি না-ঢাললে, কারখানা সচল রাখাই দায়। এ দিন এ বিষয়ে অবশ্য একমত যুযুধান দু’পক্ষই, চ্যাটার্জি গোষ্ঠী ও রাজ্য সরকার। দু’পক্ষই সংস্থার আর্থিক সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, বৈঠকে ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা তাঁদের ঋণের অঙ্কের কিছুটা শেয়ারে পরিণত করার প্রস্তাব দেন। এতে রাজি হওয়ার শর্ত হিসেবে ব্যাঙ্কের কাছে নতুন ঋণ চেয়েছে রাজ্য। বিষয়টি এখনও আলোচনার স্তরেই রয়েছে। এর আগে ২০১২ সালে বিআইএফআরে যাওয়া ঠেকাতে ১২৮ কোটি টাকার ঋণ শেয়ারে পরিণত করতে অনুমোদন দেয় পর্ষদ।
হিসাব নিরীক্ষকের মতে, গত অর্থবর্ষেই পেট্রোকেমের ক্ষতির অঙ্ক ছিল ১,১৪৮.৯০ কোটি। পরের পাঁচ মাসে তা আরও প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, খাতায়-কলমে সংস্থার শেয়ার দর শূন্য।
বৈঠক শেষে সংস্থার চেয়ারম্যান তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, কারখানার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সংস্থার এমডি উত্তম বসু রিপোর্ট পেশ করেছেন। সেটি এবং এ দিনের বৈঠকে আলোচিত বিষয় নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট মন্ত্রিগোষ্ঠীর কাছে দেওয়া হবে। সংস্থার জন্য মুখ্যমন্ত্রী এই মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি করেছেন। পার্থবাবু ছাড়াও তাতে আছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। পার্থবাবু বলেন, “সংস্থাকে বাঁচাতে সব পথ খতিয়ে দেখছি।” একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, পূর্বতন সরকার জরুরি পদক্ষেপ না-করায় সংস্থার এই দশা। প্রসঙ্গত, ন্যাপথা কেনাবেচা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সংস্থার অন্যতম অংশীদার চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ও আর্থিক সমস্যার কথা বলেন। তবে সমস্যা মেটার পথ নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি।
|