প্রায় দু’মাস স্থগিত হয়ে গেল কাটোয়া ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনার সাক্ষ্যগ্রহণ। তা ফের শুরু হবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি। মঙ্গলবার কাটোয়া মহকুমা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সৈয়দ নেহাজুদ্দিন কবে, কোন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেবেন তা আইনজীবীদের জানিয়ে দেন।
অভিযুক্তদের অন্যতম আইনজীবী মিনাজুদ্দিন কবীর (ধীরাজ) বলেন, “ছোট রেলে ডাকাতির ঘটনায় ১৮ জন সাক্ষী ছিলেন। তার মধ্যে ৯ জন সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন। বাকিদের ফের আদালতে ডেকে বিচারক তাঁদের সাক্ষ্য শুনতে চান। কিন্তু এ দিনও আদালতে সাক্ষী দিতে আসেননি এক যাত্রী। এর আগেও পরপর কয়েকজন সাক্ষ্য দিতে আসেননি।”
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আমোদপুর-কাটোয়া ছোট লাইনের পাঁচুন্দি ও অম্বলগ্রামের মাঝে গোমাই গ্রামের কাছে কাটোয়ামুখী ছোটরেলে ডাকাতির ঘটনাটি ঘটেছিল। অভিযোগ, ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় এক বিধবাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ওই বিধবাকে ট্রেন থেকে নামানোর সময় তাঁর ১১ বছরের মেয়ের মাথায় দুষ্কৃতীরা বন্দুক ধরেছিল বলেও অভিযোগ। ওই ঘটনায় মোট আট জন অভিযুক্ত। তাদের মধ্যে পুলিশ সাতজনকে গ্রেফতার করে। অভিযোগকারিণী ও তাঁর ১১ বছরের মেয়ে রেজাউল মির্জা ওরফে বাবু, নয়ন শেখ ও ফরিদ শেখ এই তিনজনকে আদালতে শনাক্ত করে।
কেতুগ্রামের কায়েশ সেখ এখনও অধরা। এর মধ্যে মাসখানেক আগে অবশ্য কাটোয়া থেকে সাক্ষ্য দিয়ে ফেরার সময় লাভপুরে এক পথ দুর্ঘটনায় মারা যান জামিনে থাকা ফরিদ শেখ ও কালাম শেখ।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ডাকাতির ঘটনায় ওই ট্রেনের চালক. সহকারী চালক ও গার্ড তিনজন মিলে কাটোয়ার জিআরপি থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কাটোয়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে এসে গার্ড সাক্ষ্যও দেন। তিনি আদালতকে জানিয়েছিলেন, দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ট্রেন দাঁড় করাতে বলে এবং তাঁদের নির্দেশ মতো তিনি চালককে বলেন, ‘ট্রেন থেকে শিশু পড়ে গিয়েছে’। ওয়াকিটকিতে সে কথা শোনার পর চালক ট্রেনটি দাঁড় করায়। তারপর ট্রেনে লুঠপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। ওই ট্রেনের দুই চালক অবশ্য সাক্ষ্য দিতে আসেননি।
আইনজীবীরা আরও জানান, ট্রেন ডাকাতির ঘটনার কথা আদালতে এসে জানিয়েছেন যাত্রীরা। তাঁরা দুষ্কৃতীদের চিনতে না পারলেও ট্রেনের টিকিট, উদ্ধার হওয়া মোবাইল সেট আদালতে প্রমাণ্য নথি হিসাবে জমা দিয়েছেন। কিন্তু সাক্ষ্য নিতে এত দেরি হওয়ার কারণ কী? আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সাক্ষ্যদের বেশিরভাগের বাড়ি অন্য জেলায়। সমন পাঠানোর জন্য সময় দরকার। তাছাড়া আদালতের কাছেও নতুন করে সাক্ষ্য নেওয়ার সময় ছিল। সে কারণেই সম্ভবত আদালত দেরি করে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন নির্ধারণ করেছেন। যাত্রীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পুলিশ ও চিকিৎসকদের সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শুরু হবে।
|