আইনজীবীদের জন্য বসার স্থায়ী জায়গা নেই। নেই শৌচাগার। এমনকী পানীয় জলের একমাত্র নলকূপটিও বছরের বেশিরভাগ সময়েই অকেজো পড়ে থাকে। এই ছবি কালনা আদালতের। ফলে সমস্যায় পড়েছেন আইনজীবী থেকে শুরু করে নিত্য নানা কাজে আদালতে আসা মানুষেরা।
কালনা শহরের শ্যামগঞ্জ এলাকায় ছাড়িগঙ্গার কাছেই রয়েছে কালনা আদালত। মুন্সেফ, ফাস্ট ট্র্যাক, এসিজেএম, জেএম-সহ আটটি বিভাগ রয়েছে এখানে। ফলে রোজই বহু মানুষের যাতায়াত লেগে থাকে। কখনও কখনও মামলার জন্য আইনজীবী, ল-ক্লার্কদের বিকেল পর্যন্তও থেকে যেতে হয়। অথচ শৌচাগার বা পানীয় জলের মতো ন্যূনতম সুবিধাগুলোও মেলে না বলে অভিযোগ আইনজীবী থেকে সাধারণ মানুষ সকলের। আইনজীবীরা জাননা, স্থায়ী বসার জায়গা না থাকার জন্য কয়েকজনকে খোলা আকাশের নীচে চেয়ার-টেবিল পেতে বসতে হয়। আবার অনেকক্ষেত্রে তাঁদের বসার জন্য টিনের আচ্ছাদন দেওয়া জায়গা থাকলেও, সেখানে বেশি সংখ্যক মক্কেলদের বসার জায়গা থাকে না। এ ছাড়া অস্থায়ী আচ্ছাদনগুলিতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই বলেও তাঁদের দাবি।
আদালত চত্বরে সাক্ষীদের বসার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। বর্তমানে সেখানে কাজ করেন ল-ক্লার্কেরা। অভিযোগ, ওই বসার জায়গা থেকে মাঝেমধ্যেই সিমেন্টের চাঁই খসে পড়ে। নানা জায়গায় লম্বা ফাটলও দেখা গিয়েছে। আদালত চত্বরেই রয়েছে জিআরও অফিস। |
পুলিশের তরফে বিভিন্ন মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এখানে রাখা হয়। বর্তমানে ওই কার্যালয়ে মেঝে থেকে কাঠের তাক, সবেতেই উইপোকা বাসা বেঁধেছে বলে অভিযোগ। ফলে নষ্ট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ নথি। এছাড়া স্যাঁতসেতে এই ঘরে বর্ষায় ছাদ থেকে জল চুঁইয়ে পড়ে বলেও অভিযোগ। কার্যালয়ের এক কর্মী বলেন, “মেঝে, কাঠের আলমারি, তাক-সহ নানা জায়গায় অজস্র নথি ছড়িয়ে থাকায় কাজ করতে করতে দমবন্ধ হয়ে আসে। বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” এ ছাড়া ওই কার্যালয়ে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা, মহিলাদের জন্য হাজত নেই বলে অভিযোগ। আদালতের কাছাকাছি একটি পুলিশ ব্যারাক থাকলেও তা ভগ্ন দশায়। কালনা বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পার্থসারথী কর বলেন, “বহু বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সমস্যাগুলির ব্যাপারে মহকুমাশাসককে জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি।” বছর ছ’য়েক আগে কালনা আদালতেই আইনজীবী হিসেবে কাজ করতেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটির, ভূমি এবং বস্ত্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কাজে স্বপনবাবু আদালতে এলে আইনজীবীরা তাঁকে সমস্যার কথা জানান। তিনি নিজেও সমস্যাগুলি ঘুরে দেখেন। স্বপনবাবু বলেন, “কালনা আদালত চত্বরের বিভাগীয় মন্ত্রীর নজরে আনা হবে বিষয়টি। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।” আইনজীবীরা জানান, এর আগে ডিরেক্টর জেনারেল আশিস চক্রবর্তী দু’বার আদালতের পরিকাঠামো দেখে গিয়েছেন। কিন্তু তাতে খুব একটি বদল হয়নি। |