বৃষ্টি হলেই জল জমে যায় টানেলে। রেললাইনের দু’প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগ তখন প্রায় বিচ্ছিন্ন।
শহরে দু’দিকের প্রধান যোগাসূত্র এই টানেল দিয়ে প্রচুর যান চলাচল করে। ফলে, মাঝে-মধ্যেই দু’পাশে যানজট তৈরি হয়। সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা।
বালি বোঝাই লরি থেকে বালি পড়ে টানেল যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়ে, অভিযোগ এলাকাবাসীর।
রেল ইয়ার্ড শহর অন্ডালে রেল টানেলটি নিয়ে এমন অভিযোগের অন্ত নেই বাসিন্দাদের। রেললাইনের এক দিকে মদনপুর, রামপ্রসাদপুর, শ্রীরামপুর পঞ্চায়েত এলাকা। অন্য দিকে অন্ডাল পঞ্চায়েত এলাকা। যোগাযোগের প্রধান ভরসার এমন হালের জন্য একটি উড়ালপুল গড়ার দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। তবে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনই এমন কোনও পরিকল্পনা নেই।
টানেলটির দু’টি মুখের মধ্যে একটি দিয়ে বড় গাড়ি যাতায়াত করে। অন্যটিতে প্রায় অর্ধেক অংশ উঁচু করে ফুটপাথ হিসেবে ব্যবহার হয়। ফলে, বাকি অংশ দিয়ে শুধু দু’চাকার যানই চলাচল করতে পারে। অন্ডাল স্টেশন স্ট্যান্ডের ট্যাক্সি চালক মহম্মদ গোলাম অভিযোগ করেন, টানেলে সারা বছর ধরে জল জমে থাকে। তার উপরে কোলিয়ারির জন্য লরিতে করে নিয়ে যাওয়া বালি পড়ে জমে থাকে। অল্প বৃষ্টিতেই যাতায়াতের অযোগ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়। শ্রীরামপুর দিয়ে একটি আর একটি টানেল আছে। সেটিতেও বর্ষায় জল জমে যায়। |
ওই ট্যাক্সি চালকের কথায়, “রোগী নিয়ে যাওয়ার সময়ে মাঝে-মাঝে বেশ বিপাকে পড়তে হয়। হাসপাতালে পৌঁছতে দেরি হওয়ায় রাস্তায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। গাড়ির যন্ত্রাংশ ভাঙার ঘটনা তো আকছারই ঘটে।”
রামপ্রসাদপুর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা স্থানীয় বাসিন্দা চন্দ্রভানু দত্ত জানান, অন্ডাল রেল শহরকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বেড়ে ওঠা চারটি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের এই টানেল নিয়ে সমস্যার শেষ নেই। একটু বেশি জল পড়লেই কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তা নামতে অর্ধেক দিন পার। অনেক ঘুরে রানিগঞ্জ দিয়ে যেতে হয়। উখড়া বণিক সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি মহাদেব দত্ত জানান, কোনও একটি গাড়ি টানেলে খারাপ হয়ে গেলে চূড়ান্ত সমস্যা তৈরি হয়। গাড়ির লম্বা লাইন লেগে যায়। অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কালোবরণ মণ্ডল জানান, উড়ালপুল নিয়ে তাঁরা কয়েক বার রেলের কাছে দরবার করেছেন। কোনও প্রতিকার হয়নি। রেল আগ্রহ দেখালে তাঁরা সমিতি থেকেও সেই কাজে যথাসম্ভব সহযোগিতা করবেন। তাঁর দাবি, এই টানেলের নীচে রেল আবাসনের জল নিষ্কাশনের জন্য নিকাশি ব্যবস্থা আছে। জল বের করার জন্য যে পাম্প বসানো আছে, তার ক্ষমতা কম। তাই যত বারই রেল কর্তৃপক্ষ পাম্পটি ঠিক করুন না কেন, অল্প দিনে আবার একই অবস্থা হয়ে যায়। তা ছাড়া নিয়মিত লরি থেকে বালি পড়ায় পাম্পে জল টানার সঙ্গে সঙ্গে বালিও টেনে নেয়। যার জেরে নর্দমার নাব্যতার সমস্যা মেটে না। তাই উড়ালপুলই স্থায়ী সমাধান বলে মনে করছেন তাঁরা। রেলের আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক বিশ্বনাথ মুর্মু অবশ্য জানান, উড়ালপুল করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। কারণ, উড়ালপুলের জন্য সংযোগকারী রাস্তার খরচ দেয় রাজ্য সরকার। তেমন প্রস্তাব এলে ভেবে দেখা হবে বলে জানান তিনি। |