|
|
|
|
দীপঙ্কর এ বার বলিউডে |
সিনেমায় তাঁর ‘লুক’য়ের মিল আছেপ্রণব মুখোপাধ্যায়-এর সঙ্গে। লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত। |
দীপঙ্কর দে আজকাল টুপি পরে ঘুরছেন।
কেন?
কলকাতাতে জম্পেশ ঠান্ডা পরেছে বলে নয়।
নতুন স্টাইল স্টেটমেন্টও নয়।
৬৯ বছরের ‘তরুণ’ দীপঙ্কর এ বার পাড়ি দিলেন বলিউডে। এত বছর টলিউডে অভিনয় করে ২০১৩তে তাঁর বলিউডে অভিষেক হচ্ছে।
আর এই সিনেমাটায় তাঁর রোলটা নাকি এমনই যে নিজের ভোল পাল্টে ফেলতে হচ্ছে। ইনদওরে শ্যুটিং করতে গিয়ে সোজা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এক পার্লারে। চুল রং করে একদম অন্য রূপ।
শ্যুটিং শেষে ফিরে আসেন কলকাতায়। সোমবার দিন আবার কলকাতার এক পার্লারে গিয়ে চুল আর ডাই করে ফেলেন। তবে সেই ‘লুক’ যাতে কেউ না দেখতে পায় সেই জন্য টুপির আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। যদিও তা লুকিয়ে রাখা যায়নি আনন্দplus-এর থেকে!
কী এমন সিনেমা, যে কারণে এই বয়সে এসে তিনি নিজেকে এতটা পাল্টে ফেলছেন?
দীপঙ্কর অবশ্য কোনও কথাই বলবেন না। কনট্রাক্টে এমনই বলা আছে। তবে বিশ্বস্ত সূত্রের খবর অনুযায়ী ছবির নাম ‘ইয়াংগিস্তান।’ পরিচালক সৈয়দ আহমেদ আফজল। এটাই তাঁর প্রথম ছবি।
প্রযোজক বাসু ভাগনানি। এর আগে তিনি ‘কুলি নম্বর ১’, ‘হিরো নম্বর ১’, ‘বিবি নম্বর ১’, ‘বড়ে মিঞা ছোটে মিঞা’, ‘মুঝে কুছ কহেনা হ্যয়’ ও ‘রহেনা হ্যয় তেরে দিল মে’র মতো সিনেমা প্রযোজনা করেছেন।
সিনেমাতে মুখ্য ভূমিকায় আছেন বাসুপুত্র জ্যাকি। ‘কল কিসনে দেখা হ্যায়’, ‘ফালতু’, ‘আজব গজব লভ’ আর ‘রংরেজ’য়ের মতো সিনেমা করেছেন জ্যাকি। তাঁর বিপরীতে রয়েছেন ‘ক্যায়া সুপার কুল হ্যায় হম’, ‘জয়ন্তভাই কি লভ স্টোরি’ ‘ইয়ামলা পাগলা দিওয়ানা টু’ খ্যাত নেহা শর্মা। দীপঙ্কর আছেন এক বাঙালি রাজনীতিবিদের চরিত্রে। কানাঘুষো এমনটাও শোনা যাচ্ছে যে তাঁর লুকের মিল পাওয়া যাচ্ছে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তবে ছবিতে দীপঙ্করের অভিনীত চরিত্রের নাম থাকছে শুভদীপ গঙ্গোপাধ্যায়। |
|
‘ইয়াংগিস্তান’ ছবির সেই লুক। |
ফিল্মের শ্যুটিংয়ের জন্য জ্যাকি আর নেহা গিয়েছিলেন জাপানে। দীপঙ্করকে অবশ্য সেখানে যেতে হয়নি। ‘ইয়াংগিস্তান’য়ের অফারটা তাঁর কাছে এসেছিল হঠাৎই। ফোনটা পেয়ে প্রথমে নাকি উনি ভেবেছিলেন যে এটা নিছকই রসিকতা। তার পর পরিচালক যখন এসএমএস করেন তখন দীপঙ্কর বোঝেন ব্যাপারটা আদৌ রসিকতা নয়।
মাস তিনেক আগে চিত্রনাট্য পাঠানো হয় তাঁকে। ইন্ডাস্ট্রির এক সূত্র জানাচ্ছে, ‘ইয়াংগিস্তান’য়ের ইউনিট ইন্টারনেটের মাধ্যমে দীপঙ্করের কথা জানতে পারে। হয়তো সত্যজিৎ রায়ের কোনও ছবি বা ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘আবহমান’ দেখেই দীপঙ্করের অভিনয়ের সঙ্গে তাঁদের পরিচিতি হয়। “পরিচালককে দীপঙ্কর বলেছিলেন চিত্রনাট্যের একটা দৃশ্য পাঠিয়ে দিতে যেখানে তাঁর সংলাপগুলো হিন্দিতে লেখা থাকবে। তাঁর সঙ্গে সহ-অভিনেতাদের হিন্দি সংলাপগুলো পাঠিয়ে দেওয়ার অনুরোধও করেন দীপঙ্কর। এর পর ফোনে পরিচালক-দীপঙ্করের কথা হয়। দীপঙ্কর হিন্দিতে সংলাপগুলো বলেন আর পরিচালক অন্যদের সংলাপগুলো হিন্দিতে বলে চলেন। লাইনগুলো বলার পর দেখা যায় যে দীপঙ্করের হিন্দি উচ্চারণ নিয়ে সমস্যা নেই,” বলছেন ওই সূত্র।
ইনদওর, মুম্বই আর দিল্লি এই তিন শহরে শ্যুটিং করছেন দীপঙ্কর। ইন্টারনেটে ইতিমধ্যে বলা হচ্ছে ‘ইয়াংগিস্তান’ মূলত একটা প্রেমের ছবি। যার পটভূমিতে রয়েছে এ দেশের রাজনীতি।
সেই সূত্র আরও জানাচ্ছেন এই ফিল্মে তিন বয়স্ক চরিত্র রয়েছে। একজন দক্ষিণ ভারতীয়, আর একজন লখনউ নিবাসী, আর অন্য জন বাঙালি। কেউ এক সময় অর্থমন্ত্রী ছিলেন, কেউ উপদেষ্টার ভূমিকায়। কিন্তু সরকার ভেঙে যাওয়ার পরে তাঁরা কেউই গদি ছাড়তে চান না। “এর সঙ্গে দেখানো হয়েছে এক পুরনো পলিটিশিয়ানও ছিলেন যিনি মারা গিয়েছেন। তাঁর ছেলেই হিরো। এর পোশাকআশাকের সঙ্গে রাহুল গাঁধীরও বেশ মিল রয়েছে। যদিও ছবিতে ওঁর নাম অভিমন্যু। সিনেমার আসল আইডিয়া হল এটা বোঝানো যে আমাদের দেশে কিছু বর্ষীয়ান রাজনীতিক থাকলেও দেশ চালাতে গেলে ইয়াং ব্লাডটা দরকার। সেই অল্পবয়সি রাজনীতিকের ভূমিকায় থাকছেন জ্যাকি,” বলছেন সেই সূত্র।
দক্ষিণী রাজনীতিকের ভূমিকায় থাকছেন ‘ম্যাড্রাস কাফে’ খ্যাত প্রকাশ বেলোয়াড়ি। লখনউভি রাজনীতিকের ভূমিকায় সমন্ত বহুগুণা নামে এক নাট্যব্যক্তিত্ব। আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে থাকছেন ফারুক শেখ।
এই সিনেমার বিষয়ে আনন্দplus দীপঙ্করকে প্রশ্ন করাতে উনি বলেন,“আমি দশ দিন পরে এই বিষয়ে কথা বলব। এখন নো কমেন্টস।” এত দিন কোনও হিন্দি সিনেমায় কেন অভিনয় করেননি? এ কথা জানতে চাইলে বলেন, “কোনও দিন সেই রকম কোনও অফার আসেনি। কেন আসেনি সেটা আমিও ঠিক বলতে পারব না।”
অতীতের দিকে না তাকিয়ে হয়তো এটাই বলা ভাল যে হয়তো সবুরে মেওয়া ফলেছে। |
|
|
|
|
|