শীতের মরসুমের শুরুতে কোচবিহার জেলার পিকনিক ‘স্পট’-এর তালিকা থেকে মধুপুরের হাঁসখাওয়ার নাম মুছে যেতে বসেছে। এ নিয়ে পর্যটকের একাংশের মধ্যেও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তার পরেও বেহাল পিকনিক স্পটটির হাল ফেরাতে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি কর্তাদের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।
পোড়ো বাড়ির চেহারা নিয়েছে বিশ্রাম ঘর। ঘরে প্লাস্টিকের কিছু গ্লাস পড়ে রয়েছে। চার দিকে অনেক খবরের কাগজ বসার আসনের কায়দায় পেতে রাখা। জঞ্জালের স্তূপ লাগোয়া শিশু উদ্যানে দোলনা, মই ভেঙেছে। আগাছায় ঢেকেছে শৌচাগার। মদ আর জুয়ার ঠেক বসে বলে অভিযোগ। দেখভালের অভাবে পিকনিক স্পটের এমন দশা। মধুপুর পঞ্চায়েতে প্রাক্তন সিপিএম প্রধান ধনমন্ত অধিকারী বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ওই পিকনিক স্পটটি চালুর পর ভাল সাড়া মেলে। বাইরের জেলা থেকেও বনভোজনকারীরা আসতেন। সংস্কার, দেখভালের অভাবে ধুঁকছে।” স্থানীয় আয়ুব আলির কথায়, “পরিকল্পনা মাফিক কাজ হলে এমন হত না।” |
১৯৯৮ সালে তোর্সা নদী লাগোয়া মধুপুরের হাঁসখাওয়ার ওই পিকনিক স্পট গড়ে তোলে পঞ্চায়েত সমিতি। নদী ভাঙনের আশঙ্কা এড়াতে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা খরচ করে ১৫০ মিটার বাঁধ দেওয়া হয়। তৈরি হয় পাকা বিশ্রাম ঘর। পানীয় জলের ব্যবস্থা থেকে শিশু উদ্যান, শৌচাগার করা হয়। দুই বছর আগে তোর্সার ভাঙনে কিছু এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়। পরিকাঠামো থাকলেও দেখভালের অভাবে এই প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থা। গত বছরেও কিছু বনভোজনকারী এলেও এ বছর এখনও কারও দেখা মেলেনি।
কোচবিহার ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সিপিএমের অন্নদা রায় বলেছেন, “নদী ভাঙনে পিকনিক স্পটের কিছু জমির ক্ষতি হওয়ায় আমরা আর নতুন করে সেখানে টাকা খরচের আর ঝুঁকি নিইনি।” ভাঙনের সমস্যা নিয়ে আগাম পরিকল্পনা না করে কেন বিপুল টাকা খরচ করা হল, বাসিন্দার একাংশ সে প্রশ্ন তুলেছেন।
অস্বস্তিতে পঞ্চায়েত সমিতি পদাধিকারীরা। কোচবিহার-২ পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি সিপিএমের অষ্টমী রায় বলেন, “আগে কী হয়েছে জানি না। বিশদে খোঁজখবর নিয়ে নতুন করে পিকনিক স্পটটি চালু করা যায় কি না তা দেখব।” মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মেঘনাদ রায় এলাকায় মদ, জুয়ার আসর বসার অভিযোগ মানতে চাননি। প্রধানের দাবি, “বাসিন্দারা চাইলে আমরা ফের স্পটটি চালুর ব্যাপারে ভাবব।” |