অযত্ন আর অবহেলায় বেহাল হয়ে পড়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বারোদুয়ারি চিল্ড্রেন্স ও ডিয়ার পার্ক।
চার পাশ ঢেকে আছে আগাছায়। পার্কে পর্যটকদের মনোরঞ্জনে লেকে ছিল বোটিংয়ের ব্যবস্থা। লেকের মাঝে আলোকিত ফোয়ারা। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নৌকা খারাপ। বন্ধ ফোয়ারাও। নষ্ট হয়ে গিয়েছে শিশুদের খেলার উপকরণ দোলনা, ঘূর্ণি। পার্কে ঢুকলে স্বাগত জানাত রংবেরঙের নানা পাখি ও বাদরের দল। পাখিদের খাঁচা ফাঁকা পড়ে। উধাও বাদর, খরগোশ। পড়ে রঙিন মাছেদের অ্যাকোরিয়াম। থাকার মধ্যে রয়েছে ২০টি হরিণ।
তিন বছর ধরে পার্কে পর্যটকদের আর দেখা মেলে না। চাঁচল মহকুমার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্রটি কার্যত বন্ধ হয়ে থাকায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। হরিণের খাবারের বন্দোবস্তে পৃথক বরাদ্দের জন্য সম্প্রতি বিধানসভায় সরব হন হরিশ্চন্দ্রপুরের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক তজমুল হোসেনও। বিধায়ক বলেন, “হরিণ অপুষ্টিতে ভুগছে। বিধানসভায় সরব হওয়ার পাশাপাশি বনমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” |
হরিশ্চন্দ্রপুর-২ বিডিও কৌশিক পাল বলেন, “হরিণের খাবার ও পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পৃথক বরাদ্দ চেয়ে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিচ্ছি। পঞ্চায়েত সমিতির তহবিলের টাকায় হরিণগুলির খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।” পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি তাজকেরা বিবিও বলেন, “যে ভাবেই হোক ফের পার্কটি চালু করতে হবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক চত্বরের মধ্যেই ২০০৩ সালে ২০ বিঘার জঙ্গল সাফ করে মনোরম পার্ক গড়ে তোলা হয়। অল্প দিনের মধ্যেই পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ৬টি হরিণ নিয়ে পার্ক চালু করা হলেও পরে তাদের সংখ্যা বেড়ে যায়। শুরু হয় বোটিং। ভিতরে রয়েছে অতিথি আবাস। শীতে পার্কে বনভোজনেরও হিড়িক পড়ে যেত। এ জন্য নির্দিষ্ট ছিল ৫০০ টাকা। এ ছাড়া পার্কে জনপ্রতি প্রবেশ-মূল্য ছিল ২ টাকা। সেই সব থেকে আয়ের পাশাপাশি নিজস্ব তহবিল থেকে পার্কের পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল পঞ্চায়েত সমিতির।
আগের কংগ্রেস বোর্ড পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে পার্কটি বেহাল হতে শুরু করে বলে অভিযোগ। হরিশ্চন্দ্রপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি কংগ্রেস নেতা আবুল কাশেম বলেন, “পৃথক বরাদ্দ না হলে পার্কের সামান্য আয়ে বছরের পর বছর ধরে খরচ জোগানো সম্ভব ছিল না। তাই আমাদের অযথা দোষারোপ করে লাভ নেই।” |