ব্রিগেড সমাবেশের দিন ঠিক করেও আদৌ তার অনুমতি পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বামেরা।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রিগেডে সমাবেশ করবেন ৩০ জানুয়ারি। তার দশ দিন বাদে ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের দিন ঠিক করল বামফ্রন্ট। কিন্তু নির্ধারিত দিনে সমাবেশ করার অনুমতি পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে বাম নেতৃত্ব চিন্তায় রয়েছেন। দু’ বার দিন ঠিক করার পরেও জানুয়ারি মাসে সিপিআইয়ের শহিদ মিনার সমাবেশের জন্য সেনা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়া যায়নি। ওই ঘটনা বাম নেতাদের চিন্তা আরও বাড়িয়েছে।
শহিদ মিনারে সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ায় সিপিআইয়ের রাজ্য নেতৃত্ব অভিযোগের আঙুল তুলেছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই। তাঁদের অভিযোগ, কলকাতা পুলিশের সঙ্গে কথা বলার পরেই সেনা কর্তৃপক্ষ শহিদ মিনার বা ব্রিগেডে সমাবেশের অনুমতি দেন। এ ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই কলকাতা পুলিশ সিপিআইয়ের সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। দলের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার বলেন, “আগে সেনা কর্তৃপক্ষ বললেন, ১৭ জানুয়ারি সভা করা যাবে না। ১০ জানুয়ারির আগে করতে হবে। ৯ জানুয়ারি আমরা সভা করতে চাইলাম। এখন ওঁরা বলছেন, তা-ও করা যাবে না। ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনও সভাই করা যাবে না!” এই পরিস্থিতিতে ১৭ জানুয়ারিতেই রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিআই। অবশ্য ওই সভার জন্য এখনও অনুমতি মেলেনি। যেমন ৮ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের নবান্ন অভিযান ও ধর্মতলায় সমাবেশের জন্যও এখনও কোনও অনুমতি মেলেনি। ওই সমাবেশে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রধান বক্তা। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এ দিন ব্যারাকপুরে বলেন, “নবান্ন অভিযানে যেখানে পুলিশ বাধা দেবে, সেখানেই দলীয় কর্মীরা বসে পড়বেন।”
এই পরিস্থিতিতে ব্রিগেড সমাবেশের সরকারি অনুমতি নিয়ে মঞ্জুবাবু চিন্তিত। আরএসপি-র মনোজ ভট্টাচার্য বলেন, “সরকার সমালোচনার ব্যাপারে অসহিষ্ণু। বামেদের জনসভার অনুমতি দিচ্ছে না। ব্রিগেডের ব্যাপারে কী হবে, জানি না!” এ দিন বামফ্রন্টের বৈঠকের পরে বিমানবাবু বলেন, “আমরা ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ করতে চাই। ওই দিন রবিবার। মানুষের অসুবিধা হবে না।”
বামেরা সভা করার জন্য কোনও হলের অনুমতি চাইতে গেলেও প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পথই আন্দোলনের জায়গা বলে মন্তব্য করেন বিমানবাবু। তিনি বলেন, “৩১ ডিসেম্বর প্রয়াত নেলসন ম্যান্ডেলার স্মরণসভা করবে রাজ্য বামফ্রন্ট। আমরা তা রাস্তাতেই করব।” আপাতত ঠিক হয়েছে, অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে ওই সভা করা হবে।
ব্রিগেড সমাবেশের আগে ৩ জানুয়ারি থেকে এক মাস ব্যাপী রাজ্য জুড়ে প্রচার চালাবে বামেরা। রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হবে। প্রচারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, সারদা-সহ বিভিন্ন লগ্নি সংস্থা কেলেঙ্কারি, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদের দুর্নীতি, টেট পরীক্ষার দুর্নীতি, জাতীয়-রাজ্য সড়কের বেহাল অবস্থা, নারী নির্যাতন, আধার কার্ডের সমস্যা ইত্যাদি তুলে ধরা হবে।
বিমানবাবু বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ে সকলের আধার কার্ড হওয়া সম্ভব নয়। ওই কার্ড না পাওয়া পর্যন্ত রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি বন্ধ করা যাবে না।” সভায় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন দে-র উপর নির্যাতনের প্রসঙ্গও ওঠে। ঠিক হয়েছে, বিমানবাবু-সহ বাম নেতৃত্ব ২ জানুয়ারি ধনেখালি যাবেন। |