মাধ্যমিকের টেস্টে পাশ করতে পারেনি ৭৮ জন ছাত্রী। তাদের পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে সোমবার মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ গার্লস হাই স্কুলে শিক্ষিকাদের আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা। বিকেলে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ উঠে যায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মানসী মুখোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “যারা ফেল করেছে তাদের পাশ করানোর প্রশ্নই ওঠে না।”
সোমবার অনুত্তীর্ণ ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা সকাল থেকেই স্কুলে ভিড় করতে শুরু করেন। প্রথমে তাঁরা প্রধান শিক্ষিকার কাছে গিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে জানান যে ফেল করা ছাত্রীদের পাশ করিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। দুপুর থেকে স্কুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অভিভাবকরা। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় স্কুলের মূল ফটকে। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ পুলিশ এসে তালা খুলে শিক্ষিকাদের স্কুল থেকে বের করে আনে। |
প্রধান শিক্ষিকা মানসী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২২৭ জন ছাত্রী মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছিল। তাদের মধ্যে মাত্র ৪৯ জন ছাত্রী সব বিষয়ে পাশ করেছে।” তিনি বলেন, “আমরা কোনও চাপের কাছেই নতি স্বীকার করব না।” স্কুল সূত্রে খবর, প্রতিবারই এই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার থাকে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশের উপরে। গত বছর পাশের হার কমে দাঁড়ায় ৭১ শতাংশে। সেই কারণে গত ছয় মাসে দু’বার স্কুলে অভিভাবকদের সভা ডাকা হয়। কিন্তু অভিভাবকদের উপস্থিতির হার ছিল সামান্য। সেখানে জানানো হয়, টেস্টে পাশ না করলে মাধ্যমিকে বসার অনুমতি দেওয়া হবে না। অনুত্তীর্ণ এক ছাত্রীর মা কল্পনা ঘোষ বলেন, “আমরা লেখাপড়া জানি না। দিনমজুরি করে সংসার চালিয়েও মেয়ের জন্য দু’জন গৃহশিক্ষক রেখেছিলাম। তারপরেও এমন কী করে হল বুঝতে পারছি না।”
স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক শিশির মণ্ডল বলেন, ‘‘যে ছাত্রীরা শূন্য পেয়েছে তারা তো পঞ্চম শ্রেণি থেকে এই স্কুলে পড়ছে। তাহলে এত দিন ধরে ওরা কী শিখল? শিক্ষিকারা এই দায় এড়াতে পারেন না। তবে পাশ ফেল নিয়ে শিক্ষিকারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিচালন সমিতি তাতে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না।’’
|