|
|
|
|
১০০ দিনের কাজের বহর দেখে মজুরি
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১৬ ডিসেম্বর |
আর কোনও ‘দাতব্য’ নয়। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে এ বার কাজের বহর দেখে তবেই মজুরি দেবে সরকার। স্রেফ উপস্থিতিই মজুরি সুনিশ্চিত করতে পারবে না শ্রমিকের!
অদূরে লোকসভা ভোট। তার আগে জাতীয় রোজগার নিশ্চয়তা প্রকল্পের প্রথম তফসিলে সংশোধন এনে এই নিয়ম চালু করে দেওয়ার ঘোষণা করল মনমোহন সিংহ সরকার। এ ব্যাপারে সবিস্তার জানাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ আজ বলেন, “অভিজ্ঞতা বলছে, বহু রাজ্যে শ্রমিকদের কোনও কাজ না দিয়ে স্রেফ উপস্থিতির ভিত্তিতে মজুরি দেওয়া হচ্ছে। অথচ এ তো কোনও দাতব্য বা নগদ হস্তান্তর প্রকল্প নয়।” তাঁর বক্তব্য,“ সব রাজ্যকে আজ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কাজ কতটা হয়েছে তা জরিপ করার পরেই যেন মজুরি দেওয়া হয়। ” জয়রাম এ-ও বলেছেন, “শ্রমিকদের মজুরি দিতে এক দিনও দেরি হলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীর বেতন থেকে আনুপাতিক হারে টাকা কেটে নেওয়া হবে। এই প্রকল্পে কারও ‘জব কার্ড’ থাকলেই বাড়িতে শৌচাগার তৈরির জন্য ১০ হাজার টাকা সহায়তা মিলবে।”
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের অনেক নেতাই মনে করেন ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের রূপায়ণই গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেসকে বৈতরণী পার করিয়েছিল। কিন্তু এ বার লোকসভা ভোটের আগে এই প্রকল্পের সমালোচনায় সরব অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, এই প্রকল্পের আওতায় কতটা স্থায়ী সম্পত্তি নির্মাণ হচ্ছে তার কোনও হিসাব নেই। সরকারি টাকায় মাটি কেটে রাস্তা উঁচু করা হচ্ছে। তা বর্ষার জলে ধুয়ে যাচ্ছে। পরের বছর ফের মাটি কেটে সেই রাস্তা উঁচু করা হচ্ছে। যার অর্থ, জনপ্রিয়তার জন্য শুধু খয়রাত করছে সরকার। যা দেশকে আরও আর্থিক সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেবে।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সেই সমালোচনার মুখে পড়েই প্রকল্প রূপায়ণের নিয়মে বদল আনতে সচেষ্ট মনমোহন-জয়রাম। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী আজ জানান, রোজগার নিশ্চয়তা প্রকল্পের আওতায় এ বার স্থায়ী সম্পদ তৈরির ওপর জোর দেওয়া হবে। ইন্দিরা আবাস যোজনার আওতায় বাড়ি নির্মাণ, স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠীর সংগঠনের জন্য বাড়ি নির্মাণ, গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ইটভাটা তৈরি, কৃষি পণ্য মজুতের জন্য ভাণ্ডার, সড়ক নির্মাণ ইত্যাদির মতো স্থায়ী সম্পদ তৈরি করতে এই প্রকল্পকে ব্যবহার করা হবে। উদাহরণ দিয়ে জয়রাম এও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে আলু, টম্যাটোর মতো কৃষিপণ্য মজুত ভাণ্ডার বিশেষ নেই। রাজ্য থেকে এ ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের জন্য বহু বার আবেদন করা হয়েছে। রাজ্য সরকার চাইলে এ বার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মজুরদের ওই ধরনের ভাণ্ডার নির্মাণের কাজে লাগাতে পারে।
তবে সমালোচনা এতে বন্ধ হচ্ছে না। অনেকের বক্তব্য, প্রকল্প শুরুর ৭ বছর পর নিয়মে কেন্দ্র নিয়মে যে সব বদল আনছে, তা গোড়াতেই করা উচিত ছিল। এর জবাবে জয়রাম অবশ্য বলেন, “শেখার শেষ নেই। কোনও কোনও বিষয় মানুষ দেখে শেখে, কোনওটি ঠেকে শেখে!” |
|
|
|
|
|