|
|
|
|
ভাবমূর্তি রাখতে মাফিয়াকে বহিষ্কার
স্বপন সরকার • পটনা
১৬ ডিসেম্বর |
দল এবং নিজের ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন রাখতে দলে নেওয়ার এক পক্ষ কালের মধ্যে এক ব্যক্তিকে বহিস্কার করল জেডিইউ। মুজফ্ফরপুরের ডাকসাইটে মাফিয়া চুন্নু ঠাকুর গত পয়লা ডিসেম্বর জেডিইউতে যোগ দেন। ঠিক ১৫ দিনের মাথায় তাঁকে দল থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিলেন স্বয়ং নীতীশ কুমার।
অতীতে এমন ঘটনার নজির বিশেষ নেই বলেই দলীয় সূত্রের খবর। আজ জনতা দরবারে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সাংবাদিকদের এই খবর দিয়ে বলেন, “চুন্নু ঠাকুরের দলে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আমি জানতে পেরে দল সভাপতি শরদ যাদবের সঙ্গে কথা বলি। না বুঝে কোনও নেতা হয়তো তাঁকে দলে নিয়ে এসেছেন। জানার পরে বুঝতে পারি, এটা ঠিক হয়নি। ভুল হয়েছিল। তা শোধরানোর জন্য সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
মুজফ্ফরপুরের এই চুন্নু ঠাকুর কোনও রাজনীতির সঙ্গে কোনও দিনই জড়িত ছিলেন না। রাজ্যে এই ব্যক্তির পরিচয় মাফিয়া হিসেবেই। পুলিশ সূত্রে খবর, মুজফ্ফরপুরের চুন্নু ঠাকুরের বিরুদ্ধে খুন, তোলা আদায়, জমি কব্জা করার মতো ২০টি মামলা ঝুলে আছে।
চুন্নু ঠাকুর দলে যোগ দেওয়ার সময় বলেছিলেন, “বিভিন্ন মামলায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। চক্রান্ত করে আমার ভাবমূর্তি খারাপ করতেই এক শ্রেণির মানুষ এই কাজ করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে আদালত আমাকে ক্লিনচিট দিয়েছে।”
মামলার নিষ্পত্তি করতেই ক্ষমতাসীন দলে যোগ দিলেন কিনা এর উত্তরে তখন চুন্নু বলেছিলেন, “তা কেন? মামলা থেকে রেহাই পেতে হলে আরও আগে দলে যোগ দিতাম।” জেডিইউয়ে যোগ দেওয়ার কারণ হিসেবে তাঁর বক্তব্য ছিল: নীতীশ কুমারের সময়ে রাজ্যে যে উন্নয়ন হয়েছে তা কংগ্রেস বা আরজেডির শাসনকালে হয়নি। সমাজের মঙ্গলে কাজ করতে হলে নীতীশ কুমারের সঙ্গে থাকাই ঠিক।
বহিস্কারের পরে চুন্নু ঠাকুরের আজকের প্রতিক্রিয়া ভিন্ন, “আমি জানি না মুখ্যমন্ত্রীকে আমার বিরুদ্ধে কে কী বলেছেন। দলের লিখিত সিদ্ধান্ত আমার কাছে এখনও আসেনি। তবে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গেই আমি আছি।”
দলের সদস্য পদ ফিরিয়ে নেওয়ার পরে কী ভাবে দলে থাকবেন তার উত্তরে চুন্নু বলেন, “দলের এক সাধারণ কর্মী হিসেবেই থাকব। সেই অনুযায়ী কাজ করব। গণতন্ত্রে এটা করা যায়।”
নিজের প্রশাসনকে পরিচ্ছন্ন রাখতে নীতীশ একদিকে যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক আধিকারিকদের শাস্তি দিচ্ছেন, তখন চুন্নুর মতো লোকেরা দলে আসতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, এরা দলে থাকলে মুখ্যমন্ত্রী কী ভাবে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়বেন? দলীয় সূত্রে খবর, এরপর দল থেকে বিভিন্ন স্তরে খোঁজ খবর করা হয়। দু’দিন আগে মুজফ্ফরপুরের নেতাদের পটনায় ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে চুন্নু ঠাকুরের বিষয়ে আলোচনা হয়। এরপরেই ঠিক হয় এই ধরনের লোককে দলে সামিল করা যাবে না।
শিয়রে লোকসভা নির্বাচন। দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে এমন কড়া সিদ্ধান্ত নিতে নীতীশ কুমার যে পিছপা হবেন না সেই বার্তা দলের সর্বস্তরে দেওয়া হয়েছে। |
|
|
|
|
|