শর্ট স্ট্রিট
হামলার ছক কষেছিলেন নুরই, দাবি পুলিশের
র্ট স্ট্রিটের বিতর্কিত জমির দখলের পরিকল্পনা শেক্সপিয়র সরণি থানার তৎকালীন সাব ইনস্পেক্টর ধৃত নুর আলিই ছকে দিয়েছিলেন বলে লালবাজারের গোয়েন্দারা সোমবার দাবি করেছেন।
গোয়েন্দাদের দাবি, নুর আলির পরিকল্পনা মতোই ১১ নভেম্বর অভিযান হয় ভোরবেলায়। তাঁর পরামর্শেই অভিযানকারীরা কেউই সঙ্গে করে আগ্নেয়াস্ত্র আনেননি বলে পুলিশের দাবি। সে দিন খালি হাতে বলপ্রয়োগ করে দখলদারদের উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল বলে তদন্তকারীরা ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছেন।
তদন্তকারীদের অভিযোগ, অভিযানের মূল পরিকল্পনা তৈরির সময়ে নুর আলির সঙ্গে ছিলেন শর্ট স্ট্রিট মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত পিনাকেশ দত্ত। ধৃত আইনজীবী সামির রিয়াজই পিনাকেশকে নুরের সঙ্গে বসে এই পরিকল্পনা ছকার নির্দেশ দেন বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
ভোরে কেন অভিযান চালানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন নুর আলি? গোয়েন্দাদের দাবি, ভোরে শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকায় টহল দেওয়ার জন্য একটি মাত্র মোটরবাইক থাকে। দুই পুলিশকর্মী সেই মোটরসাইকেলে চেপে শেক্সপিয়র সরণি ও জওহরলাল নেহরু রোডের মোড় পাহারা দেন। ওই দুই পুলিশ কর্মী কখন কোথায় থাকবেন, তা নুর আলিই বলে দিয়েছিলেন হামলাকারীদের।
খালি হতে বলপ্রয়োগ করে উৎখাত করার পরিকল্পনা কেন ছকা হয়েছিল? গোয়েন্দারা বলছেন, খালি হাতে উচ্ছেদ অভিযান হলে খুব একটা গোলমাল হবে না। থানার পুলিশও টের পাবে না কিছু। পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে থাকা পুলিশ কর্মীদের কাছেও খবর পৌঁছবে না। মমতা অগ্রবাল এবং তাঁর সঙ্গী যে এই ভাবে গুলি চালিয়ে দেবেন তা ভাবতে পারেননি নুর। গুলি চালানোর ঘটনা না ঘটলে নিঃশব্দে ৯এ শর্ট স্ট্রিটের বিতর্কিত জমি থেকে দখলদারদের হটানো যেত বলেই মত তদন্তকারীদের।
গোয়েন্দারা বলছেন, এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর শর্ট স্ট্রিটের ওই বিতর্কিত জমিতে হামলা হয়েছিল। হামলাকারীরা সেখান থেকে একটি রিভলভার লুঠ করেছিল। তার পরেও ওই বাড়িতে যে আর কোনও অস্ত্র রয়েছে তার খবর নুরের কাছে ছিল না। তাই কেবলমাত্র লোহার রড এবং লাঠি নিয়েই ১১ নভেম্বর হামলাকারীরা ওই বাড়িতে চড়াও হয়েছিলেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
হামলাকারীদের সঙ্গে কয়েক জন মহিলাও ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। তদন্তকারীরা বলছেন, মমতা অগ্রবালকে বলপ্রয়োগ করে উৎখাত করার জন্যই মহিলা নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগের পরামর্শও নুরই দিয়েছিলেন। গোয়েন্দাদের দাবি, সব পরামর্শই নুর দিয়েছিলেন মোটা টাকার বিনিময়ে।
শর্ট স্ট্রিট কাণ্ডে অর্থবল ব্যবহার করা হয়েছে বলে সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে সরকারি আইনজীবী কৃষ্ণচন্দ্র দাস মন্তব্য করেন। ওই আইনজীবী আদালতে আরও জানান, সেই টাকার উৎস খুঁজতে চান তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা। তবে, গোয়েন্দারা এ দিন জানান, অভিযুক্ত নুর আলির বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাঁর বাড়িতে থেকে আয় বহির্ভূত কোনও অর্থ উদ্ধার হয়নি।
এ দিন শর্ট স্ট্রিট মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তথা আইনজীবী সামির রিয়াজকে ফের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী। ব্যাঙ্কশাল আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বরূপ শেঠকে সরকারি আইনজীবী জানান, অভিযুক্ত আরও জেরা করে সেই টাকার উৎস খুঁজতে চাইছে পুলিশ। সরকারি আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক অভিযুক্ত সামিরকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
সরকারি আইনজীবী আদালতে আরও জানান, শর্ট স্ট্রিটের বিতর্কিত জমি থেকে দখলদারকে উচ্ছেদ করতে কয়েক লক্ষ টাকা বিভিন্ন ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে বলে অন্যতম অভিযুক্ত পিনাকেশ দত্ত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছেন।
আদালতে সরকারি আইনজীবী বলেন, পিনাকেশ তাঁর জবানবন্দিতে বলেছেন, সেই টাকা তিনি পেয়েছিলেন অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত পরাগ মজমুদারের কাছ থেকে। পিনাকেশ আরও জানান, সেই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে ভাগ বাঁটোয়ারা করার জন্য তিনি অভিযুক্ত আইনজীবী সামির রিয়াজকে দায়িত্ব দেন।
সরকারি আইনজীবী জানান, সামিরকে ফের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নুরের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে জানার চেষ্টা হবে, আর কোনও পুলিশ অফিসার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন কি না। থাকলে কী ভাবে লিপ্ত ছিলেন। আরও জানার চেষ্টা হবে, যে টাকা বিলি হয়েছে বলে পিনাকেশ তাঁর গোপন জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, তার উৎস কী।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.