দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লিই গত কয়েক দিন ধরে বন্ধ দুর্গাপুরের বীরভানপুর শ্মশানে। এর ফলে এক দিকে যেমন সুযোগ বুঝে কাঠ ব্যবসায়ীরা হাঁকছেন চড়া দাম, তেমনই শবদাহের কটূ গন্ধে তাঁরা বিপাকে পড়ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় আশিসনগর কলোনি ও বিদ্যাসাগর কলোনি লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে এই শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বৈদ্যুতিক চুল্লি সরবরাহের বরাত পাওয়া নিয়ে মামলা-পাল্টা মামলার জেরে তা পিছিয়ে যেতে থাকে। শেষে ২০০৫ সালে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইন্টিগ্রেটেড ডেভলপমেন্ট অফ স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম টাউনস’ প্রকল্পের অধীনে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণ হয়। ২০০৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন করেন তৎকালীন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এই শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বন্ধ। ফলে, মৃতদেহ পোড়ানো হচ্ছে কাঠের চিতায়। |
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অতীতে শবদাহের গন্ধে জেরবার হয়ে তাঁরা পুরসভার কাছে বৈদ্যুতিক চুল্লির জন্য দরবার করেছিলেন।
এখন আবার সেই সমস্যায় পড়তে হওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লেশ্বর মণ্ডলের কথায়, “আগে এ ভাবেই দাহ করা হত। কিন্তু এখন ছেলেমেয়েরা এই গন্ধ সহ্য করতে পারছে না।” প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক শবযাত্রীর অভিযোগ, “মওকা বুঝে কাঠ ব্যবসায়ীরা দ্বিগুণ-তিন গুণ দাম নিচ্ছেন। নিরুপায় হয়ে তা-ই কিনতে হচ্ছে।” তিনি জানান, শ্মশানের গেটে পুরসভার তরফে একটি নোটিস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্যত্র কোথাও এ ব্যাপারে প্রচার না থাকায় মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে একেবারে বিপাকে পড়ছেন শবযাত্রীরা।
শ্মশান পরিচালন কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি চুল্লির একটি নিয়মিত ব্যবহার হয়। অন্যটি ‘আপৎকালীন’ ব্যবস্থা হিসাবে রাখা থাকে। কিন্তু চুল্লির খুব কাছে মোটর থাকায় অতিরিক্ত তাপে চালু চুল্লির মোটরটি মাঝে মাঝেই বিকল হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। পুরসভার কাছে বিষয়টি নিয়ে দরবার করা হয়েছিল। পুরসভার তরফে মোটর দু’টি স্থানান্তরের কাজ শুরু হয়েছে দিন কয়েক আগে। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, তৎপরতার সঙ্গে কাজ চলছে। তা প্রায় শেষ দিকে। আজ, মঙ্গলবার থেকে ফের বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। |