স্নাতকোত্তরের সমতুল্য ডিপ্লোম্যাট ইন ন্যাশানাল বোর্ড (ডিএনবি) কোর্স আসানসোল জেলা হাসপাতালে চালু করা হবে বলে জানালেন এই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি জানিয়েছেন, আপাতত এমবিবিএস উত্তীর্ণেরাই এই কোর্সে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন। পাঠ্যক্রমে থাকবে মেডিসিন সার্জারি ও স্ত্রীরোগ। শনিবার হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে মন্ত্রী এ কথা ঘোষণা করেন। বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আসানসোলের মহকুমাশাসক তথা রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অমিতাভ দাস, আসানসোল পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও স্থানীয় কাউন্সিলার শিবদাস চট্টোপাধ্যায়।
তবে, নতুন পাঠক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নিলেও মহকুমা থেকে জেলা স্তরে উন্নীত এই হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মলয়বাবু। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মার্চ মাসে এই হাসপাতালকে মহকুমা থেকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। এর পরে হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেয় রাজ্য সরকার। হাসপাতাল চত্বরে একটি বিদ্যুৎ সাব স্টেশন নির্মাণের জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। জানুয়ারি মাসে ব্লাড ব্যাঙ্কের জন্য দোতলা বাড়ি তৈরি, পৃথক সদ্যোজাত ইউনিট তৈরি, মহিলা শল্য বিভাগের সংস্কার, প্রসূতিদের পরামর্শের জন্য পৃথক দিশা হেলথ ডেস্ক-সহ সামগ্রিকভাবে হাসপাতালের সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল আরও ৪৮ লক্ষ টাকা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দিশা হেল্থ ডেস্ক তৈরি ছাড়া অন্য কোনও কাজ শুরু হয়নি। হাসপাতালে দীর্ঘদিন কোনও চামড়া ও দাঁতের চিকিৎসক নেই।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মন্ত্রী এ দিনের বৈঠকে এই নিয়ে পূর্ত দফতরের প্রতিনিধিদের সামনে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। ট্রমা সেন্টারের কাজও দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই বৈঠকে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। এই ব্লাড ব্যাঙ্কে বেশ কিছু দিন ধরেই পর্যাপ্ত কিটের অভাব চলছে। বৈঠকে উপস্থিত রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্যরা অভিযোগ করেন, বর্ধমান আরবিটিসি কেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত কিট সরবরাহ না হওয়াতেই এই সমস্যা। বৃহস্পতিবার, হাসপাতালের চিকিৎসক শ্রীকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় এক রোগীকে বাঁচানোর জন্য রক্ত দিয়েছেন বলেও মন্ত্রীকে জানানো হয়। বৈঠকে হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস মন্ত্রীকে জানান, ট্রমা সেন্টারে লিফ্ট বসানোর কোনও ব্যবস্থা রাখা হয়নি। পূর্ত দফতরের প্রতিনিধির কাছে মন্ত্রী এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ট্রমা সেন্টার যেহেতু তিন তলা করা হচ্ছে না তাই লিফট বসানোর জায়গা রাখা হয়নি। মলয়বাবু রোগীদের কথা ভেবে ট্রমা সেন্টারে লিফট বসানোর নির্দেশ দেন।
নিখিলবাবু বলেন, “মন্ত্রীর উদ্যোগে আমরা খুশি। ১৭ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য ভবনে আমরা রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকের প্রস্তাব ও আলোচনাগুলি বলব। উনি যে কোর্স চালু করার কথা বলেছেন, সেটি খুব শীঘ্রই চালু হবে।” বৈঠকে উপস্থিত পুরকর্তারা অবশ্য এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। |