মাটিগাড়া ব্লক কংগ্রেসের কয়েকজন নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা দল ছাড়তে পারেন বলে শুরু হয়েছে জল্পনা। শিলিগুড়ি মহকুমার কংগ্রেস সূত্রের খবর, জেলা নেতৃত্বের একাংশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে মাটিগাড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি নান্টু বিশ্বাস নিজেও দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সব ঠিক থাকলে চলতি মাসেই দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে মাটিগাড়ার কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের একাংশ তৃণমূলে যোগ দেবেন। তবে নান্টুবাবু খোলসা করে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেছেন, “অনেক ব্যাপার আছে। অনেক ঘটনা রয়েছে। যথাসময়ে সব বলব।”
কংগ্রেস সূত্রে খবর, নান্টুবাবুর সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগও হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেবের কাছে চিঠি মারফত নান্টুবাবুর বার্তাও পৌঁছে গিয়েছে বলে দল সূত্রের খবর। গৌতমবাবু জানান, নান্টুবাবু-সহ মাটিগাড়ার কংগ্রেসের অনেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল হতে চান। গৌতমবাবু বলেন, “নান্টুবাবুদের তরফে একটি চিঠি পেয়েছি। সব ঠিক থাকলে সম্ভবত এই মাসেই মাটিগাড়ার কংগ্রেসের অনেকে তৃণমূলে যোগ দেবেন।” এর পরেই গৌতমবাবুর সংযোজন, “সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস মহকুমা পরিষদে স্থায়ী সমিতি দখল করেনি বলে দলের অনেকেই ক্ষুব্ধ। তাঁরা কংগ্রেস ও সিপিএম একজোট হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগও করেছেন। কংগ্রেস-সিপিএম আঁতাত যাঁরা মেনে নিতে পারছেন না, তাঁরা উন্নয়নের স্বার্থেই তৃণমূলে সামিল হবেন।” উপরন্তু, গৌতমবাবুর কটাক্ষ, “কংগ্রেসের মাটিগাড়ার কয়েকজন নেতা তো মনে করছেন, সিপিএমই তাঁদের দল চালাচ্ছে।” প্রসঙ্গত, বর্তমানে মাটিগাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় কংগ্রেসের প্রভাব রয়েছে। নান্টুবাবুরা সামিল হলে রাতারাতি গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ অনেক এলাকায় তৃণমূলের প্রভাব বাড়বে বলে দলের নেতারা মনে করেন।
জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শঙ্কর মালাকার নান্টুবাবুর দল ছেড়ে যেতেই পারেন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “নান্টু বিশ্বাস দলের কাছে কোনও ইস্তফাপত্র দেননি। সুতরাং এ নিয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে কেউ দল ছেড়ে যেতে চাইলে আমার কিছু বলার নেই।” জেলা কংগ্রেসের নেতাদের একাংশ অবশ্য জানান, অতীতেও নান্টুবাবু দল ছাড়বেন বলে শোনা গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দল ছাড়েননি তিনি। জেলা কংগ্রেসের একজন শীর্ষ নেতা জানান, অনেক সময়ে দল ছাড়ার হুমকি দিয়ে দর কষাকষি চালানোর নজিরও কিছু রয়েছে। এ ক্ষেত্রে তেমন কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে না কি নান্টুবাবু ও তাঁর অনুগামীরা তৃণমূলে যোগ দেন তা নিয়ে এখন দুই দলের অন্দরে চলছে নানা জল্পনা। |