ডুয়ার্সে পর্যটনের সুলুক দেবে বিশেষ সেল
ডুয়ার্সে পর্যটনের সমস্ত তথ্য একত্রিত করতে পৃথক পর্যটন সেল খুলতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। এ নিয়ে ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে প্রশাসন। একটি ওয়েবসাইটে সমস্ত তথ্য রাখা হবে। তার মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকেই বুকিংয়ের সুবিধে মিলবে।
ডুয়ার্সে পর্যটনের সরকারি তথ্য বলতে, জেলার ১২টি সরকারি অতিথি নিবাসের যোগাযোগের নম্বর, আর ১৭টি অতি পরিচিত পর্যটন কেন্দ্রের সম্পর্কে কয়েক লাইনের অতি সংক্ষিপ্ত বিবরণ। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইট ঘাঁটলে আর থেকে বেশি তথ্য মিলবে না। কেন? কারণ, প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, জেলা প্রশাসনের কাছেও পর্যটন নিয়ে এর থেকে বেশি তথ্য একসঙ্গে নেই। কতগুলি গাড়ি বাণিজ্যিকভাবে পর্যটনে ব্যবহৃত হয়, অথবা জেলায় কতজন স্বীকৃত ট্যুর অপারেটর রয়েছেন তাও জানে না প্রশাসন। বেশ কয়েক বছর ধরে জলপাইগুড়ি জেলা বিশেষত ডুয়ার্সের পর্যটন নিয়ে বারবার সরকারি স্তরে আলোচনা হলেও, প্রশাসনের নিজস্ব কোনও পর্যটন সেল-ও এতদিন ছিল না বলে ট্যুর অপারেটরদের অভিযোগ।
মাস দু’য়েক আগে জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের দফতরে পৃথক পর্যটন সেল খোলা হয়েছে। শুরু হয়েছে পর্যটন নিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজও। তাতেও হোঁচট খেতে হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে। জেলায় মোট কতগুলি বেসরকারি রিসর্ট রয়েছে, সেখানে সর্বোচ্চ কত জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে, কত ট্যুর অপারেটর জেলায় কাজ করছেন, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য জেলা প্রশাসনের কোনও শাখা থেকেই পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। তারপরেই বেসরকারি ট্যুর অপারেটরদের নিয়ে বৈঠকে বসে জেলা প্রশাসন। বৈঠকে স্থির হয়ে প্রশাসন এবং বেসরকারি সংস্থাগুলি যৌথভাবে ওই তথ্য সংগ্রহ করবে। শুধুমাত্র ডুয়ার্সের পর্যটন নিয়ে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে তথ্যগুলিকে দেওয়া হবে। যাতে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে বসেই শুধুমাত্র মাউসের ক্লিকে ডুয়ার্সের পর্যটন সম্পর্কে জানা এবং রিসর্ট এবং গাড়ি ‘বুকিং’ করতে পারবেন যে কেউ। যার ফলে, স্টেশনে বা বিমানবন্দরে নামার পর গাড়ি জোগাড় করার সমস্যাতেও পড়তে হবে না।
এত দিন ডুয়ার্সের পর্যটন সংক্রান্ত সব তথ্য একত্রিত না থাকায়, সে ভাবে পর্যটন পরিকল্পনাও করা সম্ভব হয়নি বলে ট্যুর অপারেটরদের একাংশের অভিযোগ। সে কারণেই ভিন রাজ্য বা বিদেশের পর্যটকদের ডুয়ার্সে আনা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ। ‘পেশাদারিত্বের’ অভাবেই কী ভাবে ডুয়ার্সে আসবেন, গাড়ি কোথায় পাবেন তার কোনও হদিসও সরকারি ভাবে দিতে পারা যায়নি বলে সরকারি সূত্রেই মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে জেলাশাসকের দায়িত্বে এসেছেন পৃথা সরকার। তিনি দীর্ঘদিন রাজ্য সরকারের পর্যটন দফতরের দায়িত্বেও ছিলেন। রাজ্য সরকার সূত্রের খবর, ডুয়ার্সের পর্যটন নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা করা এবং রূপায়ণের কারণেই সরকারের ওই সিদ্ধান্ত। পৃথাদেবী বলেন, “এই খামতিটাই কাটাতে চাইছি। ডুয়ার্সের একটা নিজস্ব ব্র্যান্ডিং করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার জন্য প্রথম যেটা প্রয়োজন তা হল, আগ্রহী পর্যটকদের কাছে ডুয়ার্সের সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া, কী ধরনের সুবিধে এখানে রয়েছে, তা জানানো সেটাই করা হচ্ছে।” তবে, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা অগুন্তি পর্যটন কেন্দ্রে যাতায়াত, প্রয়োজনীয় ন্যুনতম পরিকাঠামো না গড়ে দিলে ভিনরাজ্য বা বিদেশের পর্যটকদের কতটা টেনে আনা যাবে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন ট্যুর অপারেটরেরা। ট্যুর অপারেটর সংগঠনের সদস্য ভাস্কর দাস বলেন, “পরিকাঠামো ছাড়া পর্যটন উন্নয়ন সম্ভব নয়, তবে প্রশাসন যে কাজ শুরু করেছে তাতে আমরা আশাবাদী।” আরেক ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যালের কথায়, “জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন সব তথ্যকে একত্রিত করার যে চেষ্টা শুরু করেছে তাতে যথেষ্ট আশার কারণ রয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের উদ্যোগে বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও সামিল করায়, একটা পেশাদারি মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.