নিরাপত্তার অভাব, বন্ধ হল নিউ ডুয়ার্স চা বাগান
ন্ধ হয়ে গেল নিউ ডুয়ার্স চা বাগান। শনিবার রাতে বাগান কর্তৃপক্ষ ‘সাসপেনশন অব ওয়াকের্র’ নোটিশ বাগানের গেটে ঝুলিয়ে দিয়েছেন। গাছ ছাঁটার কাজ না করায় ৬ শ্রমিককে আংশিক ভাবে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া, তার পাল্টা ধারাল অস্ত্র নিয়ে ম্যানেজারকে হামলা করার অভিযোগে শুক্রবার থেকে বাগানে শ্রমিক-মালিক অসন্তোষ তৈরি হয়। তার জেরেই নিরাপত্তার অভাবের কারণ দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলে নোটিশে উল্লেখ্য করা হয়েছে।
রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত ডুয়ার্সের নিউ ডুয়ার্স চা বাগান বন্ধ হওয়ার ঘটনা জানতে পারেন শ্রমিকরা। বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিউ ডুয়ার্সের ১৭৫৮ জন শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম আধিকারিক মহম্মদ রিজওয়ান বলেন, “চা গাছ ছাঁটার ঘটনা নিয়ে ম্যানেজারকে হামলার চেষ্টার অভিযোগে কর্তৃপক্ষ ওই বাগান বন্ধ করেছে বলে শুনেছি। দ্রুত বাগান চালু করার বিষয়ে বৈঠক ডাকব।”
ভারত সরকার নিয়ন্ত্রিত অ্যান্ড্রু ইউলের ডুয়ার্সে চারটি বাগান রয়েছে নিউ ডুয়ার্স চা বাগান যার মধ্যে একটি। ২০০২ সাল থেকে এক দশক ধরে চা শিল্পে মন্দা দশা চলাকালীন সময় ডুয়ার্সের বহু বাগান বন্ধ হলেও দেড়’শ বছরের পুরনো অ্যান্ড্রু ইউলের বাগানগুলি কখনও বন্ধ হয়নি। অনান্য বাগান কর্তৃপক্ষ নিজেদের সঙ্গে শ্রমিকদের দূরত্ব বজায় রাখার পুরনো প্রথা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য শ্রমিকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে খেলাধুলা সহ নানান সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার উদাহরণ সৃষ্টি করলেও শ্রমিক অসন্তোষে ওই গোষ্ঠীর একটি বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সম্পর্কের নিবিড়তা নিয়ে রীতিমত প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে চা শিল্প মহলে।
বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন ধরে নিউ ডুয়ার্স বাগানে শীতকালীন গাছ ছাঁটার কাজ চলছিল। গত শুক্রবার গাছ ছাটাই ঠিক মত হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে বাগানের ম্যানেজারের সঙ্গে কয়েকজন শ্রমিকের বচসা বাধে। সে সময় কয়েক জন ম্যানেজারকে ছুঁড়ি দিয়ে হামলা করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ম্যানেজার ছয় জন শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। বিষয়টি বানারহাট থানায় জানানো হয়। শনিবার ওই ছয় জনকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে ৩০ জন শ্রমিক ধারালো অস্ত্র নিয়ে ম্যানেজারের বাংলোর সামনে দাড়িয়ে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। শনিবার বাগানে পুলিশ নজরদারি চালায়। অ্যান্ড্রু ইউলের অধিকর্তা সুনীল মুন্সি বলেন, “আমরা যে ভাবে শ্রমিকদের সঙ্গে মিশে কাজ করি তা নজিরবিহীন। সে সম্পর্কের জন্য ডুয়ার্সের বাকি তিন বাগানে খুব ভাল ভাবে কাজ হচ্ছে। নিউ ডুয়ার্সের মুষ্টিমেয় কয়েকজন শ্রমিক কারও কথা শুনছেন না। তাঁরাই ম্যানেজারের উপর হামলা চালায়। বাগান বন্ধ ছাড়া আমাদের হাতে কোনও বিকল্প উপায় ছিল না।”
চা শ্রমিক সংগঠন এনইউপিডবলুর নেতা দিলীপ দর্জি বলেন, “যে ভাবে বাগান বন্ধ করে ম্যানেজার চলে গিয়েছেন তা মানা যায় না। বিষয়টি নিয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা করতে পারতেন। এ ভাবে বাগান ছেড়ে যাওয়ায় আমরাও থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাব।” সিটুর জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক জিয়াউল আলম বলেন, “বাগান বন্ধ করে চলে যাওয়ার ঘটনা এখন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওদের তিনটি বাগানে ভাল কাজ হচ্ছে। এই বাগানে শ্রমিকদের উপর অত্যধিক চাপ দেওয়া হচ্ছিল তবে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা না করে বাগান বন্ধ করার ঘটনা মানা যায় না।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.