দলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রীর সভায় সেই সংগঠনেরই প্রাক্তন জেলা সভাপতির অনুপস্থিতিকে ঘিরে ফের বাঁকুড়ায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
রবিবার বড়জোড়া হাইস্কুলে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সভায় যোগ দেন সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন। কিন্তু, সভায় আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপনেত্রী অলকা সেন মজুমদার উপস্থিত না থাকায় দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ হন দোলাদেবী। তিনি বলেন, “সংগঠনের সভায় উপস্থিত নেই জেলার প্রাক্তন সভাপতি অলকা। দলীয় ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ার উপ-পুরপ্রধান থাকাকালীন ২০১২ সালের জুলাইয়ে পুরপ্রধান শম্পা দরিপার বিরুদ্ধে তৃণমূল ও কংগ্রেস কাউন্সিলরদের একাংশকে নিয়ে অনাস্থা এনেছিলেন অলকাদেবী। ভেোটাভুটিতে হেরেও যান শম্পাদেবী। যদিও পরবর্তী কালে দলের হস্তক্ষেপে নিজের পদেই বহাল ছিলেন তিনি।
ওই কাণ্ডের পরেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরাগভাজন হন অলকাদেবী। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতির পদ থেকে তাঁকে রাতারাতি সরিয়ে ওই পদে শালতোড়ার বিধায়ক স্বপন বাউরিকে বসানো হয়। অন্য দিকে, নতুন করে গড়া হবে জানিয়ে বাঁকুড়ার পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিলও (সিআইসি) ভেঙে দেন শম্পাদেবী। যার ফলে উপ-পুরপ্রধান পদটিও খোওয়াতে হয় অলকাদেবীকে। অনাস্থার পরে শম্পাদেবী ফের পুরসভার চেয়ারম্যান রূপে ফিরে আসার পর থেকে বাঁকুড়া পুরসভাতেও কার্যত দেখা মেলে না প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানের। এ দিনের সভায় কেন তিনি গরহাজির ছিলেন, সে প্রশ্নের জবাবে অলকাদেবী বলেন, “বাঁকুড়া বইমেলার জরুরি বৈঠকে আমাকে যেতে হয়েছিল। তাই সভায় যেতে পারিনি। দোলাদেবীকে আমি সে কথা জানিয়েওছি। তার পরেও কেন উনি আমার বিরুদ্ধে রাগ প্রকাশ করলেন, তা বুঝতে পারছি না।”
এ দিনের সভায় দোলাদেবী বলেন, “আমাদের সংগঠনে প্রত্যেক জেলায় শুধু জেলা সভাপতি ছাড়া আর কোনও পদ নেই। রেজিস্ট্রেশন ও দলীয় অনুমতি না থাকলে কোনও পার্টি অফিসকে আইএনটিটিইউসি-র পার্টি অফিস হিসেবেও গণ্য করা হবে না।” সভায় উপস্থিত সংগঠনের সদস্য-সমর্থকদের প্রতি তাঁর হুঁশিয়ারি, “বিল, কুপন ছাপিয়ে আইএনটিটিইউসি-র নামে চাঁদা তোলা চলবে না। কারখানায় কোনও ধরনের বন্ধ বা ধর্মঘট করা যাবে না।” শ্রমিকদের দাবি নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করে নেওয়ার নির্দেশও দোলাদেবী দিয়েছেন। বাঁকুড়া জেলায় স্পঞ্জ আয়রন কারখানার কথা মাথায় রেখে তিনি জানান, ওই সব কারখানার শ্রমিকদের নির্দিষ্ট মজুরি করার প্রক্রিয়া চলছে। এক্ষেত্রে শ্রমিকপক্ষ, শ্রম দফতর ও মালিকপক্ষের মধ্যে আলোচনা করে বেতন কাঠামো নির্দিষ্ট করা হবে। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি স্বপন বাউরি বলেন, “দোলাদেবীর দেখানো রাস্তাতেই আমরা চলব, সংগঠনের পদ ভাঙিয়ে কেউ অপকর্ম করে করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।” |