খাতায়-কলমে হয়ে গিয়ে গিয়েছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। সংশ্লিষ্ট রাস্তার জন্য বরাদ্দ টাকাও খরচ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, রাস্তা সেই তিমিরেই!
বছরে একশো দিন কাজের প্রকল্পে সংস্কার হওয়া একটি রাস্তার কাজ নিয়ে তদন্তের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন পুরুলিয়ার হুড়া ব্লকের কুলগোড়া গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, খাতায়কলমে দেখানো হয়েছে মোরাম দিয়ে কুলগোড়া গ্রামের একটি রাস্তার সংস্কার হয়েছে। যদিও বাস্তবে ওই রাস্তায় নামমাত্র মোরাম দিয়ে দায়সারা ভাবে কাজ করা হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের রাস্তাটি সংস্কার কাজের আগে যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থাতেই পড়ে থাকায় জেলাশাসকের কাছে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। একই সঙ্গে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, জবড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কুলগোড়া গ্রামে গত অগস্ট মাসে দু’দফায় দাসপাড়ার রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করে পঞ্চায়েত। স্থানীয় বাসিন্দা মনোজকুমার মাহাতো বলেন, “দাসপাড়ার ওই রাস্তা চলতি বর্ষায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে গিয়েছিল। তার আগে ওই রাস্তায় কিছু মোরাম পড়েছিল। আমরা পঞ্চায়েতের কাছে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানাতে গিয়ে জানতে পারি, রাস্তার কাজ নাকি হয়ে গিয়েছে! এমনকী, রাস্তা সংস্কারের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ ছিল, তা-ও খরচ হয়ে গিয়েছে।” |
গ্রামবাসী শান্তিরাম কুম্ভকারের ক্ষোভ, “রাস্তার অবস্থা এতটাই বেহাল হয়ে গিয়েছিল যে আমরা নিজেরাই ছাই দিয়ে রাস্তার কিছু গর্ত বুজিয়েছি। কেন না আমাদেরই তো প্রতিদিন যাতায়াত করতে হবে।” আর এক বাসিন্দা উত্তম গোপেরও দাবি, ওই রাস্তায় ইদানীং মোরাম পড়তে দেখা যায়নি।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বাস্তবে রাস্তা সংস্কারের কাজ না হলেও জবড়রা গ্রাম পঞ্চায়েত ওই কাজের জন্য রীতিমতো শ্রমিকদের নামের তালিকা তৈরি করেছিল এবং তালিকায় থাকা শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া হয়েছে বলেও দেখিয়েছিল। ওই তালিকায় নাম থাকা সন্তোষ মাহাতো, নিরঞ্জন মাহাতোদের অবশ্য দাবি, “আমরা এতশো দিনের প্রকল্পে কাজ করেছি ঠিকই। তবে, ওই রাস্তায় কাজ করিনি।” শ্রমিকদের মজুরি প্রাপ্তির তালিকার প্রতিলিপিও জেলাশাসকের কাছে পাঠানো অভিযোগপত্রের সঙ্গে দিয়েছেন বাসিন্দারা। ওই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত জব-সুপারভাইজার হারাধন মাহাতো বলেন, “যে সময় কাজ হয়েছিল, তখন তুমুল বৃষ্টি পড়ছিল। তাই গোটা রাস্তায় মোরাম দেওয়া যায়নি। তবে, দাসপাড়ার ওই রাস্তাটির লাগোয়া আরও একটি রাস্তার একই সময়ে সংস্কার চলছিল। মোরাম সেই রাস্তায় পড়ে থাকতে পারে।” হুড়ার বিডিও সুব্রত পালিত বলেন, “এই মর্মে অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ তদন্ত করে দেখার জন্য পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে।” |