বন্ধ সেতুর নির্মাণকাজ, আশ্বাসই সার প্রশাসনের
পাঁচ বছরের বেশি কেটে গিয়েছে। এখনও রায়দিঘির পূর্ব জটা গ্রাম ও কুলতলির ঢাকিবাজার লাগোয়া মণি নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে ২০০৮ সালে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। তার প্রায় তিন বছর পরে, ২০১২ সালে কাজের সরঞ্জাম নিয়ে পাততাড়ি গুটিয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা। তারপরে প্রায় দেড় বছর কাজই বন্ধ পড়ে রয়েছে। সেতুর ভবিষ্যত্‌ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির জন্য চিহ্নিত জমিও এখনই দিতে চাইছেন না সংশ্লিষ্ট বাসিন্দারা। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা সেতুটি তৈরির জন্য সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরার কাছে বারবার আবেদন করলেও তিনি আশ্বাসবাক্য ছাড়া কিছুই শোনাতে পারেননি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে গ্রামবাসীদের সাক্ষর সংবলিত একটি আবেদনপত্রও মন্ত্রীর কাছে দিয়েছেন তাঁরা। মন্ত্রীর বক্তব্য, “সেতুর কাজ শুরু করার জন্য ২ ডিসেম্বর আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”
মণি নদীর উপরে অসমাপ্ত সেতু।—নিজস্ব চিত্র।
মণি নদীর উপর ১২৫ মিটার দীর্ঘ এই সেতুটি তৈরি হলে কুলতলি ও রায়দিঘি বাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হবে। বিশেষ করে কুলতলির বাসিন্দারা এই সেতু পেরিয়ে রায়দিঘি থেকে ডায়মন্ড হারবার, মথুরাপুর স্টেশন হয়ে ট্রেনে সহজেই কলকাতায় পৌঁছতে পারবেন। তাতে যেমন পরিবহণ খরচ কমবে, তেমনই সময়েরও সাশ্রয় হবে। এ ছাড়াও সেতুর মাধ্যমে রায়দিঘি বাজার ও সেখানকার হাসপাতাল, কলেজেও যাতায়াত করতে পারবেন তাঁরা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলে ২০০৮ সালে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। ১২ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়। কাজের দায়িত্ব নেয় একটি ঠিকাদার সংস্থা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রথম থেকেই কাজ চলছিল শ্লথ গতিতে। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে এলাকার পরিদর্শনে যান তত্‌কালীন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল। দ্রুত কাজ হবে বলে বাসিন্দাদের আশ্বাসও দেন তিনি। ঠিকাদার সংস্থাকেও সেই মতো নির্দেশ দেন। কিন্তু তার ছ’মাসের মধ্যেই ঠিকাদার সংস্থা কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় সেতু নির্মাণের কাজ। ২০০৮ সালে নির্মাণ কাজ যখন শুরু হয়েছিল, তখন কাজের সুবিধার জন্য সংস্থা শালকাঠ দিয়ে নদীর উপর অস্থায়ী একটি সাঁকো বানিয়েছিল। কিন্তু বেতন না পাওয়ায় সেতু দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংস্থার শ্রমিকেরা সেই সেতুও খুলে নিয়ে গিয়েছেন বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
ঠিকাদার সংস্থাটি অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। তবে সংস্থার একটি সূত্রের খবর, কয়েক লক্ষ টাকা বকেয়া থাকাতেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এ নিয়ে মন্টুরামবাবু বলেন, “বাম আমলে কাজ শুরু হয়। সেই সময়ে কিছু আর্থিক দুর্নীতি হলেও হতে পারে।” স্থানীয় পূর্ব জটা গ্রামের বাসিন্দা উদয় মণ্ডল বলেন, “মন্ত্রী কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও তা হয়নি।” সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির জন্যও এখনই জমি দিতে চাইছেন না চাষিরা। ওই রাস্তা তৈরির জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর নদীর দু’পাড়েই ২ একর ২৬ শতক জমি চিহ্নিত করেছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, ২৭ নভেম্বর, মঙ্গলবার দফতরের আধিকারিকেরা চাষিদের জমির জন্য চেক দিতে গেলে কোনও চাষিই চেক নেননি। তাঁদের যুক্তি, সেতু নির্মাণের কাজই বন্ধ পড়ে রয়েছে। সেটা শুরু না করে অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য জমি অধিগ্রহণ করার মানে কী? এ ছাড়াও বিঘা প্রতি ৬৬ হাজার টাকার যে দাম সরকার দিচ্ছে, তা যথেষ্ট নয় বলেই দাবি তাঁদের। উদয়বাবু বলেন, “অ্যাপ্রোচ রোডের জমির জন্য চাষিদের রাজি করিয়েও কোনও কাজে লাগল না।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.