সীমান্ত শহর বনগাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই ঢিলেঢালা। খুন, ডাকাতি, খুনের চেষ্টা, বোমাবাজি, গুলি চালনা, ছিনতাই, কেপমারির ঘটনা এখানে নতুন কিছু নয়। পথে বেরিয়েও মাঝেমধ্যেই নিরাপত্তার অভাবে ভোগেন বাসিন্দারা। শহরের বাইরে থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা নিত্য দিনের ঘটনা। স্বাভাবিক ভাবেই শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ-অসন্তোষ দীর্ঘদিনের।
শহরের নাগরিকদের সেই দীর্ঘদিনের ক্ষোভেরই প্রশমন করতে এবার উদ্যোগ নিল বনগাঁ পুরসভা। সাংসদ গোবিন্দ্র চন্দ্র নস্করের সাংসদ তহবিলের প্রায় ১৬ লক্ষ টাকায় শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বসানো হল সাতটি অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা। |
রবিবার স্থানীয় খেলাঘর ময়দানে একটি অনুষ্ঠানে ওই সিসি ক্যামেরার উদ্বোধন করেন জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিত্ দাস, পুরসভার চেয়ারম্যান জ্যোত্স্না আঢ্য, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রহিমা মণ্ডল প্রমুখ। জোত্স্নাদেবী বলেন, “বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ প্রথম এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন। তিনিই পুরসভাকে প্রথম প্রস্তাব দেন। ক্যামেরাগুলির দায়িত্ব এখন থেকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হল। এগুলি বনগাঁ থানা থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।” বনগাঁ শহরের ক্ষেত্রে এরকম উদ্যোগ প্রথম বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার ভাস্করবাবুও। |
|
|
শুরু ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান। |
চিকিত্সার জন্য ‘স্বাস্থ্যদীপ’। |
|
সিটিটিভির পাশাপাশি এ দিনই বনগাঁ পুরসভার ‘স্বাস্থ্যদীপের’ উদ্বোধন করেন বনগাঁর সাংসদ গোবিন্দ নস্কর। ছিলেন বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ, ইন্ডিয়ান রেড ক্রস সোসাইটির বনগাঁ শাখার সম্পাদক শঙ্কর আঢ্য প্রমুখ। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, সংসদ ও পুরসভার যৌথ আর্থিক সাহায্যে পুরসভায় স্বাস্থ্যদীপ তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা। এখানে থাকছে রক্তের নানা পরীক্ষা, ইসিজি, আলট্রাসোনোগ্রাফি, ডিজিট্যাল এক্স রে করার সুযোগ। থাকবেন প্রসূতি, শিশু, শল্য ও মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকেরা। সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে বনগাঁ পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এই নতুন হাসপাতাল ‘স্বাস্থ্যদীপ’। শঙ্করবাবু বলেন, “ন্যূনতম খরচে রোগীরা এখানে চিকিত্সার ও পরীক্ষার সুযোগ পাবেন। দুঃস্থদের জন্য থাকবে ছাড়।” বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল ছাড়াও একটি নতুন বিকল্প পেয়ে খুশি সাধারণ মানুষও। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালেও এ দিন চালু হল নায্যমূল্যের ওষুধের দোকান। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি নির্মল মাজি, স্থানীয় বিধায়ক বিশ্বজিত্ দাস এবং হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর। বিশ্বজিত্বাবু বলেন, “মহকুমা হাসপাতালে কোনও বার্ন ওয়ার্ড নেই। শীঘ্রই তা তৈরি হতে চলেছে। এর জন্য বিধায়ক তহবিল থেকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।” হাসপাতালের যাবতীয় পরিকাঠামো উন্নয়নে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান নির্মল মাজি। হাসপাতাল সুপার গয়ারামবাবু বলেন, “নায্যমূল্যের ওষুধের দোকান থেকে রোগীর আত্মীয়া বা রোগীরা ৬৬.৫ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ কিনতে পারবেন। দোকানটি রাতদিন খোলা থাকবে।” হাসপাতালে চিকিত্সা করাতে আসা মানুষজনের ওষুধের সমস্যা অনেকাংশেই মিটবে বলে আশা প্রকাশ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। |
ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক। |