পুরসভা নিয়ে বৈঠকে গেলেন না ৮ কাউন্সিলর
মুর্শিদাবাদ পুরসভায় যাঁরা অনাস্থা এনেছেন, তাঁদের সঙ্গে জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বৈঠক ভেস্তে গেল। কেননা, ওই সভায় উপস্থিতই হলেন না অনাস্থা এনেছেন এমন আট কাউন্সিলর।
এদিন অধীরবাবুর উপস্থিতিতে মুর্শিদাবাদ পুরসভার অচলাবস্থা কাটাতে বহরমপুরে ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ‘কংগ্রেসের’ ১৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে এদিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন পুরপ্রধান শম্ভুনাথ ঘোষ-সহ কংগ্রেসের ছ’জন কাউন্সিলর। অসুস্থতার জন্য কংগ্রেসের বিপ্লব চক্রবর্তী আসতে পারেনি। অধীরবাবু বলেন, “পুরপ্রধান হিসেবে শম্ভুনাথবাবুই কাজ করবেন। কেউ যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে পুরপ্রধানকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চান, তাহলে কারও কিছু বলার নেই। তবে আমার পরামর্শ হচ্ছে, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র বের করা উচিত।” সেই সঙ্গে ‘দলবিরোধী কাজ কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না’ বলেও অধীরবাবু সাফ জানিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের পুরভোটে ১৬ আসনের মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১০টি আসনে জয়ী হয়ে কংগ্রেস একক ভাবে পুরবোর্ড দখল করে। বাকি ছয় জনের মধ্যে চার জন ‘নির্দল’ এবং তৃণমূলের ও জনবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের এক জন করে প্রার্থী জয়ী হন। তার মধ্যে নির্দলের চার জন এবং তৃণমূলের এক জন মিলে মোট পাঁচ জনই ভোটে জেতার পরেই কংগ্রেস দলের সঙ্গে মিশে যান। তখন পুরপ্রধান হন কংগ্রেসের সৌমেন দাস। দু’বছরের মধ্যে ওই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে আট জন কাউন্সিলর স্বাক্ষর করেন। সেই সময় অনাস্থা এড়াতে সৌমেন দাসকে সরিয়ে কংগ্রেসের শম্ভুনাথ ঘোষকে পুরপ্রধান করা হয়। কিন্তু সৌমেনবাবুর সময়ে যে আট জন কাউন্সিলর অনাস্থা জানিয়েছিলেন, এ বারও সেই আট জনই অনাস্থা জানিয়ে গত ২২ অক্টোবর পুরসভায় চিঠি জমা দেন। ওই আট জনের মধ্যে কংগ্রেসের প্রতীকে জয়ী ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তথা কাউন্সিলর মেহেদি আলম মির্জা-সহ তিন জন দলীয় কাউন্সিলর রয়েছেন।
সেই মতো পুরপ্রধান গত ৫ ডিসেম্বর অনাস্থার সভা ডাকেন। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও জরুরি সভা ডাকা যাবে না বলে নির্বাচন কমিশন লিখিত ভাবে জানিয়ে দেয়। ফলে ওই সভা বাতিল ঘোষণা করা হয়। পরে সভা বাতিলের বৈধতার প্রশ্ন তুলে অনাস্থাকারীরা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। ওই মামলা এখন বিচারাধীন রয়েছে। এই অবস্থায় মুর্শিদাবাদ পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে জয়ী হন ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী গার্গী দাস।
অধীরবাবু অবশ্য বলেন, “বৈঠকে বসার জন্য কোনও পক্ষকে আমি ডাকিনি। সেখানে আমার উপস্থিতিতে কাউন্সিলরদের নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধানসূত্র বের করার কথা বলে লালবাগের স্থানীয় নেতৃত্ব। কিন্তু কোনও এক পক্ষ যদি না আসে আমার কী বলার আছে। আমি অন্তত কাউকে বলিনি আসার জন্য।”
লালবাগের কংগ্রেস নেতা তথা জেলা কংগ্রেসের তফশিলি জাতি সেলের চেয়ারম্যান প্রবাল সরকার বলেন, “জেলা কংগ্রেসের নির্দেশে সমাধান সূত্র বের করতে দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করি। দু’পক্ষই জেলা কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতিতে আলোচনায় সম্মত হয়। বিষয়টি জেলা কংগ্রেস সভাপতিকে জানালে তিনিও বৈঠক করতে রাজি হন। সেই মতো এদিন বৈঠকের কথা ১৫ জন কাউন্সিলরকে জানানো হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল অনাস্থা এনেছেন এমন এক জনও বৈঠকে আসেননি।” প্রবালবাবু বলেন, “এতে মানুষের কাছে কিন্তু ভুল বার্তা যাচ্ছে।”
মুর্শিদাবাদের কংগ্রেসের বিধায়ক শাওনী সিংহ রায় বলেন, “এক পক্ষ হাজির থাকলেও অন্য পক্ষ এদিন হাজির হননি। কিন্তু দু’পক্ষের কথা শোনার পরেই তো মীমাংসা সূত্র বের হবে। ফলে এদিন কোনও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়নি।”
অনাস্থা এনেছেন এমন কাউন্সিলরদের অন্যতম মেহেদি আলম মির্জা বলেন, “আমি ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এদিন জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয়ে সকাল থেকে ব্যস্ততা থাকায় আমি ওই বৈঠকে হাজির হতে পারিনি। তবে অন্য কাউন্সিলরদের সঙ্গে আমার কোনও কথা হয়নি। তাঁরা কেন অনুপস্থিত ছিলেন আমার জানা নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.