ওয়ান ডে-তে রান না পেলেও টেস্টে ছন্দে ফিরবেন বিরাট কোহলি এমন মনে করেন না রে জেনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন কোচ, যিনি আবার পাঁচ বছর ধরে আইপিএলে কোহলির কোচও, সেই জেনিংসই ভারতীয় দলের সহ অধিনায়ককে নিয়ে আশাবাদী হতে পারছেন না।
বিরাট কোহলিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে পরিণত করে তুলতে জেনিংসের অবদান অস্বীকার করে না ভারতীয় ক্রিকেট মহল। সেই জেনিংসই এখন বলছেন, ওয়ান্ডারার্স ও কিংসমিডে স্টেইন, মর্কেলদের বিরুদ্ধে হিমশিম খেতে পারেন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ‘অ্যাঙ্গরি ইয়ং ম্যান’।
কেন এই ধারণা জেনিংসের? একটি ওয়েবসাইটকে সাক্ষাৎকারে জেনিংস বলেছেন, “বিরাট স্পিনের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত। কিন্তু ওর যদি কোনও দুর্বলতা থেকে থাকে, তা হলে তা ফাস্ট বোলারদের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলাররা ওর এই দূর্বলতাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেই। যেমন করেছিল ওয়ান ডে-তে।” সিরিজটা দুই টেস্টের হওয়াতে কোহলির চ্যালেঞ্জটা আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন জেনিংস। এই ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, “মাত্র দুটো টেস্ট বলেই কোহলির পরীক্ষাটা আরও কঠিন। যদি ও ভাল করে, তা হলে লোকে বলবে, ও তো মাত্র দুটো টেস্টে ভাল খেলল। আর যদি খারাপ পারফরম্যান্স করে, তা হলেও প্রশ্ন উঠবে, দুটো টেস্টেও ভাল খেলতে পারল না! খুব দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার এটা।” |
গুরু-শিষ্য
আইপিএলে বেঙ্গালুরুর কোচ থাকার সময় কোহলির সঙ্গে রে জেনিংস। |
তা সত্ত্বেও জেনিংস মনে করেন টেস্ট সিরিজে বাড়তি দায়িত্ব নিতে পারেন সেই কোহলি ও চেতেশ্বর পূজারা। তাঁর ধারণা, “ভারতের আসলে চার-পাঁচজন ভাল ব্যাটসম্যান আছে। কোহলি ছাড়াও পূজারা যেমন বেশ ভাল ব্যাটসম্যান। ধোনি তো আছেই। এদেরই বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, ওদের যতজন ভাল ব্যাটসম্যান আছে, তত ভাল বোলার নেই। ভারতীয় বোলিংকে আর একটু উঁচু জায়গায় নিজেদের নিয়ে যেতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা যদি সবুজ উইকেট তৈরি করে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের দূর্বলতাকে কাজে লাগাতে পারে, ভারতীয় বোলাররা কিন্তু তা করতে পারবে না।”
সচিন তেন্ডুলকর না থাকায় চার নম্বরে ব্যাট করতে নামতে পারেন কোহলি। তাতে কোহলির তেমন কোনও সমস্যা হবে বলে মনে করেন না জেনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন কোচ বলেন, “তিন নম্বরে না ওঠা পর্যন্ত ওর তেমন কোনও অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না। তবে আমি যদি কোচ হতাম, তা হলে বিরাটের আত্মবিশ্বাস বজায় রাখার চেষ্টা অবশ্যই করতাম। ওর মুড ঠিক থাকলে ও ভাল ব্যাট করবেই। এমনই ছেলে বিরাট। ওর আত্মবিশ্বাসের জায়গাটা ঠিক রাখতে হবে বা ওর মন ভাল রাখতে হবে। এখন কোচের কাজ এটাই।” শর্ট বলে কোহলির সমস্যা আছে কি না, এর উত্তরে জেনিংস বলেন, “ভারতে শর্ট বল ও দক্ষিণ আফ্রিকার শর্ট বলের মধ্যে তফাত আছে। কারণ, ভারতের উইকেট সবচেয়ে ধীর গতির, দক্ষিণ আফ্রিকায় সবচেয়ে দ্রুতগতির উইকেট। এখানে শর্ট বল খেলার অভ্যাস করতে হবে ভারতীয়দের। সেটা উইকেটে টিকে থেকে করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। আসলে ভারতীয়দের আরও আগে এখানে আসা উচিত ছিল। সেটা না হওয়াতেই সমস্যা হচ্ছে ওদের।” |
তিনি এখনও দায়িত্বে থাকলে জো’বার্গে প্রথম টেস্টে ধোনির সম্ভাব্য বোলিং লাইন আপকে কী পরামর্শ দিতেন? জানাচ্ছেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন বোলিং কোচ এরিক সিমন্স... |
|
জাহির খান: ব্যাটিং এবং ব্যাটসম্যানদের বোঝে। পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা অসাধারণ। দক্ষিণ আফ্রিকার পিচে লেংথটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ফুল লেংথ বেশি দরকার। তাতে বারকয়েক কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হবে। তবে উইকেটের পিছনে খোঁচা ওঠার সুযোগও যথেষ্ট। এটাই জাক হয়তো পরামর্শ দেবে ওর জুনিয়র সতীর্থ পেস বোলারদের। |
ইশান্ত শর্মা: ওর পরিংসংখ্যানের চেয়ে ভাল বোলিং করার ক্ষমতা আছে। ক্রিকেটার হিসাবে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার ফলে এখন ও নিশ্চয়ই অনেক শক্তিশালী বোলার হয়ে উঠেছে। সাহস নিয়ে নিজের বোলিংটাই করুক আমাদের দেশে। |
মহম্মদ শামি: একমাত্র বোলার যার সঙ্গে ভারতীয় দলে আমি কাজ করিনি। তবে ওর নিখুঁত লেংথ আর ডেলিভারির সময় যতটা দেখায় তার চেয়ে অনেক বেশি গতি আমাকে মুগ্ধ করেছে। এই দুটো অস্ত্রেই শামি যেন এখানে উইকেট নেওয়া আর বিপক্ষের রানরেট আটকে রাখার কাজ করে। |
রবিচন্দ্রন অশ্বিন: চতুর স্পিনার। তবু বলব, টেস্টের প্রথম দেড় দিন বৈচিত্র জলাঞ্জলি দিয়ে শুধু সঠিক লেংথটা রেখো। তাতে ২০ ওভারে ৪০-০ বোলিং হিসেব থাকলেও ঠিক আছে। শেষ তিন দিন উইকেটের খোঁজে নিজের স্পিন বৈচিত্র ব্যবহার করতে পারো। |
|