|
|
|
|
ইউনেস্কো তালিকায় মণিপুরি সংকীর্তন
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
ইউনেস্কোর ‘প্রচলিত সাংস্কৃতিক ধারা ও বহমান মানব ঐতিহ্যের তালিকা’-য় শেষ অবধি ঠাঁই করে নিল মণিপুরের ‘নাট-সংকীর্তন’।
ইউনেস্কোর এই বিশ্বজোড়া ‘তালিকা’ বাছাই পর্বে ভারতের একমাত্র প্রতিনিধি হিসাবে মণিপুরের নাট সংকীর্তনের নামই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোট ৩১টি এমন সাংস্কৃতিক ধারার নাম বাছাই তালিকায় ঠাঁই পায়। ২ থেকে ৭ ডিসেম্বর, আজেরবাইজানের বাকুতে ইউনেস্কোর অধিবেশন চলছে। চূড়ান্ত নাম বাছাই পর্বে ১৪টি এমন সাংস্কৃতিক ধারার নাম তালিকাভুক্ত হয়, যার মধ্যে ‘নাট-সংকীর্তন’ও রয়েছে।
মানব সংস্কৃতির এই প্রবহমান ধারার তালিকায় অন্তর্ভূক্তির শর্ত ছিল, বংশানুক্রমে নিয়মমাফিক ও প্রথাগত শিক্ষার মাধ্যমে শিল্পধারার প্রবাহমানতা থাকতে হবে। মণিপুরের বৈষ্ণবরা, শ্রীকৃষ্ণের নাম সর্ংকীতনের ধারা সুপ্রাচীনকাল থেকে সুশৃঙ্খল ভাবে বজায় রেখে এসেছেন। রাজা ভাগ্যচন্দ্রের হাত ধরে উদ্ভুত নাট-সংকীর্তনের ধারা বর্তমানে মণিপুর, অসম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গে থাকা বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিরা বংশানুক্রমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ভাগ্যচন্দ্র নিজেও সংকীর্তন নৃত্য-গীত-বাদ্যে পারদর্শী ছিলেন। রাজ্যের মানুষকে ভ্রাতৃত্ববোধে বাঁধতে ও শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সংকীর্তনকে হাতিয়ার করেছিলেন তিনি।
পাশাপাশি, সংকীর্তনের গানের ভাষা এবং পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেওয়া, গবেষণা, সচেতনতা প্রসারের মতো শর্তও পূরণ করেছে মণিপুরি সংকীর্তন। সংগীত-নাটক অ্যাকাডেমির তরফেও সংকীর্তনের বিভিন্ন দিক সংরক্ষণ করা হয়। সংকীর্তন পণ্ডিত ওয়ারেপ্পা নব জানান, এর মূল দর্শন হল—সব মানুষই সমান ও এক। মণিপুরের মন্দিরগুলির পাশাপাশি বিয়েতেও নাট-সংকীর্তন হয়। সাধারণত, দু’জন খোল বাদক, ১০ জন গায়ক ও নর্তক সংকীর্তনের উপস্থাপনা করেন। নব’র কথায়, “ইউনেস্কো আমাদের এই ঐতিহ্যকে সম্মান দেওয়ায় বিশ্বের দরবারে সংকীর্তনের নাম পৌঁছল। এতে বাইরের দুনিয়ের মানুষও মণিপুরের সংস্কৃতির কথা জানতে পারবেন। সংকীর্তনের সংরক্ষণও আরও গুরুত্ব পাবে।” এর আগে, ইউনেস্কোর মৌখিক ও বহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছিল ভারতের সংস্কৃত নাট্যধারা ‘কুটিয়াট্টম’ ও ‘রামলীলা’। |
|
|
|
|
|