আধিকারিকের পদ শূন্য দেড় বছর, শংসাপত্র মিলছে না সালানপুরে
স্টেলে কম খরচে থাকার সুবিধা মিলছে না শংসাপত্র না দেখাতে পারায়।
শংসাপত্র হাতে না থাকায় স্কুলে ভাতা পাচ্ছে না পড়ুয়ারা।
তফসিলি জাতি ও উপজাতি শংসাপত্র না মেলায় বছর দেড়েক ধরে এরকম নানা সমস্যায় ভুগছেন সালানপুর ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের মানুষজন। ব্লকে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক না থাকার ফলেই এমন বিপাক বলে জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে। তবে আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাসের আশ্বাস, শীঘ্র সমস্যা মিটে যাবে।
সালানপুরে তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত বাসিন্দার সংখ্যা বেশ কয়েক হাজার। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, আবেদন করা মাত্র তাঁদের জাতিগত শংসাপত্র, স্কুল পড়ুয়াদের ভাতা-সহ নানা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে সালানপুর ব্লকে এই দফতরের সংশ্লিষ্ট পদাধিকারি না থাকায় তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের সমস্যার কথা জানিয়ে ব্লক ও উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছে বহু আবেদন করলেও ফল হয়নি। সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জগদীশ মালাকার জানান, সমস্যাটি গত বোর্ডের আমল থেকেই চলছে। তিনি বলেন, “আমি সভাপতি হওয়ার পরে এ বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।”
এর ফলে যে মানুষজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, জানা গিয়েছে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে। কেব্লস কলোনি এলাকার বাসিন্দা অঞ্জন টুডু জানান, বেঙ্গালুরুতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছেন তিনি। তফসিলি জাতি ও উপজাতি শংসাপত্র দেখাতে পারলে তাঁর থাকা-খাওয়ার খরচ অর্ধেক হবে। কিন্তু তা না থাকায় সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আল্লাডির বাসিন্দা দেবাশিস পান জানান, ব্যক্তিগত কাজে জাতিগত শংসাপত্র নিতে গিয়েও আধিকারিক না থাকায় তা জোগাড় করতে পারেননি। উত্তররামপুর জিৎপুর এলাকার মনিরাম হাঁসদা বলেন, “একটি সরকারি কাজের জন্য জাতিগত শংসাপত্র আনতে গিয়ে পাইনি।”
ব্লকের নানা মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় বছর ধরে তফসিলি জাতি ও উপজাতির ছাত্রছাত্রীরা সরকারি ভাতা পাচ্ছে না। অথচ, সেই ভাতা বাবদ ব্লকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা জমা পড়েছে বলে প্রশাসনেরই একটি সূত্রে জানা যায়। তা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা যাচ্ছে না বলে জানান ব্লকের এক কর্তা। সম্প্রতি ব্লকের নানা সরকারি প্রকল্পের কাজ দেখতে এলাকায় আসেন মহকুমাশাসক অমিতাভবাবু। তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষজন তাঁদের এই সমস্যার কথা মহকুমাশাসককে জানান। মহকুমাশাসক বলেন, “এ বিষয়ে উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।”
সিপিএমের বারাবনি জোনাল সম্পাদক অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য তথা সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সহ-সভাপতি শ্যামল মজুমদারের দাবি, “আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীনও এই সমস্যা ভোগ করতে হয়েছে। বহু বার প্রশাসনকে বলা হলেও কেউ সে কথা কানে তোলেননি।” বারাবনির তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের দাবি, জেলা প্রশাসনের কাছে আধিকারিক চেয়ে তিনি তদ্বির করেছেন। আগামী ১৯ ডিসেম্বর ব্লকের নানা প্রকল্প সরেজমিনে দেখতে আসার কথা জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের। সে দিন এই সমস্যার কথা তাঁকে সরাসরি জানাবেন বলে জানিয়েছেন এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা। মহকুমাশাসক অমিতাভবাবু জানান, সালানপুর ব্লকে কিছু প্রশাসনিক সমস্যা থাকায় শুধু এই বিষয়টিই নয়, বহু উন্নয়নমূলক কাজ আটকে ছিল। জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে তা মিটতে শুরু করেছে। এই সমস্যারও দ্রুত সমাধান হবে বলে তাঁর আশ্বাস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.