খাঁচা থেকে মেয়েদের বের করতে পারে মেয়েরাই
জ ১৬ ডিসেম্বর। দক্ষিণ দিল্লিতে নির্ভয়া গণধর্ষণের ঠিক এক বছর পূর্ণ হল। মেয়েরা যতই শিক্ষিত হোন, সমাজের উঁচুতলায় থাকুন বা নিচুতলায়, তাঁদের নিরাপত্তা কতটা এই জ্বলন্ত প্রশ্নে সোচ্চার আদালত, বিদ্বজ্জন, প্রচার মাধ্যম।
ঘরে বাইরে এই আধুনিক সময়ে দাঁড়িয়েও মেয়েরা কেউ কেউ যে যার নিজস্ব খাঁচায় বন্দি। সেই খাঁচা থেকে কি আদৌ মুক্তি সম্ভব? প্রফুল্ল রায়ের অণু উপন্যাস ‘জীবন বড় বেগবান’ অবলম্বনে রাজা সেনের ছবি ‘খাঁচা’ উস্কে দেয় সেই জ্বলন্ত প্রশ্ন।
মেয়েদের এই দুঃসময়ে দাঁড়িয়ে রাজা যে এমন একটি বিষয় নিয়ে ছবি বানিয়েছেন, সেই জন্য তাঁকে সাবাশ। ছবির প্রথম দিকটা একটু ঢিলেঢালা মনে হলেও জমে ওঠে দ্বিতীয় পর্ব।
এ ছবির নায়িকা কর্পোরেট কর্মী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এই রকমই এক মেয়ে যাঁর ব্যক্তিগত, পেশাদার জীবন নানা ধরনের খাঁচায় বন্দি। অফিসে সিনিয়র সহকর্মীর কাছে চরম যৌন হেনস্থা এক দিকে, তো অন্য দিকে বিবাহবিচ্ছিন্ন স্বামীর লাঞ্ছনা, তার একক জীবনের প্রতি স্বামীর কুৎসিত ইঙ্গিত, মেয়ে ঝিলিককে কাছে না পাওয়া সব মিলিয়ে বিদীর্ণ এক নারীর লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে ওঠেন ঋতুপর্ণা।
একটি মেয়ের ধারাবাহিক সংগ্রাম, তার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব-যন্ত্রণা-ঋজুতা ঋতুপর্ণা বড় পরিণত ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অন্য দিকে মেয়ে পাচার চক্রের শিকার পার্নো মিত্র তাঁর শহুরে ছবির ইমেজ ছেড়ে ডুব দিয়েছেন নিম্নবিত্ত পরিবারের ঘরছাড়া মেয়ের ভূমিকায়। বিধ্বস্ত হতে হতে ছবির চরম নাটকীয় মোড়ে এসে দাঁড়ানো পার্নোর অভিনয় যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য। কিন্তু ছবিতে চিত্রগুণ বড় কম। চরিত্রগুলিকে ক্যামেরার সামনে এমন ভাবে দাঁড় করানো হয়েছে যে ব্যাকগ্রাউন্ডের পরিবেশ কোনও সিনেম্যাটিক মেজাজ তৈরি করতে পারেনি। লং-শটের ব্যবহার কম থাকায় কখনও কখনও মনে হয় যেন টিভির কোনও সিরিয়াল চলছে। নিউ এজ বাংলা ছবিতে গল্প যেমনই হোক তার বিষয় এবং আবেগকে তুলে ধরার যে স্লিক স্মার্টনেস, ঝকঝকে প্যাকেজিংয়ে দর্শক অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, ‘খাঁচা’য় সেই গুণটুকু থাকলে দর্শকের ভিড় বাড়ত।
‘শব্দ’র ঋত্বিক চক্রবর্তীর অভিনয় পরিপূর্ণতা পেয়েছে সাংবাদিকের চরিত্রে। মানসী সাহা, খেয়ালী দস্তিদার, পাপিয়া সেন, দোলন রায়দের সুঅভিনয় এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে ছবিকে।
তবে মেয়ে পাচারচক্রের যে গল্পটি পরিচালক বুনেছেন তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। দিনদুপুরে মহানগরের রাস্তার ধারে মেয়ে পাচারকারীরা থাকে না। তারা খুব চুপিসাড়ে কাজ করে। মেয়ে পাচারকারী তিনটে চরিত্রের বিন্যাস আরও ত্রাসের সঞ্চার করতে পারত। যাতে ছবিটা কিছুটা থ্রিলারের চেহারাও পেয়ে যেত। এই সম্ভাবনাগুলিকে চিত্রনাট্যে ঠিকঠাক বিন্যাস করা হয়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.